নিহতরা হলেন: চাঁদপুর সদর উপজেলার মৈশাদী গ্রামের মো. ইব্রাহীম (৫৫), তার ভাগ্নে মো. মিজান (৩০) ও ফরিদগঞ্জের বালিথুবার মো. মাহফুজ (৩৫)। নিহতরা একে ওপরের আত্মীয়।
পরিবারের সদস্যরা জানান, হবিগঞ্জের বাহুবলে আকিজ ভেঞ্জার নামে একটি কারখানায় প্রায় ৩০ বছর ধরে শ্রমিকের কাজ করতেন মো. ইব্রাহিম খান। সম্প্রতি বাড়ি নির্মাণের কাজ শুরু করেছিলেন। তার স্বপ্ন ছিল শেষ বয়সে অবসর সময় পার করবেন সেখানে। কিন্তু সেই স্বপ্ন অধরা রেখে পরপারে পাড়ি জমিয়েছেন তিনি। গত ৩ দিন আগে কারখানার সিলিন্ডার বিস্ফোরণে অগ্নিদগ্ধ হয়ে হাসপাতালে নিহত হন ইব্রাহিম।
শুধু তিনি নন, এই ঘটনায় নিহত হয়েছে তার আরও দুই নিকট আত্মীয়। তারা হলেন মোহাম্মদ মিজান ও মাহফুজ। এছাড়াও আহত অবস্থায় চিকিৎসাধীন আছে তার বড় ছেলে মোহাম্মদ আল আমিন। কেবলমাত্র সংসারের অনটন মেটাতে এদের সবাইকে কাজে নিয়েছিলেন তিনি।
আরও পড়ুন: একমাত্র সন্তানকে হারিয়ে দিশেহারা সাংবাদিক আলতাফ
এ দিকে, আকিজ ভেঞ্জারের সিলিন্ডার বিস্ফোরণে হতাহতের ঘটনায় পরিবারগুলোর বন্ধ হয়ে গেছে উপার্জনের পথ। তিনজনের মৃত্যু সংবাদে বাকরুদ্ধ তারা। কোম্পানি এবং সরকারের কাছে সহায়তার দাবি তাদের।
নিহত ইব্রাহিম খানের স্ত্রী রুবি বেগম কান্না জড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘পরিবারটা যার মাধ্যমে চলতো। তিনিই এখন নেই। আমার সংসার দেখার মতো আর কেউ নেই। এখন ছেলেদের একটা চাকরির ব্যবস্থা করে দিলে সংসারটা চলবে।’
নিহতের ভাতিজা কাউসার হোসেন বলেন, ‘আত্মীয়তার বন্ধনে পৃথক তিন পরিবারের তিনজন মারা গেছেন। দুজন আহত হয়ে হাসপাতালে এখনো চিকিৎসাধীন। একজন সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও আরেকজন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আছেন। তারাই পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি ছিলেন।’
আরও পড়ুন: জুলাই গণঅভ্যুত্থান: চিকিৎসা খরচ মেটাতেই দিশেহারা ওরা!
তিনি আরও জানান, চাচা ইব্রাহিম দুই বছর ধরে একটি ভবনের কাজ ধরেছেন। দুই মাস আগেও এনজিও থেকে তিন লাখ টাকা ঋণ নেন। এখন তার এক ছেলে গুরুতর আহত। কোম্পানি বা সরকার যদি সহায়তা না করে। তাহলে সবার সংসারের করুণ পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে হবে।
এই বিষয় যোগাযোগ করা হলে চাঁদপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শাখাওয়াত জামিল সৈকত জানান, আমরা জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে পরিবারগুলোর খোঁজ খবর নেয়ার চেষ্টা করছি। সরকারের পক্ষ থেকে পরিবারগুলোকে যতটুকু সম্ভবত সহায়তা দেয়া হবে।