এলাকাবাসী বলেন, ‘এমন কাজ কোনোদিন দেখিনি। ঢালাই করে যাচ্ছে একদিকে, ফেটে যাচ্ছে সঙ্গে সঙ্গে। কোনো ড্রেন নেই। ঠিকাদারের দেখা পাওয়া যায় না। দিনের পর দিন ফেলে রাখা হয়েছে। কারও বাড়ির গাছপালা কাটিয়ে সড়কের বর্ডার বা গাইড লাইন দিচ্ছে। আবার কারও কারও সড়কের ওপরে গাছ বা দেয়াল থাকলেও সরানো হয়নি।’
স্থানীয়রা বলেন, ‘এ সড়ক বছর খানেক টেকে কিনা সন্দেহ। জনগণের টাকার কোনো মূল্য নেই। দীর্ঘসূত্রতার জন্য মানুষ ফুটপাত দিয়েও হাঁটতে পারছে না। রিকশাও আসে না। চরম ভোগান্তি হচ্ছে মানুষের। এর ওপর আসছে বর্ষা মৌসুম।

জানা যায়, ২০২৪ সনের ২২ এপ্রিল কাজের টেন্ডারটি হয়েছিল। জুলাই অভ্যুত্থানের আগে পৌর পরিষদ থাকা অবস্থায় কাজটি ছাত্রলীগের রিগান ও মেয়রের ছেলে জামির হাতে ছিল। তবে ৫ আগস্টের পটপরিবর্তন হলে এটি কয়েক হাত বদল হয়ে জামাল খান নামের ঠিকাদারের হাতে আসে। এদিকে কাগজে কলমে গেল বছরের ২৯ আগস্ট কার্যাদেশ হয় ভাটিবাংলা এন্টারপ্রাইজের ইফতেখার উদ্দিন শাহীন নামের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের নামে। এরপর ছয় মাস মেয়াদে চলতি বছরের ২৮ ফেব্রুয়ারি কাজটি শেষ করারও কথা। কিন্তু কাজের মেয়াদ পেরিয়ে গেলেও ধীরগতির কাজের জন্য স্থানীয়দের দুর্ভোগ বাড়ে। কোনো ঠিকাদারের খোঁজ পাচ্ছে না কেউই। কাজের গতিসীমা এবং মান নিয়ে পৌরসভার প্রশাসক ও নির্বাহী প্রকৌশলী এবং ঠিকাদার সবাই সবার দোষ দেয়।
আরও পড়ুন: পর্যটন শিল্প: রাঙামাটিতে আশা-নিরাশার দোলাচলে উদ্যোক্তারা
আগস্টে কাজের শুরুর কথা থাকলেও নভেম্বরে ঢিলেঢালাভাবে কাজ শুরু হয়ে গেল ৫ মাস ধরে চলমান থাকায় ধূলাবালিতে নাকাল এলাকাবাসী, শিশু, বৃদ্ধসহ বিভিন্ন বয়সের মানুষ। এর মাঝখানে এক মাসের মতো সময় সড়কে কাজই থাকে বন্ধ। বাধ্য হয়ে এলাকাবাসী ফেসবুক লাইভে জনভোগান্তি তুলে ধরায় এবং অপারগ হয়ে ডিসির কাছে অভিযোগ করায় পুনরায় শুরু হয় কাজ। সেই কাজেও মান নিয়ে জনমনে প্রশ্ন ওঠে। ঢালাইয়ের সঙ্গে সঙ্গে ফেটে যায়।
এ বিষয়ে ঠিকাদার জামাল খান বলেন, কাজের মেয়াদ চাইলে ঠিকাদাররা ১০ বছরও নিতে পারে।

তবে ফেটে যাওয়ার ব্যাপারে তিনি বলেন,
এটি পৌরসভার নির্বাহীর তত্ত্বাবধানে রেডিমেক্স (মিক্সার মেশিনে ঢালাই) উনাদের পছন্দের কোম্পানি থেকে করা হচ্ছে। ঠিকাদার শুধু কাজ শেষে শ্রমিকদের মজুরি দেয়।
এদিকে পরে থাকা কাজ একবার নির্বাহী প্রকৌশলী এসে পরিদর্শন করে গেলে কাজ শুরু হয়।
আরও পড়ুন: রাস্তার অভাবে সাত কোটি টাকার ব্রিজ অকেজো
পৌরসভার প্রকৌশলী হুমায়ুন কবীর বলেন, ‘কাজের মেয়াদ বাড়ানো যাবে। কাজের মানও ভালো হচ্ছে আগের থেকে। আমরা রেডিমেক্স দিয়ে দ্রুত করাচ্ছি। আগে কিছু অভিযোগ শুনেছি তাই হাতে করতে দেইনি।’
অন্যদিকে স্থানীয় সরকারের উপপরিচালক পৌর প্রশাসক (ডিডি এলজি) আরিফুল ইসলাম সরর্দার জানান, কাজটি দ্রুত করাতে চেষ্ট চলছে। মানের বিষয়ে তিনি প্রকৌশলীদের সঙ্গে এবং ঠিকাদারের সঙ্গে কথা বলেছেন।
]]>