গত ১ মে খালুর দোকান এলাকায় সংঘটিত এ ঘটনা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে জেলাজুড়ে চরম সমালোচনা ও নিন্দা শুরু হয়। ভিডিওতে দেখা যায়, দেলোয়ার হোসেন নিজেই লাঠি হাতে দাঁড়িয়ে দুই নারীকে নাকে খত দিতে বাধ্য করছেন। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, এ ঘটনায় অভিযুক্ত দুই কিশোর বর্তমানে এলাকা ছেড়ে পালিয়ে আছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, খালুর দোকান এলাকার দুই কিশোরের বিরুদ্ধে কবুতর ও মুরগি চুরির অভিযোগ আনেন স্থানীয় বাসিন্দা জাহাঙ্গীর। এরপর দেলোয়ার হোসেনের নেতৃত্বে একটি সালিশ বৈঠক ডাকা হয়, যেখানে আশপাশের চার এলাকার মানুষকে জড়ো করা হয়।
বৈঠকে অপরাধ প্রমাণ না থাকা সত্ত্বেও, দুই কিশোরের মাকে জনসম্মুখে লাঞ্ছিত করা হয়। ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, দেলোয়ার হোসেন লাঠি উঁচিয়ে নির্দেশ দিচ্ছেন এবং দুই মা বাধ্য হয়ে মাটিতে বসে “নাকে খত” দেন, যা ধর্মীয় ও সামাজিকভাবে চরম অপমানজনক ও মানবাধিকার লঙ্ঘন।
হেনস্তার শিকার দুই মায়ের সন্তানেরা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, অপরাধ যদি করেও থাকে, করেছে আমার ভাই। কিন্তু আমার মাকে কেন প্রকাশ্যে অপমান করা হলো? এটা কী সভ্য সমাজে সম্ভব?
তারা প্রশাসনের কাছে বিচার দাবি করেন এবং দেলোয়ার হোসেনের বিরুদ্ধে আরো অনেক অপকর্ম ও নির্যাতনের অভিযোগ থাকার কথাও জানান।
আরও পড়ুন: ফরিদপুরে সালিশ চলাকালে দুপক্ষের সংঘর্ষ আহত ৩০
আইনজীবী রহিমা খাতুন বলেন, জনসম্মুখে কাউকে হেনস্তা করা আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ। এমন শাস্তি স্থানীয় সালিশের নামে প্রদান করা যায় না। এটি স্পষ্টতই মানবাধিকারের লঙ্ঘন।
ফেনীর পুলিশ সুপার হাবিবুর রহমান জানান, ঘটনার ভিডিও এবং অভিযোগ খতিয়ে দেখা হচ্ছে। দোষীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
ঘটনার ব্যাপক সমালোচনার মুখে ফেনী সদর উপজেলা বিএনপি রোববার বিকেলে এক চিঠির মাধ্যমে অভিযুক্ত দেলোয়ার হোসেন দেলুকে দলীয় সব পদ থেকে সাময়িকভাবে অব্যাহতি দেয়।
এ বিষয়ে দেলোয়ার হোসেন নিজে বলেন, পরিস্থিতি বিবেচনায় আমি এমনটা করেছি। কিন্তু এটা মানবাধিকার লঙ্ঘন বলে কেউ মনে করলে দুঃখিত।