ভিডিও বার্তায় তিনি বলেন, এশিয়া প্যাসিফিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ১১তম সমাবর্তনে কিছু কথা বলার সুযোগ পেয়ে আমি সত্যিই সম্মানিত। আজকের দিনটি শুধু স্নাতকদের নয়, তাদের পরিবার ও শিক্ষকদের পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্যও গর্ব ও আনন্দের।
‘আমাদের মনে রাখতে হবে—এটি শেখার যাত্রার শেষ নয়, বরং নতুন দিগন্তের শুরু। এই ডিগ্রি শুধু সাফল্যের স্বীকৃতি নয়; এটি দায়িত্ব ও প্রত্যাশারও প্রতীক। এখন আপনাদের পরিবার, সমাজ এবং দেশের প্রতি জবাবদিহি করার সময়।’
শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ আজ নতুন সম্ভাবনার পথে হাঁটছে। কিন্তু এই স্বপ্ন তখনই পূর্ণ হবে, যদি আপনারা জ্ঞান, সততা ও প্রতিশ্রুতি দিয়ে এগিয়ে যান।’
‘আজকের বিশ্ব প্রযুক্তি ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তায় চালিত। কিন্তু প্রযুক্তি বিবেকহীন—সত্য, ন্যায়-অন্যায়ের পার্থক্য বোঝার কাজ মানুষকেই করতে হবে। তাই আপনাদের, নতুন প্রজন্মকে, বিবেকের কণ্ঠস্বর হতে হবে।’
আরও পড়ুন: মাহাথির মোহাম্মদের নাতির বাড়িতে ভয়াবহ ডাকাতি
‘ইতিহাস দেখায়, জ্ঞান কখনো মানবতার উন্নতির জন্য, কখনো ধ্বংসের জন্য ব্যবহৃত হয়েছে। আমাদের শপথ নিতে হবে—আমরা যেন জ্ঞানকে মানবতার কল্যাণে কাজে লাগাই।’
মাহাথির মোহাম্মদ আরও বলেন, ‘সার্টিফিকেট শুধু এক টুকরো কাগজ নয়, এটি তোমার প্রতিশ্রুতির দলিল। একটি শিক্ষিত, ন্যায়ভিত্তিক ও মানবিক সমাজ গঠনে তোমাদের ভূমিকা এখন শুরু হচ্ছে। পরিবার, সমাজ এবং দেশের কাছে তোমাদের দায়বদ্ধতা আজ আরও বেড়ে গেছে।’
সমাবর্তনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা প্রফেসর ড. বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার। তিনি সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন এবং রাষ্ট্রপতির (চ্যান্সেলর) পক্ষে গ্র্যাজুয়েটদের হাতে সনদপত্র তুলে দেন। মোট ১ হাজার ৯৭৫ জন গ্র্যাজুয়েটকে সনদ প্রদান করা হয়েছে।
সমাবর্তন বক্তা হিসেবে বক্তব্য দেন উল্কাসেমি প্রাইভেট লিমিটেডের প্রেসিডেন্ট ও সিইও প্রকৌশলী মোহাম্মদ এনায়েতুর রহমান। তিনি বলেন, আজকের বিশ্ব চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের যুগে প্রবেশ করেছে, যেখানে প্রযুক্তি, উদ্ভাবন ও নেতৃত্ব একইসঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ। এই বাস্তবতায় কেবল চাকরি নয়, নেতৃত্বের জন্য নিজেকে প্রস্তুত করতে হবে।
আরও পড়ুন: চিকিৎসা শেষে হাসপাতাল ছাড়লেন মাহাথির মোহাম্মদ
উদ্যোক্তা ও প্রযুক্তি নেতৃত্বের অভিজ্ঞতা ভাগাভাগি করে তিনি বলেন, ব্যর্থতা কখনও চূড়ান্ত নয়, সফলতাও নয় শেষ গন্তব্য। প্রতিনিয়ত শেখা, নিজেকে ছাড়িয়ে যাওয়া এবং সমাজে মূল্য সংযোজন করাই প্রকৃত সাফল্য।
তিনি শিক্ষাজীবনের অর্জনকে বাস্তব জীবনে কাজে লাগানোর ওপর গুরুত্বারোপ করে বলেন, আপনাদের মাঝে থেকেই তৈরি হবে আগামী দিনের প্রযুক্তিবিদ, নেতা ও সৃষ্টিশীল চিন্তকরা, যারা বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এস এম এ ফায়েজ, বোর্ড অব ট্রাস্টির চেয়ারপার্সন স্থপতি মাহবুবা হক, উপাচার্য অধ্যাপক ড. কামরুল আহসান এবং উপাচার্যের উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মহিউদ্দিন আহমেদ ভূঁইয়া।
আরও পড়ুন: শততম জন্মদিনে শুভেচ্ছায় ভাসছেন মাহাথির
]]>