সপ্তাহজুড়ে ব্যস্ততা, ক্লান্তির ভার-আর ছুটির দিনে একটু স্বস্তির পরশ খুঁজে নেন অনেকেই। সেই খোঁজ যেন গিয়ে মিলে কক্সবাজারের বালুকাবেলায়।
শুক্রবার (১০ অক্টোবর) সাপ্তাহিক ছুটির দিকে বিশ্বের অন্যতম দীর্ঘ সমুদ্রসৈকত কক্সবাজারে নেমেছে পর্যটকের ঢল। কেউ করছেন সমুদ্রস্নান, কেউ আবার ঘোড়ায় চড়ে বা বিচ বাইকে ছুটে বেড়াচ্ছেন সাদা বালুর রাজ্যে।
জেট স্কি আর সাগরের ঢেউয়ের মাঝে হারিয়ে যাচ্ছে ক্লান্তি। হাসিতে মেতে উঠেছেন বড়-ছোট সব বয়সী মানুষ। ক্যামেরায় ছবি, স্মৃতিতে রয়ে যায় অবিস্মরণীয় মুহূর্তগুলো।
সিলেট থেকে আসা পর্যটক রিদুয়ান হাসান বলেন, ‘কর্মব্যস্ততা আর ক্লান্তি দূর করার জন্য স্বস্তির জায়গা হচ্ছে কক্সবাজার। এখানে আসলে আনন্দ আর স্বস্তি দুটোই পাওয়া যায়।’
নোয়াখালী থেকে আসা পর্যটক রিয়াজুল ইসলাম বলেন, ‘সাপ্তাহিক ছুটিতে সবচেয়ে ঘুরে বেড়ানো জনপ্রিয় জায়গা হচ্ছে কক্সবাজার। তাই বাচ্চা আর স্ত্রীকে নিয়ে কক্সবাজার এসে, নোনাজল আর বালিয়াড়িতে খুব মজা করছি।’
আরও পড়ুন: কক্সবাজারে পলিথিন-প্লাস্টিক বর্জ্য থেকে তৈরি হচ্ছে আসবাবপত্র
রাজশাহী থেকে আসা পর্যটক রুবাইয়া রহমান বলেন, ‘রাজশাহী থেকে কক্সবাজার ঘুরতে এসেছি। ওখানে পদ্মার চরের নদীর সঙ্গে কক্সবাজারের সাগরের তুলনা করে দেখতে অনেক ভাল লাগছে। তবে সাগরই সবচেয়ে বেশি উপভোগ্য।’
এদিকে পর্যটকের আগমনে ব্যস্ততা বাড়ায় খুশি সৈকতপাড়ের ব্যবসায়ীরা। তারা বলছেন, পর্যটন ব্যবসা চাঙ্গা হয়ে উঠেছে।
সৈকতপাড়ের ফটোগ্রাফার সোহেল চৌধুরী বলেন, ‘সাপ্তাহিক ছুটির দিনে প্রচুর পর্যটক কক্সবাজারে। সকাল ৮টা সৈকতে এসে দুপুর পর্যন্ত ৩ হাজার টাকা আয় করেছি। শুধু আমি না, এখানকার সব ব্যবসায়ী পর্যটক আসাতে ভালো ব্যবসা করছে।’
শামুক-ঝিনুক বিক্রেতা রহিম উদ্দিন বলেন, ‘পর্যটক আসলেই আমাদের মুখে হাসি ফুটে। এখন পর্যটকে ভরপুর হওয়ায় ব্যবসা যেমন ভাল হচ্ছে, ঠিক তেমনি সব ব্যবসায়ীদের মুখে হাসি।’
সাগরতীর কিংবা পর্যটন কেন্দ্র; বাড়তি ভিড় সামলাতে সজাগ রয়েছে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। সৈকতে মোতায়েন রয়েছেন পর্যাপ্ত ট্যুরিস্ট পুলিশ ও লাইফগার্ড।
সি সেফ লাইফ গার্ড সংস্থার সিনিয়র লাইফ গাড মো. সাদিক হোসেন বলেন, ‘পর্যটক বেশি। তাই সৈকতের ৩টি পয়েন্টে সমুদ্রস্নানরত পর্যটকদের ওপর নজরদারি জোরদার করা হয়েছে। আমাদের পাশাপাশি ট্যুরিস্ট পুলিশ ও বিচ কর্মীরা দায়িত্ব পালন করছে। ৩টি সংস্থার কর্মীরা প্রতিনিয়ত মাইকিংয়ের পাশাপাশি পর্যটকদের সেবা দিয়ে যাচ্ছি।’
আরও পড়ুন: প্রবারণায় রামুর নদীতে ভাসল ‘পঙ্খিরাজ, হাতি, ময়ূরপঙ্খি’
নোনাজলের ছোঁয়া, প্রকৃতির মায়া, আর প্রাণের স্পর্শে ভ্রমণপিপাসুদের ছুটির দিন হয়ে উঠছে আরও রঙিন। আর এই মুহূর্তগুলো যেন তাদের থেকে যাচ্ছে... মনে, মেঘে আর মুগ্ধতায়।
এদিকে সাপ্তাহিক ছুটিতে কক্সবাজার সমুদ্রসৈকত ছাড়াও দরিয়ানগর, হিমছড়ি, ইনানী, পাতুয়ারটেক ও টেকনাফ সৈকতে পর্যটকরা ঘুরে বেড়াচ্ছেন বলে জানিয়েছেন পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা।