এতিম আরবি শব্দ। এর অর্থ নিঃস্ব ও নিঃসঙ্গ। ইসলামি পরিভাষায়, যে শিশুর পিতা ইন্তেকাল করেছেন, শুধু তাকে এতিম বলা হয়। পিতা উপস্থিত থাকা অবস্থায় মাতাবিহীন শিশুকে ইসলামি পরিভাষায় এতিম বলা হয় না।
কেননা সন্তানের লালনপালন, রক্ষণাবেক্ষণ ও ব্যয়ভার বহনের দায়িত্ব বাবার। তাই শিশুকে তখনই নিঃস্ব ও নিঃসঙ্গ ধরা হবে, যখন বাবা থাকবে না। মার অবর্তমানেও এ দায়িত্বভার বাবার ওপর অর্পিত। তাই মাবিহীন শিশু নিঃস্ব ও নিঃসঙ্গ নয়। আর সন্তান যখন প্রাপ্তবয়স্ক হয়ে যায়, তখন তাকে এতিম বলা হয় না। কেননা সে তখন স্বনির্ভর হয়ে যায়।
এতিম সম্পর্কে ইসলাম শুধু নৈতিক নির্দেশনা দেয়নি; বরং এতিমের প্রশাসনিক ও আইনগত অধিকারের ভিত্তি দাঁড় করিয়েছে।
পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ বলেন,
তারা তোমাকে এতিম সম্পর্কে জিজ্ঞেস করে। বলে দাও, তাদের ইসলাহ তথা সুব্যবস্থা (পুনর্বাসন) করা উত্তম...। (সুরা বাকারা, আয়াত: ২২০)
আরও পড়ুন: বৃষ্টির পানি দিয়ে কি অজু করা যাবে?
কুরাইশরা এতিমদের ওপর জুলুম-নির্যাতন করত। বাবা মারা গেলে চাচা এসে ভাতিজার সমুদয় সম্পদ আত্মসাৎ করে নিজ উদরে হজম করে ফেলত। মহান আল্লাহ বলেন,
তুমি এতিমের প্রতি কঠোর হয়ো না। (সুরা দুহা, আয়াত: ৯)
হজরত সাহল বিন সাদ (রা.) থেকে বর্ণিত আছে, তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
আমি ও এতিম প্রতিপালনকারী জান্নাতে এভাবে থাকব—তিনি তর্জনী ও মধ্যমা অঙুলি দিয়ে ইঙ্গিত করেন। এবং এ দুটির মধ্যে তিনি সামান্য ফাঁক করেন। (বুখারি: ৫৩০৪)
দুটি আঙ্গুল যেমন পাশাপাশি থাকে; তেমন নবীজি সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও এতিমের লালনপালনকারী জান্নাতে পাশাপাশি থাকবেন।
আরও পড়ুন: জাদু থেকে কীভাবে নিজেকে রক্ষা করবেন
এতিমের মর্যাদা সম্পর্কিত প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরও বলেন,
বিধবা-এতিম ও গরিবের সাহায্যকারী ব্যক্তি আল্লাহর পথে মুজাহিদের সমতুল্য। অথবা তার মর্যাদা সেই (নামাজের জন্য) রাত্রি জাগরণকারীর মতো, যে কখনো ক্লান্ত হয় না। অথবা তার মর্যাদা সেই রোজাদারের মতো, যে কখনো ইফতার (রোজা ভঙ্গ) করে না। (মুসলিম: ৫২৯৫)
]]>