ব্যাংক না হলেও ব্যাংকের মতোই গ্রাহকের আমানত সংগ্রহ করে ঋণ বিতরণ করে; দেশে ব্যাংক বহির্ভূত এমন আর্থিক প্রতিষ্ঠান রয়েছে ৩৫টি। কিন্তু নানা অনিয়ম আর দুর্নীতিতে ডুবতে বসেছে বেশিরভাগই।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, এ খাতে মোট খেলাপি ঋণের পরিমাণ ২৭ হাজার ১৮৯ কোটি টাকা, যা গত তিন মাসে ২ হাজার ১০০ কোটি টাকা বেড়েছে। এর মধ্যে এফএএস, ফারইস্ট, বিআইএফসি, ইউনিয়ন ক্যাপিটাল ও ইন্টারন্যাশনাল লিজিংয়ের বিতরণ করা ঋণের ৯৫ শতাংশের বেশি খেলাপির খাতায় উঠেছে।
এর বাইরে আরও ১৩ প্রতিষ্ঠানের অবস্থা নাজুক; তাদের বিতরণকৃত ঋণের সাড়ে ৫২ থেকে ৮২ শতাংশের বেশি খেলাপি। অর্থনীতিতে শক্তিশালী ভূমিকা রাখতে ও ব্যাংকিং ব্যবস্থায় বৈচিত্র্য আনতে ব্যর্থ প্রতিষ্ঠানের লাগাম টানার পরামর্শ আর্থিক খাত বিশ্লেষকদের।
আরও পড়ুন: খেলাপি বাড়লেও সরকারি ব্যাংকে আস্থা, ৯ মাসে আমানত বেড়েছে ৩৪ হাজার কোটি
বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ব্যাংক ম্যানেজমেন্টের (বিআইবিএম) সাবেক মহাপরিচালক তৌফিক আহমেদ চৌধুরী বলেন, ব্যাংকিং মার্কেটে নতুন লাইসেন্স দেয়ার সুযোগ না থাকায় এসব প্রতিষ্ঠানকে নন-ব্যাংকিং আর্থিক প্রতিষ্ঠানের লাইসেন্স দেয়া হয়েছে। তবে কিছু দুর্নীতিবাজ এসব প্রতিষ্ঠান থেকেও অর্থ তছরুপ করেছে। মূলধন ও দায় সঠিক এমন কয়েকটি প্রতিষ্ঠান রেখে বাকিগুলোকে এক্সিট পলিসিতে ফেলা বা বন্ধ করা উচিত।
এমন পরিস্থিতিতে প্রতিষ্ঠানগুলো কেন বন্ধ বা মার্জ করা হবে না সেই ব্যাখ্যা চেয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের চিঠির জবাবও এসেছে। বর্তমানে তথ্য যাচাইয়ের কাজ চলছে, এরপর কেন্দ্রীয় ব্যাংক চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান বলেন, কোনো আবেগি কথায় কাজ হবে না। প্রতিষ্ঠানগুলোকে তথ্য-পরিসংখ্যান দিয়ে প্রমাণ করতে হবে, কেন প্রতিষ্ঠান চলমান থাকবে; কেন বন্ধ হওয়া উচিত নয়। বাংলাদেশ ব্যাংক এসব তথ্য-পরিসংখ্যান যাচাই করবে। এছাড়া যেসব আর্থিক নির্দেশকের অবনতি ঘটেছে, সেগুলো প্রতিষ্ঠানগুলো আগামী ৫ বছরের মধ্যে উত্তরণ করতে পারবে কি না, তাও যাচাই-বাছাই করা হবে।
এর আগে গত ডিসেম্বরে ৩৫ নন-ব্যাংকিং আর্থিক প্রতিষ্ঠানের খেলাপি ঋণ ছিল ২৫ হাজার ৮৯ কোটি টাকা। যা এ খাতের বিতরণ করা মোট ঋণের ৩৩.২৫ শতাংশ।
]]>