জুলাই বিপ্লবের হটস্পট ছিল মোহাম্মদপুর-বছিলা

১ সপ্তাহে আগে
স্বৈরাচার শেখ হাসিনার পেটোয়া বাহিনী এবং পুলিশের দমন পীড়ন ও নির্যাতনের বিপরীতে বীরের মতো রাজপথ না ছাড়ার প্রত্যয় ছিল বিপ্লবীদের চোখেমুখে। জুলাই-আগস্ট গণ-অভ্যুত্থানে মোহাম্মদপুর-বছিলা এলাকায় শক্ত প্রতিরোধ গড়ে তোলেন ছাত্র-জনতা।

প্রায় ৬ মাস পেরিয়ে গেলেও ঘটনা এখনও টাটকা স্মৃতি হয়ে আছে শহীদ পরিবারগুলোতে। রাকিব হাসান, ফারহান ফাইয়াজ, অর্ণব, আবু সায়েত ও মাহমুদুর রহমান সৈকতের মতো অন্তত ১৪ শহীদের রক্তে রঞ্জিত এই এলাকা। সেই তাণ্ডব আর নির্মমতার কথা মনে হলে আঁতকে ওঠেন অনেকে।

 

ছেলে মিরাজুল ইসলাম অর্ণবের কথা বলতে গিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন মা। শাহিদা বেগম-আবু তালেব দম্পতির একমাত্র ছেলে অর্ণব, মোহাম্মদপুর প্রতিরোধের অন্যতম শহীদ।

 

 

শান্ত স্বভাবের অর্ণব উচ্চমাধ্যমিক শেষ করে পরিবারের হাল ধরেছিলেন। ১৯ জুলাই দুপুরের পর মোহাম্মদপুরের মেট্রো হাউজিং থেকে বেরিয়ে মূল রাস্তায় যান, র‌্যাবের টার্গেট ফায়ারে অকালে প্রাণ হারান অর্ণব।

 

তার মা শাহিদা বেগম বলেন,

ঘটনার দিন সোয়া ২টা কি আড়াইটার দিকে আমার ছেলে বাসা থেকে বের হয়। জোহরের নামাজের পর তার চেহারা আর আমি দেখি নাই। সন্ধ্যায় শুনি তার মৃত্যুর খবর। পায়ের একপাশ দিকে গুলি ঢুকে আরেকপাশ দিয়ে বের হয়ে যায়। বুকেও একটা গুলি লাগে তার। একটা মাত্র ছেলে আমি হারায় ফেলছি।

 

আরও পড়ুন: জুলাই অভ্যুত্থানে যেসব কৌশল নিয়েছিলেন মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা

 

তিনি আরও বলেন, ‘রক্তের বিনিময়ে যদি দেশটা শান্তি হয়। আমরা শান্তি চাই।’  

 

শুধু অর্ণবই না, ঘাতকের বুলেট সেদিন কেড়ে নিয়েছিল বছিলা এলাকার পান দোকানি আবু ছায়েদের প্রাণ। দেশ বাঁচানোর তাগিদে আন্দোলনে যোগ দিয়েছিলেন পঞ্চগড়ের আবু ছায়েদ। বছিলার লাউতলা এলাকায় লুকিয়ে থাকা র‌্যাবের গুলিতে লুটিয়ে পড়ে তার নিথর দেহ।

 

শহীদ আবু ছায়েদের শ্যালক মো. দেলোয়ার হোসেন বলেন, ‘দুলাভাইয়ের মৃত্যুর খবর শুনে আমার বিশ্বাস হইতাছিল না। আমি ভাবছি হয়তো আহত হইছে। রাস্তায় গিয়ে শুনি গুলি খায়া পান দোকানদার মারা গেছে। মাথায় গুলি ঢুকে খুলি বাইর হইয়া গেছে।’

 

পরিবারের সদস্য হারানোর আক্ষেপ থাকলেও দেশ ভালো থাকার প্রত্যাশা শহীদ পরিবারের সদস্যদের। পাশাপাশি ন্যায় বিচারের আশা করছেন তারা।

 

জুলাই বিপ্লবের স্মৃতিধারণ করে এগিয়ে যাওয়ার প্রত্যয় মোহাম্মদপুরের বাসিন্দাদের। ভাতৃত্ববোধ বজায় রেখে বৈষম্য-দুর্নীতিমুক্ত, শান্ত ও কিশোর গ্যাংমুক্ত মোহাম্মদপুরের প্রত্যাশা তাদের।

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন