দেশের হাওড়-বাওড় কিংবা গ্রামীণ জনপদ সব জায়গাতেই হাঁস পালন গ্রামীণ অর্থনীতির এক গুরুত্বপূর্ণ খাত। অল্প খরচে বেশি লাভের আশায় দিন দিন বাড়ছে হাঁস খামারের সংখ্যা।
তবে প্রতিবছর ‘ডাক প্লেগ’ ভাইরাসে হাজার হাজার হাঁস মারা যাওয়ায় বড় ক্ষতির মুখে পড়েন প্রান্তিক খামারিরা। এ সংকট মোকাবিলায় এগিয়ে এসেছে ময়মনসিংহের বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেটেরিনারি অনুষদ। সেখানে একদল গবেষক উদ্ভাবন করেছেন হাঁসের প্লেগ প্রতিরোধে দুটি কার্যকর ভ্যাকসিন। একটি ইনঅ্যাক্টিভেটেড, অন্যটি লাইভ অ্যাটেনিউয়েটেড ভ্যাকসিন। পরীক্ষামূলক প্রয়োগে আশাব্যঞ্জক ফল মিলেছে বলে দাবি করেছেন প্রধান গবেষক ও ভেটেরিনারি অনুষদের ডিন অধ্যাপক ডা. মো. বাহানুর রহমানের।
তিনি জানান, ইনঅ্যাক্টিভেটেড ভ্যাকসিনটি স্বল্পমেয়াদে এবং লাইভ অ্যাটেনিউয়েটেড ভ্যাকসিনটি দীর্ঘ মেয়াদে হাঁস লালনপালনে সুরক্ষা দেবে খামারিদের। গবেষণায় জানা যায়, দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে প্রথমে মৃত হাঁস সংগ্রহ করেন গবেষকরা। নমুনা সংগ্রহের পর দেখা যায় সিংহভাগ হাঁসেরই মৃত্যু হয় ডাক প্লেগ রোগে।
আরও পড়ুন: হাওরে হাঁসের খামারে দিন বদলের স্বপ্ন কিশোরগঞ্জের খামারিদের
ড. বাহানুর জানান, এই প্যাথোজেনিক ডাক প্লেগ ভাইরাস হাঁসের ডিমের ভ্রূণে প্রবেশ করিয়ে বংশবৃদ্ধি করা হয়েছে এবং সেখান থেকে ইনঅ্যাক্টিভেটেড ভ্যাকসিন তৈরি করা হয়েছে। ভ্যাকসিনটি পরীক্ষামূলকভাবে কিছু হাঁসের ওপর প্রয়োগ করা হয়েছে। চ্যালেঞ্জ টেস্টে দেখা গেছে, এই ভ্যাকসিনটি ৮৮ ভাগ সুরক্ষা প্রদান করেছে। অন্যদিকে, যে হাঁসগুলোকে ভ্যাকসিন দেয়া হয়নি, সেখানে ৯৭ ভাগ হাঁস মারা গেছে। এই ইনঅ্যাক্টিভেটেড ভ্যাকসিন তৈরির কাজ এরইমধ্যে শেষ হয়েছে।
তিনি আরও জানান, ইনঅ্যাক্টিভেটেড ভ্যাকসিনের পাশাপাশি লাইভ অ্যাটেনিউয়েটেড ভ্যাকসিন তৈরির কাজও চূড়ান্ত পর্যায়ে। ইতোমধ্যে আমরা ভালো ফলাফলও পেয়েছি। আশা করা যাচ্ছে, বাংলাদেশ প্রাণিসম্পদ গবেষণা ইনস্টিটিউটের হাত ধরে খুব দ্রুতই দুটি ভ্যাকসিন খামারিদের কাছে পৌঁছবে।
লাইভ স্টক অ্যান্ড ডেইরি ডেভেলপমেন্ট প্রকল্পের অধীনে চলা এ গবেষণায় গবেষক দলে আরও ছিলেন পিএইচডি ফেলো ডা. লায়লা ইয়াসমিন। এছাড়া অধ্যাপক মো. ফেরদৌস উর রহমান খান এ প্রকল্পে কো-পিআই হিসেবে যুক্ত আছেন।

৩ সপ্তাহ আগে
৪







Bengali (BD) ·
English (US) ·