শুক্রবার (৪ এপ্রিল) ব্যাংককে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বৈঠক পরবর্তী এমন মন্তব্য করেন আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষকরা।
তারা বলছেন, এই বৈঠকের মাধ্যমে দুই দেশের নতুন সম্পর্কের দ্বার উন্মোচন হলো। আর সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ফেরত পাওয়ার বিষয়ে দিল্লির কাছে দ্রুতই কিছু আশা করছেন না তারা।
শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর থেকে ভারত-বাংলাদেশের সম্পর্কের অবস্থা কিছুটা যেন দা-কুমড়ার মতো। যার ভুক্তভোগী দুই দেশেরই নাগরিক। এই সম্পর্কের ফাটল ঠিক করতে কিছুটা আশা জাগায় ইউনূস-মোদি বৈঠক।
আরও পড়ুন: ইউনূস-মোদি বৈঠক নিয়ে যা জানালেন বিক্রম মিশ্রি
ব্যাংককে বৈঠকের টেবিলে কী মুখোমুখি হবেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও প্রধান উপদেষ্টা ড. মোহাম্মদ ইউনুস? গত কয়েকদিন ধরে এই বহুমূল্য প্রশ্নই ঘুরপাক খাচ্ছে কূটনৈতিক আঙিনায়। বৈঠক নিয়ে ঢাকার প্রস্তাবে শুরু থেকেই দোটানায় রেখেছিল ভারত, হ্যাঁ বা না কোনো জবাব মেলেনি দিল্লি থেকে। এরই মধ্যে চীন সফরের সময় ভারতের 'সেভেন সিস্টার্স' বা উত্তরপূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোকে নিয়ে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের করা মন্তব্য যেন আগুনে ঘি ঢালে। অনিশ্চয়তা বাড়িয়ে তোলে বৈঠক নিয়ে।
নানা অনিশ্চয়তার পর অবশেষে বৈঠকের টেবিলে মুখোমুখি মোদি-ইউনূস। শুক্রবার ব্যাংককের সাংগ্রিলা হোটেলে বিমসটেক শীর্ষ সম্মেলনের সাইডলাইনে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করেন দুই দেশের রাষ্ট্র প্রধান। বৈঠকে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রত্যর্পণ, সীমান্ত হত্যা, গঙ্গা চুক্তি নবায়ন এবং তিস্তা নদীর পানিবন্টনসহ দুই দেশের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে বলে জানা গেছে।
আরও পড়ুন: ইউনূস-মোদি বৈঠক নিয়ে বিএনপির কী প্রতিক্রিয়া, জানালেন মির্জা আব্বাস
তবে প্রশ্ন হচ্ছে, চলমান সব ইস্যুকে পাস কাটিয়ে মোদি-ইউনূস বৈঠক দুই দেশের সম্পর্ককে জোরদারে কতটা ভূমিকা রাখবে? কিংবা ৫ আগস্ট পরবর্তী সম্পর্কের কী আদৌও উন্নতি হবে?
বিশ্লেষকরা বলছেন, শুধু একটি রাজনৈতিক দলের ওপর ভিত্তি করে দুই দেশের সম্পর্ক থেমে থাকতে পারে না। এই বৈঠক ভারত-বাংলাদেশের নতুন সম্পর্কের দ্বার উন্মোচন করলো।
তবে, বৈঠকের পর আরো যে বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে সামনে আসছে তা হল শেখ হাসিনার প্রত্যর্পণ। যদিও এই বিষয়ে ভারতের সহযোগিতা পাওয়ার আশা ফিফটি ফিফটি দেখছে বিশ্লেষকরা। তাদের মতে, এ বিষয়ে দ্রুত কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যাবে না দিল্লির কাছ থেকে।
এছাড়াও বাংলাদেশ সংক্রান্ত যেসব অভিযোগগুলো ভারত দেয়ার চেষ্টা করছে সেগুলো অমূলক বলছেন বিশ্লেষকরা।