জামালপুরের মেলান্দহ, মাদারগঞ্জ, ইসলামপুর, দেওয়ানগঞ্জ, সরিষাবাড়ি এবং বকশীগঞ্জ উপজেলার বিস্তীর্ণ ফসলের মাঠ জুড়ে চাষ হয়েছে সরিষা। দেশের ঊর্ধ্বমুখী ভোজ্যতেলের চাহিদা এবং অল্প খরচে দাম বেশি পাওয়ায় এই অঞ্চলের চাষিরা সরিষার আবাদে আগ্রহ বেশি।
চাষিরা জানান, গত বছরের চেয়ে এ বছর সরিষা আবাদের জন্য আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় ফলন ভালো। এবার তারা লাভের আশায় করছেন আগের বছরের চেয়ে বেশি। এ অঞ্চলে দেশি জাতের টরি-৭, বারি -১৪, বারি-১৭, বারি-১৮ এবং বিনা-১১ জাতের সরিষার আবাদ করা হয়েছে।
মাদারগঞ্জ উপজেলার কড়ইচড়া ইউনিয়নের জটিয়ারপাড়া গ্রামের সরিষা চাষী আক্কাস আলী বলেন, গত বছরের চেয়ে এবছর জেলা জুড়ে সরিষার আবাদ অনেক বেশি। এবার সরিষা আবাদের জন্য আবহাওয়া অনেক ভালো। বৃষ্টি না হওয়ায় ফুল ঝড়ে পড়ে নাই। আর গাছ পড়ে যায় নাই। আশা করছি এবার লাভ হবে গত বছরের তুলনায় দ্বিগুন।
আরও পড়ুন: বাড়তি লাভের আশায় সরিষা আবাদে ঝুঁকছেন বরেন্দ্র জনপদের চাষিরা
মেলান্দহ উপজেলার মধ্যেরচর গ্রামের কৃষক মজিবর রহমান বলেন, ‘সরিষা আবাদে লাভ সব দিকেই। সরিষার পাতা পড়ে জমিতে সার হয়, মাটির উর্বরতা বাড়ে। এ ফসল লাভজনক। এ বছর দুই একরের মতো সরিষা আবাদ করেছি। মাঠে বেশ ফুল ফুটেছে। আশা করছি ফলন ভালো হবে। সরিষায় ধানের চেয়ে লাভ বেশি।’
এদিকে সরিষার হলুদ মাঠে দর্শনাথীদের আনাগোনায় যেন বাড়তি উৎসবের আমেজ বইছে। দুরদূরান্ত থেকে হলুদের মাঠে ঘুরে বাড়ি ফিরছেন হলুদ প্রিয়রা।
দর্শনার্থীরা সকাল থেকেই ছুটে আসছেন সরিষার মাঠে। তুলছেন ছবি।
মাদারগঞ্জ থেকে পরিবার নিয়ে সরিষা ফুলের মাঠে ঘুরতে এসেছেন আমিনুল ইসলাম। তিনি বলেন, প্রতি বছর এই সময়ে পরিবার নিয়ে সরিষার ফুল দেখতে আসি। এবার যেন একটু বেশিই ভালো লাগা কাজ করছে। ছেলে-মেয়েরা বেশ উচ্ছ্বসিত।
জামালপুর শহরের কাচারীপাড়া থেকে বন্ধুদের নিয়ে এসেছেন সৌরভ। তিনি বলেন, এ যেন এক অন্যরকম অনুভূতি। সকালে আর বিকালে সরিষার মাঠে ঘুরতে ভালো লাগে তাই ছুটে আসি। ছবি খুবই সুন্দর আসে এখানে। এক স্নিগ্ধ পরিবেশ।
আরও পড়ুন: শীতে সরিষার তেল ব্যবহারের উপকারিতা
জামালপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ জাকিয়া সুলতানা জানিয়েছেন, এ বছর আবহাওয়ার অবস্থা অনেক ভালো । সরিষার আবাদ বৃদ্ধির জন্য কৃষকদের কৃষকদের ইউরিয়া টিএসপি এম্যোকি ব্যবহারে উৎসাহিত করা হচ্ছে। সরিষা চাষে আগ্রহ বাড়াতে উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তারা মাঠ পর্যায়ের কৃষকদের পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছে।
আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় এ বছর সরিষার ভালো ফলন হবে বলে আশা করছেন তিনি।
]]>