এসব ঘরে বিপণন দলের ১০ সদস্য ৪ মাস পর্যন্ত আলু রাখতে পারবেন। এতে প্রতি কেজি আলুতে সংরক্ষণ ব্যয় কমবে ১০ টাকা। তবে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই দলের সভাপতিসহ গুটি কয়েক সদস্যের দখলেই থাকছে সরকারি বরাদ্দের এসব ঘর। এছাড়াও কৃষকরা জানান, ঘরে একই সঙ্গে আলু রাখলে রয়েছে নানা বিড়ম্বনাও।
চাষি পর্যায়ে আলু সংরক্ষণে খরচ কমাতে ২০২১ সালে অহিমায়িত আলু সংরক্ষণ মডেল ঘর নির্মাণে একটি প্রকল্প নেয় কৃষি বিপণন অধিদফতর। একেকটি ঘরের আলু ধারণ ক্ষমতা ২৫ থেকে ৩০ মে.টন। নির্মাণ ব্যয় আড়াই লাখ টাকা। ১০ সদস্যের কৃষি বিপণন দল এ ঘরে আলু রাখতে পারবে।
আরও পড়ুন: আলু নিয়ে বিপাকে ফরিদপুরের চাষিরা
রংপুর কৃষি বিপণন অধিদফতরের সহকারী পরিচালক শাকিল আকতার জানান, এতে করে কৃষকদের সংরক্ষণ ব্যয় কমছে কেজিতে ১০ টাকা। মডেল ঘরে সব সদস্যের সমান অংশিদারিত্ব রয়েছে। তবে একজন সভাপতির মাধ্যমে এই কৃষক দল পরিচালিত হয়।
তবে মাঠে ঘুরে দেখা গেল ভিন্ন চিত্র। রংপুরের ৩নং পায়রাবন্দ ইউনিয়নের সদরপুরে অহিমায়িত আলু সংরক্ষণ মডেল ঘরটিতে বিপণন দলের সভাপতি আবুল হাসানাত একাই আলু সংরক্ষণ করে রেখেছেন। তিনি তা স্বীকারও করেন। বলেন, একজনেরই জায়গা হয় না আর অন্যরা কীভাবে রাখবে।
আর রংপুর সিটি করপোরেশনের আজিজুল্ল্যাহ মুন্সিপাড়ার মডেল ঘরে দেখতে গিয়ে কথা হলো বিপণন দলের সভাপতি বেলালের সঙ্গে। তিনি দাবি করলেন এখানে ৩ জনের আলু সংরক্ষিত রয়েছে।
আরও পড়ুন: বাংলাবান্ধা দিয়ে নেপাল গেল আরও ৩১৫ মেট্রিক টন আলু
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, ঘরগুলোতে বিপণন দলের ১০ সদস্যের সমান সুবিধা থাকার কথা থাকলেও এসব ঘর অধিকাংশ ক্ষেত্রে সভাপতিদের দখলে। এমনকি নিজেদের লোকজন দিয়ে দলগঠনের অভিযোগও রয়েছে। এছাড়াও কৃষকরা জানান, সংরক্ষণে রয়েছে নানা বিড়ম্বনা। একসঙ্গে আলু রাখলে সুবিধামতো সময়ে বের করতে সমস্যা হয়। আবার একেক জনের একেক রকম আলু থাকলেও সমস্যা হয়। তবে কৃষকরা বলেন, ঘরগুলো আরও বড় করা প্রয়োজন ছিল।
কৃষিবিদ ড.রোকনুজ্জামান বলেন, এসব প্রকল্প নেয়ার আগে গবেষণা করা দরকার। কৃষকদের কথা বিবেচনায় রেখে প্রকল্পের পিছনে অর্থ ব্যয়ে গুরুত্ব দিতে হবে। তা না হলে এসব প্রকল্প কাজে আসবে না। তবে বিপণন দলের সব সদস্য সমান সুবিধা পাচ্ছেন কিনা তা নজরদারি করা দরকার বলে মনে করেন তিনি।
২০২১ সালে নেয়া এই প্রকল্পটি শেষ হবে চলতি বছরের জুনে। তবে প্রকল্পটি বাড়ানোর পরিকল্পনা রয়েছে বলে জানায় কৃষি বিপণন অধিদপ্তর।