এই গৌরবময় আয়োজনে সমাবর্তন বক্তা হিসেবে উপস্থিত থাকবেন নোবেল শান্তি পুরস্কার বিজয়ী, প্রাজ্ঞ অর্থনীতিবিদ প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
সমাবর্তন অনুষ্ঠানে প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ইউনূসকে বিশ্ববিদ্যালয় সম্মানসূচক ‘ডক্টর অব লিটারেচার (ডি.লিট.)’ ডিগ্রি প্রদান করা হবে। এছাড়া সমাবর্তনে ৪২ জনকে পিএইচডি, ৩৩ জনকে এমফিলসহ মোট ২২ হাজার ৫৮৬ শিক্ষার্থীকে ডিগ্রি দেয়া হবে।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করবেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইয়াহ্ইয়া আখতার। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন বাংলাদেশ সরকারের শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. চৌধুরী রফিকুল আবরার।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রামে প্রধান উপদেষ্টা
উপাচার্য প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইয়াহ্ইয়া আখতার বলেন, এ সমাবর্তন কেবল একটি আনুষ্ঠানিকতা নয়, এটি আমাদের জাতীয় গৌরবের প্রতিচ্ছবি। একজন নোবেল জয়ীকে সমাবর্তন বক্তা হিসেবে পাওয়া এবং তাকে ডি লিট ডিগ্রি প্রদান আমাদের ইতিহাসে একটি স্মরণীয় অধ্যায় হয়ে থাকবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন হাজারো গ্র্যাজুয়েট, তাদের পরিবারবর্গ ও আমন্ত্রিত অতিথিরা। গ্র্যাজুয়েটদের মুখে উচ্ছ্বাস, প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের আবেগপূর্ণ ফিরে আসা, আর শিক্ষকদের গর্বিত দৃষ্টি সব মিলিয়ে সমাবর্তন পরিণত হবে এক মহা-উৎসবে।
পাহাড়ের শান্ত কোলে গড়ে ওঠা চবি তার যাত্রা শুরু করে ১৯৬৬ সালের ১৮ নভেম্বর। দীর্ঘ ইতিহাসে নানা সাফল্য ও গৌরবের সাক্ষী হলেও এ পর্যন্ত এখানে মাত্র চারটি সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হয় ১৯৯৪ সালে, দ্বিতীয়টি ১৯৯৯ সালে, তৃতীয় ২০০৮ সালে এবং সর্বশেষ চতুর্থ সমাবর্তন হয় ২০১৬ সালের ৩১ জানুয়ারি।
আরও পড়ুন: প্রধান উপদেষ্টার চট্টগ্রাম সফর: বন্দর, সেতু ও সমাবর্তনে ব্যস্তসূচি
এবারের পঞ্চম সমাবর্তন হচ্ছে আগের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে। ২০১১ থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করা মোট ২২ হাজার ৫৬০ জন শিক্ষার্থী এই আয়োজনে অংশ নিচ্ছেন। অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীর সংখ্যার দিক থেকে এটিই হচ্ছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসে সর্ববৃহৎ সমাবর্তন।
অনুষদভিত্তিক অংশগ্রহণে শীর্ষে রয়েছে কলা ও মানববিদ্যা অনুষদ, যেখানে অংশ নিচ্ছেন ৪ হাজার ৯৮৭ জন। এরপর রয়েছে ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদে ৪ হাজার ৫৯৬ জন, সমাজবিজ্ঞান অনুষদে ৪ হাজার ১৫৮ জন এবং বিজ্ঞান অনুষদে ২ হাজার ৭৬৭ শিক্ষার্থী।
সমাবর্তনের এই বিশাল আয়োজন কেবল সংখ্যার দিক থেকেই নয়, বরং মান, মর্যাদা ও অনুপ্রেরণার ক্ষেত্রেও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসে এক নতুন মাত্রা যোগ করছে। এই মহামিলন মেলায় অংশগ্রহণকারী হাজারো শিক্ষার্থী শুধু একটি আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতিই পাচ্ছেন না, বরং জাতি গঠনে নতুন দায়িত্ব নিয়ে এগিয়ে যাওয়ার অঙ্গীকারও করছেন।