কোরআন যে আলোকিত পথের দিকে আহ্বান করে

২ সপ্তাহ আগে
আল্লাহ তাআলার বাণী, প্রিয় নবী হজরত মুহাম্মদ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের হাদিস ও নির্ভরযোগ্য উলামায়ে কেরামের মাসআলা এই তিনটি দিকনির্দেশনা একজন মুমিনের জীবনে আলোকবর্তিকা স্বরূপ।

প্রতিদিনের জীবনযাত্রায় এসব শিক্ষাকে ধারণ করা আমাদের ঈমান, আমল ও চরিত্রকে সঠিক পথে পরিচালিত করে। চলুন আজকের পবিত্র আয়াত, একটি গুরুত্বপূর্ণ মাসআলা ও রসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের মূল্যবান হাদিসের আলোকে আমরা নিজেদের আত্মার খোরাক গ্রহণ করি।

 

قُلۡ اَرَءَیۡتُمۡ اِنۡ کَانَ مِنۡ عِنۡدِ اللّٰہِ وَکَفَرۡتُمۡ بِہٖ وَشَہِدَ شَاہِدٌ مِّنۡۢ بَنِیۡۤ اِسۡرَآءِیۡلَ عَلٰی مِثۡلِہٖ فَاٰمَنَ وَاسۡتَکۡبَرۡتُمۡ ؕ  اِنَّ اللّٰہَ لَا یَہۡدِی الۡقَوۡمَ الظّٰلِمِیۡنَ  অর্থ: বল, তোমরা ভেবে দেখেছ কি, যদি এটা (অর্থাৎ কুরআন) আল্লাহর পক্ষ থেকে হয় আর তোমরা তাকে অস্বীকার কর। অন্যদিকে বনী ইসরাঈলের কোন সাক্ষী এ রকম বিষয়ের পক্ষে সাক্ষ্য দেয় এবং সে তার প্রতি ঈমানও আনে আর তোমরা নিজেদের অহমিকায় লিপ্ত থাক (তবে এটা কি মারাত্মক অবিচার হবে না?)। নিশ্চয়ই আল্লাহ জালেম সম্প্রদায়কে হেদায়াতপ্রাপ্ত করেন না।


 

আরও পড়ুন: কোরআন তিলাওয়াত করতে মাথা ঢাকতে হয়?

 

ভবিষ্যদ্বাণী করা হচ্ছে, ইয়াহুদি ও খ্রিস্টানদের মধ্যে কিছু লোক কোরআন মাজিদের প্রতি ঈমান আনবে। যেমন পরবর্তীতে ইয়াহুদিদের মধ্যে হজরত আবদুল্লাহ ইবনে সালাম (রাযি.) ও খ্রিস্টানদের মধ্যে হজরত আদী ইবনে হাতিম (রাযি.) ও নাজাশী (রহ.) ইসলাম গ্রহণ করেছিলেন।

 

তারা সাক্ষ্য দিয়েছিলেন, এ রকমই কিতাব হজরত মূসা আলাইহিস সালামের উপর নাযিল করা হয়েছিল এবং মৌলিক আকীদা-বিশ্বাসের দিক থেকে কোরআন মাজিদ তারই মত কিতাব। 

 

মক্কা মুকাররমার পৌত্তলিকদেরকে বলা হচ্ছে, পূর্বে যাদের আসমানী কিতাব ছিল তারা তো ঈমান আনার দিক থেকে তোমাদের সামনে চলে যাবে আর তোমরা আত্মাভিমান নিয়ে বসে থাকবে এটা কতই না জুলুমের কথা হবে।

 

