কনটেইনার নিয়ে বেকায়দায় চট্টগ্রাম বন্দর

১ সপ্তাহে আগে
নিলামের অপেক্ষায় থাকা কয়েক হাজার কোটি টাকা মূল্যের পণ্যবোঝাই ৯ হাজারের বেশি কনটেইনার নিয়ে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ তো বটেই; বেকায়দায় আছেন বিদেশি মেইন লাইন অপারেটররাও। এসব কনটেইনার যেমন বন্দরের গুরুত্বপূর্ণ জায়গা দখল করে আছে, তেমনি পণ্য বোঝাই অবস্থায় কনটেইনারগুলো জরাজীর্ণ হয়ে পড়ায় অন্তত সাতশ কোটি টাকা ক্ষতির মুখে পড়েছে শিপিং কোম্পানিগুলো।

চট্টগ্রাম বন্দরের বিভিন্ন ইয়ার্ড এবং শেডে পণ্য বোঝাই অবস্থায় ২ হাজার ৮৩৫টি ২০ ফুট সাইজের এবং ৩ হাজার ৮০৬টি ৪০ ফুট সাইজের এফসিএল কনটেইনার বছরের পর বছর নিলামের অপেক্ষায় পড়ে রয়েছে। এর বাইরে ৭২ হাজার ৪৮৪ প্যাকেজ এলসিএল এবং ৬ হাজার ৭৮৪ প্যাকেজ বাল্ক কার্গো নিলামে বিক্রির জন্য রাখা হয়েছে।

 

নিয়ম অনুযায়ী, আমদানির ৩০ দিনের মধ্যে ছাড় না হওয়ায় নিলামে বিক্রির জন্য বাই পেপার চট্টগ্রাম কাস্টম হাউজের কাছে হস্তান্তর হলেও বিক্রি দূরে থাকুক নানা জটিলতায় নিলামেও তোলা যায়নি। চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সচিব মোহাম্মদ ওমর ফারুক বলেন, নিলামযোগ্য কনটেইনারগুলো দ্রুত ক্লিয়ার করা গেলে দ্রুত নতুন কনটেইনার আনা সম্ভব হবে।

 

আরও পড়ুন: কনটেইনার ও কার্গো হ্যান্ডলিংয়ে চট্টগ্রাম বন্দরের রেকর্ড

 

চট্টগ্রাম বন্দরে বর্তমানে সর্বমোট কনটেইনার রয়েছে ৩৫ হাজারের বেশি। বন্দর কিংবা বেসরকারি অফডকগুলোর কনটেইনার সক্ষমতা যতই থাকুক, তার ৩০ শতাংশ জায়গা খালি রাখতে হয় ক্রেন, ট্রাক, কাভার্ড ভ্যান ও কনটেইনারবাহী লরি চলাচলের জন্য।

 

জাহাজ এবং কনটেইনার পরিচালনার সঙ্গে সম্পৃক্ত মেইন লাইন অপারেটরদের তথ্য মতে, সাধারণ কনটেইনারের প্রতিটির দাম ৫ থেকে ৬ হাজার মার্কিন ডলার হলেও ফলের মতো পচনশীল পণ্য বহনকারী রেফার কনটেইনারের দাম অন্তত ৫০ হাজার মার্কিন ডলার। তবে বছরের পর বছর এসব কনটেইনার বন্দরে পড়ে থাকায় পরবর্তীতে সেগুলো আর ব্যবহার উপযোগী থাকছে না।

 

এমএসসি শিপিং লিমিটেডের হেড অব অপারেশন আজমীর হোসাইন চৌধুরী বলেন, বছরের পর বছর এসব কনটেইনার বন্দরে পড়ে থাকায় এগুলো স্ক্রাব হয়ে যায়। এগুলো আর ব্যবহার করা যায় না। এতে একদিকে যেমন আর্থিক ক্ষতি হচ্ছে, অন্যদিকে বিদেশি প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছে দেশের আমদানি-রফতানি বাণিজ্যের সুনাম ক্ষুণ্ন হচ্ছে।

 

বাংলাদেশ ইনল্যান্ড কনটেইনার ডিপো অ্যাসোসিয়েশনের (বিকডা) মহাসচিব রুহুল আমিন সিকদার বিপ্লব বলেন, কনটেইনার বন্দরে পড়ে থাকলে বন্দরের ক্যাপাসিটি কমে যায়। কারণ সে জায়গায় অন্য কনটেইনার রেখে যে প্রোডাক্টিভিটি পাওয়া যেত, সেটি আর পাওয়া যায় না।

 

এমনিতেই চট্টগ্রাম কাস্টম হাউজের অকশন শেড নানা ভাঙা-চোড়া পণ্য ভরাট হয়ে আছে। এ অবস্থায় স্থান সংকুলান না হওয়ায় এসব কনটেইনার যেমন নিজেদের অকশন শেডে এনে রাখতে পারছে না। আবার আইনি জটিলতায় নিলামেও দেখা দিয়েছে দীর্ঘসূত্রিতা।

 

আরও পড়ুন: অফডকে পণ্য খালাসের সিদ্ধান্তে মুখোমুখি চট্টগ্রাম বন্দর ও বিজিএমইএ

 

চট্টগ্রাম কাস্টম হাউজের উপ কমিশনার মোহাম্মদ সাইদুল ইসলাম বলেন, বন্দর থেকে যে জায়গাটি দিয়েছিল সেটি যথার্থ নয়। স্থান সংকুলান করা সম্ভব হলে কনটেইনার নিজেদের অকশন শেডে এনে রাখা সম্ভব হবে। নিলামও হবে দ্রুত।

 

উল্লেখ্য, আমদানিকৃত পণ্য বোঝাই কনটেইনার প্রথম চারদিন বন্দরে বিনা শুল্কে রাখার সুযোগ থাকলেও পরবর্তীতে ৪ মার্কিন ডলার করে জরিমানা গুনতে হয়। তবে নিলামে চলে যাওয়া কনটেইনার থেকে কোনো রকম শুল্ক পায় না বন্দর কর্তৃপক্ষ।

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন