নিহত টিঠন মিয়া নেত্রকোনা জেলার সদর উপজেলার লক্ষ্মীপুর (দলপারামপুর) গ্রামের বাসিন্দা এবং গত চার বছর ধরে কারখানার ফিনিশিং শাখায় সাধারণ অপারেটর (পেকার) হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
নিহত টিঠন মিয়ার সহকর্মীরা জানান, দুপুরের খাবারের বিরতির পর তিনি বুকে ব্যথা অনুভব করলে সহকর্মীরা দ্রুত তাকে কারখানার মেডিকেল সেন্টারে নিয়ে যায়। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে তাকে স্থানীয় একটি হাসপাতালে পাঠানো হয়, পরে শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে চিকিৎসক বিকেল ৫টায় তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
কারখানার অপারেশন বিভাগের মহাব্যবস্থাপক দুশান্তা কুমার জানান, টিঠন মিয়া দুপুরের বিরতির পর কাজ শুরু করলে হঠাৎ বুকে ব্যথা অনুভব করেন। মেডিকেল সেন্টারের চিকিৎসক প্রাথমিকভাবে গ্যাস্ট্রিকের ওষুধ দিলে তিনি কিছুটা সুস্থবোধ করেন। পরে আবার ব্যথা শুরু হলে তাকে হাসপাতালে পাঠানো হয়।
ঘটনার পর শ্রমিকদের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। সহকর্মীরা অভিযোগ করেন, কারখানা কর্তৃপক্ষ দ্রুত ব্যবস্থা না নেওয়ায় টিঠনের মৃত্যু হয়েছে। তারা বকেয়া পাওনা ও ক্ষতিপূরণের দাবিতে কারখানার বাইরে বিক্ষোভ করেন।
কারখানার মানবসম্পদ ও প্রশাসন বিভাগের জেনারেল ম্যানেজার (জিএম) সাঈদ শিকদার জানান, শ্রমিক অসুস্থ হওয়া মাত্রই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল এবং কর্তৃপক্ষের কোনো গাফিলতি নেই। নিহত শ্রমিকের মরদেহ ময়নাতদন্ত ছাড়া পারিবারিকভাবে দাফনের জন্য গ্রামের বাড়িতে পাঠানো হয়।
আরও পড়ুন: মহাখালীতে খোলা হলো হিটস্ট্রোক সেন্টার, বিনামূল্যে মিলবে সেবা
কর্মকর্তারা জানান, নিহত টিঠন মিয়ার পরিবারকে ৫ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এছাড়াও তার পরিবারের কেউ চাকরি করতে চাইলে সুযোগ দেওয়া হবে এবং শ্রম আইনের আওতায় সব পাওনা পরিশোধ করা হবে।
গাজীপুর শিল্প পুলিশ-২ এর পরিদর্শক আব্দুল লতিফ খান বলেন, শ্রমিক মৃত্যুর খবর পেয়ে শিল্প পুলিশ ওই কারখানায় গিয়ে জানতে পারে অতিরিক্ত গরমে হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে ওই শ্রমিক মারা যান। মৃত্যুর খবরে শ্রমিকেরা উত্তেজিত হলে কারখানা কর্তৃপক্ষ নিহত শ্রমিকের সকল ক্ষতিপূরণের আশ্বাসে তারা শান্ত হয়।
জয়দেবপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল হালিম বলেন, অতিরিক্ত গরমে অসুস্থ হয়ে যায়। পরে কারখানা কর্তৃপক্ষ তাকে দ্রুত স্থানীয় মাওনা চৌরাস্তা আলহেরা হাসপাতালে পাঠায়। ওই হাসপাতাল থেকে শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে রেফার্ড করলে জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ওই শ্রমিককে মৃত ঘোষণা করেন।