কোরআন মাজিদ শুরুতেই নিজের পরিচয় দিতে গিয়ে ঘোষণা করেছে, ‘এ কিতাব মুত্তাকিদের জন্য পথনির্দেশ। (সুরা আল-বাকারা : ২) অর্থাৎ যে কেউ আল্লাহতায়ালাকে ভয় করে, ফলে তার খুশি-অখুশি জানতে চায়, তার পথে চলতে প্রয়াসী হয়, এমন প্রত্যেককেই এ কিতাব পথ দেখায়, সে আরব হোক বা অনারব, প্রাচ্যের হোক বা পাশ্চাত্যের এবং খ্রিস্টীয় সপ্তম শতাব্দীর লোক হোক বা তার পরের কেয়ামত পর্যন্ত যেকোনো কালের হোক। 

 

ভাষা-বর্ণ ও স্থান-কাল নির্বিশেষে সব মানুষের জন্য এ গ্রন্থ দ্বীন-দুনিয়ার কল্যাণপথের হেদায়াত। কিন্তু এ হেদায়াতে কর্ণপাত করে শুধু তারাই, যারা আল্লাহকে ভয় করে। তারাই এ পথনির্দেশ অনুসরণ করে এবং সে অনুযায়ী জীবন গড়ে। ফলে আল্লাহতায়ালাকে পেয়ে যায় এবং দুনিয়া ও আখেরাতে সাফল্যম-িত হয়। আর যারা আল্লাহকে ভয় করে না, তারা এ মহামূল্যবান হেদায়াতের কদর করে না। ফলে এর কল্যাণলাভ থেকে বঞ্চিত থাকে। অথচ এর উপদেশ ও পথনির্দেশ সবার জন্যই সমান অবারিত। ইরশাদ হয়েছে, এটা তো আর কিছুই নয়, সারা জাহানের জন্য উপদেশবাণী। (সুরা ইউসুফ : ১০৪)

 

অন্যত্র ইরশাদ হয়েছে, এটা মানুষের জন্য হেদায়াত ও সুস্পষ্ট পথনির্দেশ। (সুরা আল-বাকারা : ১৮৫)

 

মানুষের জন্য বলতে বিশেষ কোনো যুগ ও বিশেষ কোনো অঞ্চলের মানুষ নয়; বরং সারা জাহানের সর্বকালের মানুষ। ইরশাদ হয়েছে ‘আমার প্রতি অহিরূপে এই কোরআন নাজিল করা হয়েছে, যাতে এর মাধ্যমে আমি সতর্ক করি তোমাদেরও এবং এমন সমস্ত মানুষকেও, যাদের কাছে এ কোরআন পৌঁছাবে। (সুরা আনআম : ১৯)

 

এ পৌঁছানোর জন্য কোনো স্থান-কালের সীমারেখা নেই। এ উম্মতের প্রতি কঠোর নির্দেশ, তারা যেন কেয়ামত পর্যন্ত সব মানুষের কাছে কোরআন মাজিদের বাণী প্রচার করে। সুতরাং কেয়ামত পর্যন্ত সারা বিশ্বের যেখানেই যে কেউ আল্লাহর অবাধ্যতা করবে, এ কোরআন তাকেই অবাধ্যতার অশুভ পরিণাম সম্পর্কে সতর্ক করে এবং তা থেকে বাঁচার পথ দেখায়। ইরশাদ হয়েছে, 

 

মহিমময় সেই সত্তা, যিনি নিজ বান্দার প্রতি সত্য ও মিথ্যার মধ্যে মীমাংসাকারী এই কিতাব নাজিল করেছেন, যাতে তা বিশ্ববাসীর জন্য হয় সতর্ককারী। (সুরা ফুরকান: ১)

 

সুতরাং সারা জাহানের সমস্ত মানুষের মুক্তি ও সফলতা এই সর্বজনীন হেদায়াতের অনুসরণেই নিহিত। ইরশাদ হয়েছে ‘যেসব লোক তার (শেষ নবীর) প্রতি ইমান আনবে, তাকে সম্মান করবে, তার সহযোগিতা করবে এবং যেই নুর ও জ্যোতি তার সঙ্গে নাজিল করা হয়েছে তার অনুসরণ করবে, শুধু তারাই সফলকাম। (সুরা আরাফ : ১৫৭)

 

 

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন