শুক্রবার (৪ জুলাই) চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে হত্যাচেষ্টা মামলার আসামি ড. কুশল বরণ চক্রবর্তীর পদোন্নতি বোর্ড বসার কথা ছিলো বিকাল ৩ টায়। এর প্রতিবাদে দুপুর আড়াইটা থেকে বিক্ষোভ শুরু করে শিক্ষার্থীরা। এরপর বিকাল ৩ টায় প্রশাসনিক ভবনে তালা দেয় তারা।
এসময় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, দুই উপ-উপাচার্য ও কর্মকর্তারা অবরুদ্ধ হয়ে পড়েন। পরবর্তীতে শিক্ষার্থীদের একাংশের সাথে আলোচনার মাধ্যমে পদন্নোতি বোর্ড বাতিল করে প্রশাসন।
পাশাপাশি আরও তিনটি দাবি জানায় শিক্ষার্থীরা। তারা কুশল বরণসহ ক্যাম্পাসে ফ্যাসিবাদের বাকি দোসরদের অবাঞ্ছিত ঘোষণা করার দাবি জানায়।
আগামী ২৪ জুলাই সিন্ডিকেট মিটিংয়ের মাধ্যমে এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত হবে বলে জানায় প্রশাসন।
আরও পড়ুন: চবি ক্যাম্পাসে চাকসু ভবনের নতুন নাম ‘জোবরা ভাত ঘর’, ব্যঙ্গাত্মক প্রতিবাদ
এছাড়াও শিক্ষার্থীরা অভিযুক্তদের একাডেমিক কার্যক্রম থেকে অব্যাহতি দেয়া এবং ৫ আগস্টের মধ্যে জুলাইয়ে সন্ত্রাসী কার্যকলাপের সাথে জড়িত সকল শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারী ও শিক্ষার্থীদের বিচারের আওতায় আনার দাবি জানায়।
এসকল বিষয়ে প্রশাসনের আশ্বাস পেয়ে বিকেল ৫ টায় তালা খুলে দেয় শিক্ষার্থীরা।
জানা যায়, গতবছর ২৬ নভেম্বর হেফাজতে ইসলামের কর্মী এনামুল হক চৌধুরী চট্টগ্রাম আদালত প্রাঙ্গণে চিন্ময় কৃষ্ণের অনুসারীদের হামলার ঘটনায় দায়েরকৃত মামলার ২০ নম্বর আসামি হলেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সংস্কৃত বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ড. কুশল বরণ চক্রবর্তী।
এ ছাড়াও গতবছর ২৬ অক্টোবর 'বাংলাদেশে সংখ্যালঘু হিন্দু, বৌদ্ধ ও আদিবাসী জনগোষ্ঠীর উপর গণহত্যা' বিষয়ক আন্তর্জাতিক সম্মেলনের আয়োজন করে শিক্ষার্থীদের তোপের মুখে পড়েন কুশল বরণ চক্রবর্তী। ভারতের প্রেসক্রিপশনে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার অভিযোগে তাকে গ্রেফতারের দাবিও জানান শিক্ষার্থীরা।
আরও পড়ুন: চলন্ত শাটলের নিচে পড়েও অল্পের জন্য প্রাণে রক্ষা পেলেন চবি ছাত্রী
কুশল বরণ চক্রবর্তীর পদন্নোতি বোর্ডের বিষয়ে রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম বলেন, কুশল বরণের বোর্ড প্রত্যাহার করা হয়েছে। সংবাদপত্রে ওর বিষয়ে কিছু সংবেদনশীল নিউজ হয়েছে। এজন্য বোর্ড প্রত্যাহার করা হয়েছে।
উপ-উপাচার্য (একাডেমিক) অধ্যাপক শামীম উদ্দিন খান বলেন, ‘শিক্ষার্থীরা বেশ কিছু দাবি জানিয়েছে। জুলাই আন্দোলনে যারা আন্দোলন বিরোধী ভূমিকা পালন করেছে তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়ার জন্য আমাদের পক্ষ থেকে সর্বাত্মক চেষ্টা করা হবে।’
ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী ইসহাক ভূঁইয়া বলেন, হত্যাচেষ্টা মামলার আসামি কুশল বরণ চক্রবর্তীর পদোন্নতির জন্য আজ বোর্ড বসানোর কথা ছিল। এজন্য আমরা প্রতিবাদ জানিয়েছি। তার বোর্ড প্রত্যাহার করা হয়েছে। এছাড়াও আমরা কুশল বরণ, রন্টু দাসসহ যারা ফ্যাসিবাদের দোসর ছিল তাদেরকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা ও ৫ আগস্টের মধ্যে বিচারের আওতায় আনার কথা জানিয়েছি। প্রশাসন এসকল দাবি পূরণের আশ্বাস দেয়।
]]>