ক্ষতিপূরণ চাওয়ায় মামলা দিয়ে হয়রানির অভিযোগ, বিক্ষোভ-মানববন্ধন

৩ সপ্তাহ আগে
ফরিদপুরের ভাঙ্গায় সরোয়ার মুন্সি নামে এক বৃদ্ধের মৃত্যুকে কেন্দ্র করে প্রতিপক্ষের নামে হত্যা মামলা দিয়ে হয়রানির অভিযোগ উঠেছে। এর প্রতিবাদে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করেছেন এলাকাবাসী। তাদের অভিযোগ, সরোয়ার মুন্সি হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেলেও মিথ্যা মামলা দিয়ে ফাঁসানো হয়েছে।

শুক্রবার (২৮ মার্চ) বিকেল ৪ টার দিকে ভাঙ্গা উপজেলার ঘারুয়া ইউনিয়নের হিরালদী গ্রামের আঞ্চলিক সড়কে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন স্থানীয়রা। এতে দেড় শতাধিক নারী-পুরুষসহ ভুক্তভোগী পরিবারের লোকজন অংশগ্রহণ করেন।


জানা যায়, গত বছরের নভেম্বরে সাউতিকান্দা গ্রামের বাসিন্দা ও ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মাতবরের কাছ থেকে পেঁয়াজবীজ ক্রয় করেন হিরালদী গ্রামের কৃষকেরা। ক্রয়কৃত পেঁয়াজবীজ অঙ্কুরিত না হওয়ায় ক্ষতিপূরণ চাওয়াকে কেন্দ্র করে গত ১২ ডিসেম্বর সকালে মোস্তফা মাতবরের নেতৃত্বে কৃষকদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটে। এতে অন্ততপক্ষে ১০ জন কৃষক আহত হয়। তাদের মধ্যে ৪ জনকে হাসপাতালেও ভর্তি করা হলেও বাকিরা প্রাথমিক চিকিৎসা নেন।


কৃষকদের ওপর অতর্কিত হামলাকে কেন্দ্র করে সামান্য আঘাতপ্রাপ্ত হোন সরোয়ার মুন্সি। হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হয়ে যান। পরে ১৯ তারিখে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান তিনি। তার স্বাভাবিক মৃত্যুকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করেন সাউতিকান্দা গ্রামের মোস্তফা মাতবর, আওলাদ মাতবরসহ কয়েকজন।

আরও পড়ুন: পাবনায় জামায়াত নেতার বিরুদ্ধে ‘অপবাদ’, প্রতিবাদ সভা


পরে ভাঙ্গা থানায় আওলাদ শেখ বাদী হয়ে হত্যা মামলা দায়ের করেন। এতে ১৫ জনের নাম উল্লেখ করে হত্যা মামলা দায়ের করেন। এ মামলায় নিরীহ মানুষদের অসৎ উদ্দেশ্যে এবং চাঁদাবাজির জন্য আসামি করা হয়েছে বলে করেন অভিযোগ করেন স্থানীয়রা।


মামলায় আসামি করা হয়েছে ওই গ্রামের ফরিদুজ্জামান লাবলু ও তার বৃদ্ধ বাবা হাজী আব্দুল সালামকে। মানববন্ধন কর্মসূচি চলাকালে বক্তব্য রাখেন ফরিদুজ্জামান লাবলুর স্ত্রী সম্পা বেগম। 


তিনি বলেন, ‘আমার স্বামী ও অসুস্থ শ্বশুরের নামে মিথ্যা মামলা দেয়া হয়েছে। আমার শ্বশুর নিজে হাঁটতে পারে না, খাইতেও পারে না সে নাকি কোপ দিয়েছে। মামলার পর থেকে মোটা অংকের টাকা দাবি করে আসতেছে এবং কয়েকবার টাকা নিয়েছে। আমরা এই মিথ্যা মামলা থেকে মুক্তি চাই এবং ইন্ধনদাতাদের বিচার চাই।’ 


এছাড়া মামলার পর থেকে ওই গ্রামের নারী ও শিশুদের হুমকি-ধামকি দেয়া হচ্ছে। মামলার ভয়ে গ্রামবাসী ঘরছাড়া হলে মোস্তফা মাতবরের লোকজন হীরালদী গ্রামবাসীর ওপর নির্যাতন অত্যাচার বাড়িয়ে দেয়। তার নির্যাতনে বর্তমানে স্কুল পড়ুয়া গ্রামের ছেলে মেয়েরা স্কুলে যাওয়া থেকে বিরত রয়েছে। হাটবাজারে লোকজন যেতে পারছে না অভিযোগ করেন।

আরও পড়ুন: নারায়ণগঞ্জে জুলাই হত্যা মামলার আসামিকে ভারপ্রাপ্ত ইউপি চেয়ারম্যান নিয়োগ!

এসব থেকে পরিত্রাণ পেতে বর্তমান সরকারের প্রধান উপদেষ্টাসহ সংশ্লিষ্ট সবার কাছে দাবি জানিয়েছেন মানববন্ধনে থাকা শত শত নারী-পুরুষ।


বিষয়টি জানতে মামলার বাদী আওলাদ মাতবরের মুঠোফোনে কথা হলে তিনি মৃত সরোয়ার মুন্সিকে দলের লোক দাবি করেন। তিনি বলেন, ওরা বাঁচার জন্য আমাদের নামে মিথ্যা অভিযোগ করতেছে।


এ বিষয়ে ভাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আশরাফ হোসেন বলেন, হত্যা মামলাটি তদন্তনাধীন রয়েছে। তদন্তেই হত্যার মূল রহস্য উদঘাটন হবে।

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন