খাসিয়া পল্লি ঘিরে জাফলংয়ে জমজমাট কমিউনিটি ভিত্তিক ট্যুরিজম, বাড়ছে কর্মসংস্থান

২ দিন আগে
প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর সিলেটের জাফলংয়ের খাসিয়া পল্লিতে গড়ে উঠছে কমিউনিটি বেইসড ট্যুরিজম। এখানে পারিবারিক পরিবেশে থেকে প্রকৃতি, সংস্কৃতি ও খাসিয়া জনগোষ্ঠীর জীবনযাপন কাছ থেকে উপভোগ করতে পারছেন পর্যটকরা। এতে একদিকে যেমন বাড়ছে পর্যটকদের আকর্ষণ, অন্যদিকে তৈরি হচ্ছে নতুন কর্মসংস্থানও। উদ্যোক্তাদের দাবি, যোগাযোগব্যবস্থা ও অন্যান্য সুবিধা নিশ্চিত করতে সরকারকে আরও এগিয়ে আসতে হবে।

ভারতের মেঘালয় ও বাংলাদেশের জাফলংয়ের আন্তসীমায় এই খাসিয়া পল্লির নিজস্ব সংস্কৃতি, শান্ত পরিবেশ ও রঙিন জীবনযাপন দীর্ঘদিন ধরেই পর্যটকদের মোহিত করে আসছে। বাংলাদেশের সিলেট সীমান্ত অঞ্চল মূলত নদী, পাহাড়, ঝরনা আর পাথরের মিলনে অনন্য এক সৌন্দর্য তৈরি করেছে, যা সারা বছরই ভ্রমণপিপাসুদের পুলকিত করে।

 

দীর্ঘদিন ধরে এখানে প্রচলিত সাধারণ পর্যটনের ধারা বজায় রেখেই এবার পল্লী ও জনগোষ্ঠীকে কেন্দ্র করে টেকসই পর্যটনের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। সেই লক্ষ্যেই খাসিয়া পল্লিতে গড়ে তোলা হচ্ছে কমিউনিটি বেইসড পর্যটন। যেখানে পল্লীর স্বভাব, সংস্কৃতি ও সামাজিক নিজস্বতা অক্ষুণ্ন রেখে পর্যটকরা পরিবারগুলোর সঙ্গে থেকে দেখবেন প্রকৃতি, জানবেন সংস্কৃতি।

 

এখন খাসিয়া পল্লির বেশ কয়েকটি বাড়িতে অতিথিদের থাকার ব্যবস্থাও করা হয়েছে। পাশাপাশি স্থানীয় তরুণেরা যুক্ত হয়েছেন ট্যুর গাইডসহ নানা কাজে-ফলে তৈরি হয়েছে নতুন কর্মসংস্থান, বদলে যাচ্ছে পুরো পল্লির অর্থনৈতিক চিত্র।

 

আরও পড়ুন: ভরা মৌসুমে কেন কক্সবাজারে নেই পর্যটকের চাপ?

 

স্থানীয়রা বলছেন, এখানে কমিউনিটি বেজড ট্যুরিজমের প্রসার ঘটানো হচ্ছে। খাসিয়া পরিবারের স্বকীয় জীবনযাপনের সঙ্গে পর্যটকদের মিশে যাওয়ার সুযোগ দিতে হোমস্টের ব্যবস্থা করা হয়েছে। সেখানে থাকা পর্যটকদের চারপাশের প্রকৃতি ও সাংস্কৃতিক পরিবেশও নিজেরাই ঘুরে দেখান এসব পরিবারের সদস্যরা।

 

কমিউনিটিভিত্তিক ট্যুরিজম পর্যটকদের কাছে জনপ্রিয় করতে সহায়তা করছে বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ড ও ইন্টারন্যাশনাল লেবার অর্গানাইজেশন (আইএলও)। তবে এ পল্লীর অবকাঠামো, সুযোগ সুবিধা নিশ্চিতে সরকারকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন সিলেট জাফলংয়ের খাসিয়া পুঞ্জি প্রধান ওয়েলকাম লিম্বা। তিনি বলেন, কমিউনিটি ট্যুরিজমের কারণে গত এক বছরে অনেক মানুষের কর্মসংস্থান হয়েছে। আরও তরুণকে এতে যুক্ত করতে বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ড এবং আইএলওকে অনুরোধ করা হয়েছে। কিন্তু এই পর্যটন পল্লীকে টিকিয়ে রাখতে এবং বড় পরিসরে গড়ে তুলতে সরকারের সরাসরি এগিয়ে আসা জরুরি।

 

স্থানীয় বাড়িনির্ভর এই পর্যটন ব্যবস্থায় সংশ্লিষ্ট এলাকার নিরাপত্তা, পর্যটকদের স্বাচ্ছন্দ্য এবং সার্বিক উন্নয়নে সেতুবন্ধন হিসেবে কাজ করছে বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ড। সংস্থাটির উপপরিচালক মো. কাবিল জানান, কমিউনিটি ট্যুরিজমে অংশগ্রহণ বাড়াতে স্থানীয়দের নিয়মিত উৎসাহ ও পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। পাশাপাশি পর্যটকদেরও উৎসাহিত করা হচ্ছে এসব কমিউনিটি এলাকার জীবনযাপন ও প্রকৃতি কাছ থেকে দেখতে ভ্রমণে আসতে।

 

উল্লেখ্য, খাসিয়া পল্লীতে অবস্থান করলে পর্যটকরা উপভোগ করতে পারবেন বিশাল সমতলের চা-বাগানের সৌন্দর্য, মায়াবী ঝরনা, বনপথে হাইকিং ও সাইক্লিংয়ের সুযোগ। পাশাপাশি দেখা মিলবে পিয়ান নদী আর জিরো পয়েন্টের মনোরম দৃশ্যপট।

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন