মঙ্গলবার (৪ নভেম্বর) সন্ধ্যায় রাজধানীতে এনসিপির এক আলোচনা সভায় এই কথা বলেন তিনি।
আখতার বলেন, ‘বাহাত্তরের সংবিধান দিয়ে গত ৫০ বছর পরিচালনার কারণে বাংলাদেশের মানুষের কাঙিক্ষত মুক্তি অর্জন সম্ভব হয়নি। সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদের কারণে একজন সংসদ সদস্য জনগণের হয়ে কোনো কথা বলতে পারেননি। তার দলের প্রধান যে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, তাতেই একমত হতে হয়েছে। একমত না হলে সংসদ সদস্য পদই বাতিল হয়ে যায় ৭০ অনুচ্ছেদের কারণে। মুক্তিযুদ্ধে পরবর্তী এবং পঁচাত্তরের ঘটনা প্রবাহে সম্পূর্ণ দায়ভার আওয়ামী লীগের। তেমনি বর্তমান বাংলাদেশে যে সংকট তৈরি হয়েছে, এর দায়ভার বিএনপির ওপরই বর্তায়।’
তিনি আরও বলেন, ‘নোট অব ডিসেন্ট ছাড়া জুলাই সনদের যে অর্জন রয়েছে, নোট অব ডিসেন্টসহ জুলাই সনদে তার ছিটেফোঁটাও নেই। নোট অব ডিসেন্টসহ জুলাই সনদের কার্যকারিকা নাই এবং সেই কার্যকারিতাকে আইনি ভিত্তি দিয়েও টেকসই করা সম্ভব নয়। এজন্যই সেইদিন আমরা সনদের স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে অংশ নেইনি। যদি সনদের আইনি ভিত্তি দেয়া হয় এবং সঠিকভাবে আদেশ জারি করা হয়, গণভোটের প্রশ্নটা যদি সঠিকভাবে প্রেজেন্ট হয় তাহলে দেশের মানুষের আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়ন করা যাবে।’
বাংলাদেশের গত অর্ধশতাব্দির ইতিহাস ব্যর্থতার কথা উল্লেখ করে এনসিপির সদস্য সচিব বলেন, ‘এই ব্যর্থতার পেছনে রাজনৈতিক দলগুলোর যে দায়, সে দায়ের কেন্দ্রে থাকা আমাদের সিস্টেম কোনো গণতান্ত্রিক ছিল না। দেশের মানুষ ক্ষণে ক্ষণে তাদের জীবন দিতে প্রস্তুত। কিন্তু কেন জীবনের বিনিময়ে আমাদের নতুন কিছু পেতে হবে, কেন সেই জীবনগুলোকে বাঁচিয়ে রেখে তাদের ভালো নিয়তগুলোকে বাস্তবায়ন করতে পারবো না? এই ব্যর্থতার দায় কাদের ওপর দেব? অবশ্যই বাংলাদেশে যারা গতানুগতিক রাজনীতি করেছেন, তাদেরকেই এই দায়ভার নিতে হবে।’
জনগণ গণভোটের মধ্য দিয়ে তাদের একটা রায় জানান দেবেন উল্লেখ করে আখতার বলেন, ‘আমরা বিশ্বাস করি তারা হ্যাঁ ভোটের পক্ষে রায় দেবেন। কিন্তু গণভোটের পক্ষে একমত হয়েও যদি বিএনপির কোনো সিনিয়র নেতৃবৃন্দ এখন এসে বলেন- কীসের গণভোট। যেন তারা আকাশ থেকে পড়েছেন। তাদের এমনটা হওয়ারই কথা। যারা পরিবর্তনের সঙ্গে নিজেদেরকে খাপ খাইয়ে নিতে পারেন না, যারা সংস্কারের পক্ষে নেই তারা যখন নতুন করে সমাজে বিস্তার করতে থাকেন, তখনতো আকাশ থেকে পড়ার দশাতো হবেই।’
আরও পড়ুন: নির্বাচন বানচালের চেষ্টা করছে সরকারের একটি পক্ষ: আখতার হোসেন
তিনি বলেন, ‘বিএনপি মনে করেছে ৫ আগস্ট ঘটে গেছে। ছাত্র রক্ত দিয়ে, শ্রমিকেরা রক্ত দিয়ে দেশটাকে স্বাধীন করেছে নতুন করে, এখন তারা ক্ষমতায় চলে এসেছে। তাদের ক্ষমতার জায়গায় আর কোনো ধরনের বাগড়া দেবে এমন পরিস্থিতি মনে হয় আর কেউ তৈরি করতে পারবে না। কিন্তু বিষয়টা এমমন নয়। চব্বিশের অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে দেশের জনগণ জীবন দিয়েছে, শুধুমাত্র একটা সরকার পরিবর্তনের জন্য নয়। বরং দেশের সসার্বক্ষণিক শাসন ব্যবস্থাতে পরিবর্তনের লক্ষ্যে তারা জীবন দিয়েছেন।’
গোটা দেশটাকে নতুন করে গড়তে দলাদলি বাদ দেয়ার আহ্বান জানিয়ে এনসিপির এই শীর্ষ নেতা বলেন, ‘দলীয় সংকীর্ণ চিন্তা বাদ দিতে হবে। দেশের পক্ষে যে সংস্কার প্রস্তাবনাগুলো রয়েছে, তার পক্ষে সবাইকে অংশ নিতে হবে। সবাই মিলে রাষ্ট্রটাকে চালাতে পারবো ভালো করে, দেশে আর পেশিশক্তি রাজনীতি থাকবে না। আমরা পলিসি নির্ভর বাংলাদেশে ট্রান্সফরম করতে পারবো।’
]]>
৩ সপ্তাহ আগে
৪







Bengali (BD) ·
English (US) ·