বুধবার (১১ ডিসেম্বর) আরাকান আর্মির বরাতে এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম দ্য ইরাবতি।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কয়েক মাস লড়াইয়ের পর বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মি জান্তার শেষ অবশিষ্ট সীমান্ত ঘাঁটি মংডু শহরের বাইরে অবস্থিত বর্ডার গার্ড পুলিশ ব্যাটালিয়ন নং ৫ গত রোববার (৮ ডিসেম্বর) সকালে দখল করে নেয়।
এর ফলে বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তের প্রায় পৌনে তিনশ কিলোমিটার সীমান্তের পুরোটাই আরাকান আর্মির নিয়ন্ত্রণে চলে গেছে।
সুরক্ষিত এই ঘাঁটিটি আরাকান রোহিঙ্গা আর্মি (এআরএ), আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি (এআরএসএ) এবং রোহিঙ্গা সলিডারিটি অর্গানাইজেশন (আরএসও) এর রোহিঙ্গা মিলিশিয়া সহ ৭০০ জনেরও বেশি সরকারি পুলিশ অফিসার এবং সৈন্যদের মাধ্যমে পরিচালিত হত।
আরও পড়ুন: মংডুর পতন: বাংলাদেশ সীমান্তে মিয়ানমারের ২৭০ কিমি আরাকান আর্মির নিয়ন্ত্রণে
আরাকান আর্মি জানিয়েছে, তারা জান্তার বিমান হামলার মধ্যে ৫৫ দিনের লড়াইয়ের পরে রোববার ঘাঁটি দখল করতে সক্ষম হয়েছে।
ইরাবতি বলছে, বর্ডার গার্ড পুলিশ ব্যাটালিয়ন সদর দফতরে লড়াইয়ের সময় ৪৫০ জনেরও বেশি সরকারি সৈন্য নিহত হয়েছে এবং আরাকান আর্মির সৈন্যরা প্রচুর অস্ত্র ও গোলাবারুদ জব্দ করেছে।
আরাকান আর্মির হাতে ঘাঁটিটির পতনের পর সরকারি সেনাসহ অন্যরা পালিয়ে যায়। তবে ঘাঁটি থেকে পালিয়ে যাওয়ার পর প্রায় ৮০ জন রোহিঙ্গা বিদ্রোহীসহ সরকারি সৈন্যদের সাথে জান্তার মিলিটারি অপারেশন কমান্ড (এমওসি) ১৫ এর কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল থুরেইন তুনকে আটক করে আরাকান আর্মি।
ঘাঁটিটি দখল করার কয়েক ঘণ্টা আগে, ভেতরে আটকে থাকা জান্তা সৈন্যরা সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি ভিডিও পোস্ট করেছিল যাতে তারা তাদের সেখান থেকে সরিয়ে নেয়ার জন্য জান্তা নেতার কাছে আবেদন করে।
ভিডিওতে, জান্তা সৈন্যদের বলতে শোনা যায়, তারা তিন মাস ধরে ঘাঁটিতে আটকে আছে। এরপরও শাসক নেতারা তাদের সরিয়ে নিতে কোনো পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করেননি এবং ব্রিগেডিয়ার জেনারেল থুরেইন তুন তাদের পরিত্যাগ করেছেন।
আরও পড়ুন: রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবর্তনে বৈশ্বিক ঐকমত্য জরুরি: হাই রিপ্রেজেন্টেটিভ
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২১ সালে সামরিক অভ্যুত্থানের পরে দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর মান্দালেতে শান্তিপূর্ণ অভ্যুত্থান বিরোধী বিক্ষোভের ওপর প্রাণঘাতী ক্র্যাকডাউন চালানোর জন্য জেনারেল থুরেইন তুন কুখ্যাত। পাশাপাশি তিনি রাখাইন প্রদেশের উত্তরে জান্তার পক্ষে লড়াই করার জন্য রোহিঙ্গাদের প্রশিক্ষণ ও অস্ত্র দেয়ার অভিযোগেও অভিযুক্ত।
গত মাসে জাতিসংঘ জানায়, রাখাইনে ২০ লাখের বেশি মানুষ দুর্ভিক্ষের মুখে পড়েছে। জান্তার পক্ষ থেকে এসব রাজ্যে যাওয়ার জন্য সড়কপথ ও নৌপথ অবরোধ করে রাখা হয়েছে। এতে আন্তর্জাতিক মানবিক সহায়তাসহ খাদ্য, জ্বালানি ও ওষুধ সেখানে যেতে পারছে না।