হামজার দল শেফিল্ড ইউনাইটেডের মতোই ইংলিশ ফুটবলের দ্বিতীয় স্তর চ্যাম্পিয়নশিপে খেলে সান্ডারল্যান্ড। এক সময়ে প্রিমিয়ার লিগের সমীহ জাগানো এই ক্লাবের অনূর্ধ্ব ২১ দলের হয়ে প্রিমিয়ার লিগ-টুয়ে খেলেন কিউবা রাউল মিচেল। ১৯ বছর বয়সী এই সেন্ট্রাল মিডফিল্ডারের সঙ্গে বাংলাদেশের বিশেষ সম্পর্ক আছে।
বাবার দিক দিয়ে জ্যামেইকান হলেও কিউবার মা একজন ব্রিটিশ বাংলাদেশি। তার নানী ছিলেন বাংলাদেশের নাগরিক। সেই সূত্রে এই সেন্ট্রাল মিডফিল্ডারের সামনে জাতীয় দল হিসেবে জ্যামেইকা, ইংল্যান্ড ও বাংলাদেশকে বেছে নেয়ার সুযোগ ছিল। তবে ইংল্যান্ড ও জ্যামেইকার জার্সি নয়, কিউবা বাংলাদেশের লাল-সবুজ জার্সি গায়ে চাপাতে আগ্রহ প্রকাশ করেছিলেন।
আরও পড়ুন: আনচেলত্তি ব্রাজিলে এলে আমরা স্বাগত জানাব: কাফু
হামজা তো এরই মধ্যে জাতীয় দলের হয়ে খেলেছেন। সামিত সোমকেও জুনে সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে খেলানোর লক্ষ্য নিয়ে এগুচ্ছে বাফুফে। এই দুই মিডফিল্ডারের পর বাফুফে এখন কিউবাকেও দলে পেতে চায়। সেই লক্ষ্যে দেশের ফুটবলের অভিভাবক সংস্থা কাজ শুরু করেছে বলে দেশের একটি জাতীয় গণমাধ্যমে জানিয়েছেন বাফুফের সিনিয়র ভাইস-প্রেসিডেন্ট ইমরুল হাসান।
তিনি জানান, গত শনিবার (১৯ এপ্রিল) কিউবার সঙ্গে বাফুফের কথা হয়েছে এবং সান্ডারল্যান্ডের অনূর্ধ্ব ২১ দলের এই মিডফিল্ডার তাদের পদক্ষেপে ইতিবাচক মনোভাব দেখিয়েছেন। দুয়েকদিনের মধ্যেই তার চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের কথা জানা যাবে বলেও ইমরুল জানান। সে ক্ষেত্রে জুনে সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে হামজা ও সামিতের সঙ্গে একই ম্যাচে খেলতে দেখা যেতে পারে এই ২১ বছর বয়সীকেও।
ইমরুল জানিয়েছেন, কিউবা যদি বাংলাদেশের হয়ে খেলার সিদ্ধান্ত নেন, তাহলে তাকে খেলাতে খুব একটা বেগ পেতে হবে না, কারণ তিনি অন্য কোনো জাতীয় দলের হয়ে কোনো ম্যাচই খেলেননি।
এদিকে দেশের ক্রীড়া টেলিভিশন চ্যানেল টি স্পোর্টস আজ জানিয়েছে, বাফুফের চিঠির পর বাংলাদেশের হয়ে খেলতে রাজি হয়েছে কিউবা। ইংল্যান্ডের ফুটবল ফেডারেশনের ছাড়পত্র ও পাসপোর্ট পেলেই জুনে সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে খেলতে তার আর কোনো বাধা থাকবে না। বাফুফে আগামী মে মাসের মধ্যেই সব আনুষ্ঠানিকতা শেষ করার ব্যাপারে আশাবাদী।
চলতি মৌসুমে সান্ডারল্যান্ডের হয়ে প্রিমিয়ার লিগ টুয়ে ৭টি ম্যাচ খেলেছেন কিউবা। একটি অ্যাসিস্টও এই মিডফিল্ডারের নামের পাশে আছে।
আরও পড়ুন: রিয়ালের কোচ হওয়ার গুঞ্জনে আলোনসোর জবাব, ‘এটা উপযুক্ত সময় নয়’
কিউবা স্বভাবজাত সেন্ট্রাল মিডফিল্ডার। ফলে খেলার টেম্পো নিয়ন্ত্রণে তার বিশেষ দক্ষতা আছে। তার শক্তির জায়গা হচ্ছে ড্রিবলিং, শর্ট পাসিং ও কুইক ট্রাঞ্জিশন। ভালো টার্ন নিতে পারায় সহজেই ক্লোজ কন্ট্রোলে প্রতিপক্ষের দুই একজন খেলোয়াড়কে হারাতে পারেন তিনি। ডায়াগনাল পাসে পজিশন সুইচ করতেও দারুণ পটু। সেই সঙ্গে ট্যাকলিংয়েও যথেষ্ট দক্ষতা দেখাতে পারেন। ফলে তাকে একজন পরিপূর্ণ মিডফিল্ডার বলাই যায়। সে ক্ষেত্রে চাইলেই অ্যাটাকিং মিডফিল্ডার হিসেবেও তাকে খেলানো সম্ভব।
তবে কিউবার সেরাটা পাওয়া যাবে তাকে যদি বক্স টু বক্স মিডফিল্ডার বা ডাবল পিভটে হামজার পাশে খেলানো যায়।
হামজা-সামিত ও কিউবা ছাড়াও আর বেশ কয়েকজন ফুটবলার বাংলাদেশকে নয়ে আগ্রহী। এমএলএসের ক্লাব ফিলাডেলফিয়া ইউনিয়নে খেলা দুই ভাই কুইন ও কাভান সুলিভানের দিকেও দেশের ফুটবল সমর্থকরা তালিয়ে আছেন। তাদের চাওয়া বিশেষ করে কুইন সুলিভানকে লাল সবুজের জার্সি গায়ে চাপানোর জন্য বাফুফে চেষ্টা করুক। দেখার বিষয় এই হাই প্রোফাইল ফুটবলার শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশের হয়ে খেলার আগ্রহ দেখায় কি-না।