সরকারের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত, আগামী বছরই এলডিসি বা স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে বের হবে বাংলাদেশ। যদিও গত আগস্টে হাসিনা সরকার পতনের পর এলডিসি থেকে উত্তরণ পিছিয়ে দেয়ার পক্ষে দাবি তুলে ধরে ব্যবসায়ীসহ বিভিন্ন মহল।
এলডিসি গ্র্যাজুয়েশনের জন্য বাংলাদেশ আসলে কতটা প্রস্তুত?
পরপর দুটি ত্রিবার্ষিক মূল্যায়নে শর্ত পূরণ হলেই কেবল কোনো দেশকে এলডিসি থেকে বের হওয়ার চূড়ান্ত সুপারিশ করে জাতিসংঘের কমিটি ফর ডেভেলপমেন্ট পলিসি-সিডিপি। যেখানে মাথাপিছু আয় থাকতে হবে সর্বনিম্ন ১ হাজার ৩০৬ ডলার; ২০১৫ সালেই এই শর্ত পূরণ করেছে বাংলাদেশ।
আরও পড়ুন: এলডিসি উত্তরণ: প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নিতে প্রধান উপদেষ্টার নির্দেশ
মানবসম্পদ সূচকে থাকতে হয় ৬৬ পয়েন্টের বেশি, বাংলাদেশের রয়েছে সাড়ে ৭৭ পয়েন্ট। অর্থনৈতিক ও পরিবেশের ভঙ্গুরতা সূচকে থাকতে হয় ৩২ পয়েন্টের নিচে। বাংলাদেশ রয়েছে ২১ দশমিক ৯ পয়েন্ট। ২০১৮ ও ২০২১ সালে এই তিন সূচকে উত্তীর্ণ হওয়ায় ২০২৪ সালে এলডিসি থেকে বের হওয়ার সুপারিশ করে সিডিপি। কিন্তু করোনার ধাক্কায় তা পিছিয়ে ঠিক করা হয় ২০২৬ সালের ২৪ নভেম্বর।
এলডিসি গ্র্যাজুয়েশনে উজ্জ্বল হবে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি। তবে চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় ব্যবসাবান্ধব পরিবেশ উন্নত করার পরামর্শ দিচ্ছেন অর্থনীতিবিদরা। বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) সাবেক মহাপরিচালক মোস্তফা বে মুজেরি বলেন, রফতানি শিল্পকে সহায়তা দেয়ার অনেক পদ্ধতি রয়েছে। সেগুলো ব্যবহার করতে হবে।
আর গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সম্মানীয় ফেলো ড. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আমাদের তথ্য-উপাত্তের কিছু অংশ অতিরঞ্জিত হলেও এলডিসি উত্তরণের তিন সূচকেই মাপকাঠি পূরণের ওপরে বাংলাদেশ। এলডিসি উত্তরণ না করার কোনো যৌক্তিক কারণ নেই।
আরও পড়ুন: এলডিসি উত্তরণেও বড় সমস্যা দেখছেন না ড. আনিসুজ্জামান চৌধুরী
এদিকে, সুনির্দিষ্ট ও দীর্ঘমেয়াদি কর্মপরিকল্পনা না থাকায় রফতানি বাজারে সংকটে পড়তে পারে বাংলাদেশ- এমন শঙ্কা ব্যবসায়ী নেতাদের। বাংলাদেশ নিটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিকেএমইএ) নির্বাহী সভাপতি ফজলে শামীম এহসান বলেন, বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার আইনের আওতাতেই এটিকে মোকাবেলা করা যায়। তবে এখন পর্যন্ত সরকারের সেরকম কোনো পদক্ষেপ নেই। যারা রফতানির সঙ্গে সরাসরি যুক্ত তাদের টিকিয়ে রাখতে ব্যাংক ঋণ, পলিসি সাপোর্ট দিতে হবে।
সংকট শঙ্কা দূর করতে এসএমই ও ব্যাংক খাতের পুঁজিবাজারকে শক্তিশালী করার পাশাপাশি আমদানি বিকল্প পণ্যের উৎপাদন বাড়ানোর দিকে বিশেষ নজর দেয়ার তাগিদ দিচ্ছেন অর্থনীতিবিদ ও ব্যবসায়ীরা।
]]>