ঊর্ধ্বজগতের ভ্রমণে কী দেখেছেন নবীজি

৩ সপ্তাহ আগে
মহানবী (সা.) সশরীরে সজ্ঞানে জাগ্রত অবস্থায় জিবরাইল (আ.) ও মিকাইলের (আ.) সঙ্গে বিশেষ বাহন বোরাকের মাধ্যমে মেরাজের রাতে সফর করেন। তিনি মসজিদুল হারাম থেকে মসজিদুল আকসা হয়ে প্রথম আসমানে গমন করেন। এরপর ধারাবাহিকভাবে সপ্তম আসমান ও সিদরাতুল মুনতাহা পর্যন্ত এবং সেখান থেকে একাকী রফরফ বাহনে আরশে আজিম পর্যন্ত ভ্রমণ করে মহান রাব্বুল আলামিনের সঙ্গে সাক্ষাৎ লাভ করেন। পাশাপাশি জান্নাত-জাহান্নাম পরিদর্শন করে পৃথিবীতে ফিরে আসেন।

এ সফরে নবীজিকে জান্নাত-জাহান্নামের ভ্রমণও করানো হয়। নবীজি বলেন, জান্নাতের প্রাসাদগুলো মুক্তার তৈরি আর তার মাটি হলো মেশকের। (বুখারি, হাদিস : ৭৫১৭) নবীজি এ সফরে একদল লোককে দেখলেন, তাদের নখগুলো তামার। 

 

নিজেদের নখ দিয়ে তারা নিজের গাল ও বুকে আঁচড় কাটছে। জিজ্ঞাসা করলেন, জিবরাঈল! এরা কারা? বললেন, এরা ওই সমস্ত লোক, যারা মানুষের গোশত খেত এবং তাদের সম্ভ্রমে আঘাত হানত। অর্থাৎ গীবত করত এবং মানুষকে লাঞ্ছিত করত। (মুসনাদে আহমাদ, হাদিস : ১৩৩৪০; সুনানে আবু দাউদ, হাদিস : ৪৮৭৮)

 

আরও পড়ুন: কেমন জীবনযাপন করতেন খলিফা ওমর (রা.)

 

হযরত ইবরাহীম আ.-এর সাথে দেখা হলে তিনি নবীজিকে বলেন, আপনি আপনার উম্মতের কাছে আমার সালাম পৌঁছাবেন। আর তাদেরকে বলবেন, জান্নাতের মাটি পবিত্র ও সুঘ্রাণযুক্ত, এর পানি সুমিষ্ট আর এর ভূমি উর্বর ও সমতল। আর এর বৃক্ষ হচ্ছে- سُبْحَانَ اللهِ وَالحَمْدُ لِلهِ وَلاَ إِلَهَ إِلاّ اللهُ وَاللهُ أَكْبَر অর্থ: আল্লাহ পবিত্র, সব প্রশংসা আল্লাহর, আল্লাহ ছাড়া কোনো উপাস্য নেই, আল্লাহ মহান। (তিরমিজি, হাদিস : ৩৪৬২)


এ সফরে নবীজি দেখলেন, একদল লোকের ঠোঁট আগুনের কাঁচি দিয়ে কাটা হচ্ছে। জিজ্ঞাসা করলেন, এরা কারা? জিবরাঈল বললেন, এরা বক্তৃতা করত  বটে, কিন্তু নিজেরা আমল করত না। (মুসনাদে আহমাদ, হাদিস : ১২২১১, ১২৮৫৬)


মিরাজ থেকে ফিরে আসার পরের ঘটনা

 

নবীজি সা. মিরাজ থেকে ফিরে হাতিমে কাবায় বসা ছিলেন। মুশরিকরা ইসরা ও মেরাজের ঘটনা শুনে উপহাস ও কটাক্ষ করতে লাগল। বিভিন্নভাবে নবীজির দিকে প্রশ্নের তীর ছুড়তে লাগল। তারা চাইল, বাইতুল মুকাদ্দাসের পূর্ণ বিবরণ শুনবে। 

 

নবীজি এমন প্রশ্নে খুবই বিব্রত হয়ে ওঠেন। নবীজি বলেন, এরকম বিব্রতকর পরিস্থিতিতে আমি আগে পড়িনি। আল্লাহ তাআলা প্রিয় বন্ধুকে সাহায্য করলেন। নবীজির চোখের সামনে মেলে ধরলেন বাইতুল মুকাদ্দাসের দৃশ্য। নবীজি দেখে দেখে তাদের প্রত্যেকটি জিজ্ঞাসার বিস্তারিত জবাব দিলেন। (বুখারি, হাদিস : ৩৮৮৬; মুসলিম, হাদিস : ১৭২)

 

এভাবেই আল্লাহ রাব্বুল আলামিন নবীজিকে  ঊর্ধ্বজগতের ভ্রমণ করালেন। উম্মতকে যেনো পরকালের জীবন সম্পর্কে সতর্ক করতে পারেন, সেজন্য নবীজিকে নিজের চোখে জান্নাতের নাজ নিয়ামত ও জাহান্নামের কঠিন শাস্তি দেখালেন। যেনো তিনি উম্মতের কাছে বিস্তারিত বিবরণ দিতে পারেন। আল্লাহ তাআলা আমাদেরকে আল্লাহর দেয়া বিধান ও নবীজির দেখানো পথে পরিচালিত করুন। আমাদের জীবন কোরআন ও সুন্নাহর নুরে নুরান্বিত হোক। আমিন। 

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন