জাল নথি বানিয়ে যুক্তরাজ্যে প্রবেশ করছেন পাকিস্তানিরা

৩ সপ্তাহ আগে
যুক্তরাজ্যের অভিবাসন আইনের ফাঁক-ফোকর কাজে লাগিয়ে জাল নথি বানিয়ে দেশটিতে প্রবেশ করছেন পাকিস্তানের নাগরিকরা। ৩০ থেকে প্রায় ৫০ হাজার পাউন্ড খরচ করে ব্রিটিশ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের চোখ এড়িয়ে ভিসা কিনছেন তারা। এমন তথ্য উঠে এসেছে ব্রিটিশ সংবাদ মাধ্যম টেলিগ্রাফের অনুসন্ধানে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ভুয়া চাকরির সুপারিশপত্র, ব্যাংকের আয় বিবরণী দিয়েও মিলছে যুক্তরাজ্যে কাজের অনুমতি। 

 

সাম্প্রতিক বছরগুলোতে যুক্তরাজ্যে রাজনৈতিক আশ্রয় প্রার্থী পাকিস্তানিদের সংখ্যা বাড়ছে। গত বছর দেশটিতে আবেদন করেন ১০ হাজার ৫৪২ জন পাকিস্তানি। এ সংখ্যা আগের বছরের তুলনায় প্রায় ৮০ শতাংশ বেশি। যদিও অবৈধভাবে ব্রিটেনে পাড়ি জমান না তারা। 

 

দেশটিতে গিয়ে নানা অজুহাতে রাজনৈতিক আশ্রয় প্রার্থনা করেন। অভিবাসন বিশেষজ্ঞদের মতে, এভাবে একদিকে চাপ বাড়ছে ব্রিটেনের জনশক্তি বাজারে, অন্যদিকে বাড়ছে আইনবহির্ভূত অভিবাসনের প্রবণতাও।

 

সম্প্রতি ব্রিটিশ সংবাদ মাধ্যম টেলিগ্রাফের অনুসন্ধানে উঠে আসে যুক্তরাজ্যে পড়াশোনা বা কাজ করতে যাওয়া পাকিস্তানিরা বেশিরভাগই বিশ্ববিদ্যালয়ে না গিয়ে কিংবা চাকরিতে যোগ না দিয়েই আশ্রয় প্রার্থনা করছেন। 

 

কেউ কেউ জাল নথি দেখিয়ে ব্যাংক থেকে লোন নিয়ে উধাও হচ্ছেন। কেউ বা নকল অভিজ্ঞতা দেখিয়ে স্বাস্থ্যখাতে চাকরি নিচ্ছেন। এমনকি অনেকে ইউরোপীয় ইউনিয়নে ভুয়া সংযোগ দেখিয়ে দ্বিতীয় অ্যাসাইলাম আবেদনও করছেন, যেন আরও দীর্ঘ সময় যুক্তরাজ্যে থাকার সুযোগ মেলে।

 

আরও পড়ুন: পাকিস্তানে বন্যায় চার পর্যটকের মৃত্যু, নিখোঁজ অন্তত ১৫

 

ভুয়া নথি তৈরি করে ব্রিটেনের ভিসা পাইয়ে দিতে পাকিস্তানে গড়ে উঠেছে একাধিক প্রতারক চক্রও। ‘মিরপুর ভিসা কনসাল্টেন্ট’ নামে আজাদ কাশ্মীরের এক অফিসের তথ্য উঠে আসে টেলিগ্রাফের প্রতিবেদনে।

 

এই অফিসের প্রধান নির্বাহী সাইয়েদ কামরান হায়দারের দাবি, তার তৈরি নথি দিয়েই ব্রিটেনে যাওয়ার ক্ষেত্রে সাফল্যের হার ৯৮%! কোনো রকম রাখ ঢাক না রেখেই জানান, নিজেই গ্যারান্টি দিয়ে আবেদনকারীকে ভুয়া সিভি, জাল ব্যাংক স্টেটমেন্ট তৈরি করে দেন তিনি। ফি হিসেবে নেন ৩২ হাজার ৭০০ পাউন্ড। সঙ্গে আলাদা করে নথি তৈরির খরচ, ব্যাংক স্টেটমেন্টের মূল্য মোট মিলিয়ে প্রায় ৫০ হাজার পাউন্ড।

 

ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারের নতুন অভিবাসন নীতিতেও আসেনি কাঙ্ক্ষিত কড়াকড়ি। ব্রিটিশ অভিবাসন নীতি অনুযায়ী, একবার ওয়ার্ক ভিসা পেলে সেই মেয়াদ থাকা অবস্থায় অ্যাসাইলাম চাইলে আবেদন নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত কাজ করার অধিকারও বজায় থাকে।

 

আরও পড়ুন: উত্তরায় বিমান দুর্ঘটনায় পা‌ক প্রধানমন্ত্রীর বার্তা

 

এই ফাঁক-ফোকর কাজে লাগিয়েই ভুয়া নথি বানিয়ে দেশটিতে রাজনৈতিক আশ্রয় চাইছেন পাকিস্তানি নাগরিকরা। সেই সঙ্গে ভিসা আবেদন যাচাই-বাছাই এ স্বরাষ্ট মন্ত্রণালয়ের শিথিলতাকেও দুষছেন বিশেষজ্ঞরা।
 

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন