আগামী কয়েক ঘণ্টার মধ্যে জ্যামাইকায় আঘাত হানতে চলেছে ঘূর্ণিঝড়টি। এরই মধ্যে স্থানীয় অনেক বাসিন্দাকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেয়া হয়েছে। কিছু আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, ঘূর্ণিঝড়টি দ্বীপ দেশটিতে পৌঁছানোর পরও পাঁচ নম্বর ক্যাটাগরির থাকতে পারে।
এমন অবস্থায় নাগরিকদের দ্রুত নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নেয়ার আহ্বান জানিয়ে জ্যামাইকার স্থানীয় সরকার বিষয়ক মন্ত্রী ডেসমন্ড ম্যাকেঞ্জি বলেছেন, সেন্ট এলিজাবেথ ও ওয়েস্টমোরল্যান্ডে মোট প্রায় ৬ হাজার আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রয়েছে। ঘূর্ণিঝড় মেলিসা এই দুই এলাকায় আঘাত হানতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।
মন্ত্রী বলেন, এটিই কর্তৃপক্ষের শেষ ব্রিফিং। তবে নিরাপত্তা ব্যবস্থা দ্বিগুণ করার এবং দ্রুত আশ্রয়কেন্দ্রে যাওয়ার সুযোগ এখনও রয়েছে। জাতির উদ্দেশ্যে সরাসরি সম্বোধন করে তিনি বলেন: ‘এখন সাহসী হওয়ার সময় নয়।’ মন্তব্য শেষে সতর্ক করে তিনি বলেন, ‘মেলিসার বিরুদ্ধে বাজি ধরবেন না - এটি এমন একটি বাজি যা আমরা জিততে পারব না।’
এদিকে দেশটির জ্বালানিমন্ত্রী ড্যারিল ভাজ বলেছেন, ঘূর্ণিঝড়টির প্রভাবে এরই মধ্যেই বিদ্যুৎ গ্রিড ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, যার ফলে জ্যামাইকাজুড়ে বেশ কয়েকটি বিদ্যুৎকেন্দ্রে বিভ্রাট ঘটেছে। তিনি জানিয়েছেন, প্রায় ২ লাখ ৪০ হাজার গ্রাহক বিদ্যুৎবিহীন হয়ে পড়েছে। যার অর্থ হল দেশের ৩৫ শতাংশ গ্রাহকই (ব্যবসা বা বাড়ি) এখন বিদ্যুৎবিহীন।
মেলিসাকে শতাব্দীর সবচেয়ে ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড় হিসেবে অভিহিত করে সতর্ক করেছে জাতিসংঘের আবহাওয়া সংস্থা। মঙ্গলবার সংস্থার এক কর্মকর্তা বলেন, ঝড়টি দ্বীপটিতে ‘বিপর্যয়কর পরিস্থিতি’ সৃষ্টি করতে পারে। ঘূর্ণিঝড়টি জ্যামাইকায় আঘাত হানার আগেই সোমবার সন্ধ্যায় প্রবল বাতাস ও বর্ষণে তিনজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।
স্যাফির-সিম্পসন স্কেলে ক্যাটাগরি-৫ মাত্রার এ ঝড়ে ঘণ্টায় ৩০০ কিলোমিটারেরও বেশি বেগে বাতাস প্রবাহিত হতে পারে। দেশজুড়ে মারাত্মক ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কায় সরকার বাধ্যতামূলকভাবে উপকূলীয় অঞ্চলগুলো থেকে মানুষ সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে।
বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থার (ডব্লিউএমও) ট্রপিক্যাল সাইক্লোন বিশেষজ্ঞ আন-ক্লেয়ার ফঁতান জেনেভায় সাংবাদিকদের বলেন, ‘জামাইকার জন্য এটি নিঃসন্দেহে শতাব্দীর সবচেয়ে ভয়াবহ ঝড়। এতে বিপর্যয়কর পরিস্থিতি তৈরি হবে।’
তিনি জানান, চার মিটার পর্যন্ত জলোচ্ছ্বাস এবং ৭০ সেন্টিমিটারেরও বেশি বৃষ্টিপাতের ফলে ভয়াবহ বন্যা ও ভূমিধসের আশঙ্কা রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল হারিকেন সেন্টারের (এনএইচসি) পূর্বাভাস অনুযায়ী, মঙ্গলবার সকালেই জামাইকার ভূমিতে আঘাত হানবে মেলিসা, এরপর পূর্ব কিউবা পেরিয়ে বুধবার বাহামা ও টার্কস অ্যান্ড কাইকোস দ্বীপপুঞ্জে প্রবেশ করবে।
]]>
৩ সপ্তাহ আগে
৩







Bengali (BD) ·
English (US) ·