কৃষক নেতারা জানান, সেচ নির্ভর বোরো মৌসুমে ডিজেল ও সারের দামে সরকারের বাড়তি নজরদারি প্রয়োজন। তবে মাঠ পর্যায়ে কৃষকদের সবধরনের পরামর্শ দেয়ার কথা জানায় কৃষি বিভাগ।
সরেজমিনে রংপুরের গঙাচড়া উপজেলার কৃষক রোকন মিয়ার সঙ্গে কথা হয়। ‘তিনি বলেন, প্রতিবছরের মতো এবারও তিন বিঘা জমিতে বোরো ধানের আবাদ করছি। গেল বছরের তুলনায় এবারে সার, বীজ ও কীটনাশক কিনতে হচ্ছে অতিরিক্ত দামে। কাঙ্ক্ষিত বৃষ্টি না হওয়ায় বেড়েছে সেচের খরচও। ডিজেলের দাম বেশি, একদিন পর পর পানি দেয়া লাগে জমিতে। সার দেয়া লাগতেছে ঘন ঘন। এমনটা হইলে আমরা কি বাঁচবো।’
আরও পড়ুন: বোরো মৌসুমের ধান-চালের সংগ্রহ মূল্য নির্ধারণ
রোকন মিয়ার মতো অন্য কৃষকরাও উৎপাদন খরচ নিয়ে রয়েছেন দুশ্চিন্তায়। তারা বলছেন, প্রতিবছরই বোরো আবাদে খরচ বাড়ছে। তাই ধানের ন্যায্য মূল্য নিশ্চিতে সরকারের সুদৃষ্টি কামনা করেন তারা।
কৃষক কচি মুদ্দিন বলেন, এক ঘণ্টার জায়গায় ৬ ঘণ্টা পানি দিতে হচ্ছে জমিতে। তেলের দাম বেশি, খরচ পড়ছে বেশি; পাশাপাশি সার পাওয়া যাচ্ছে না। সার পাওয়া গেলেও দামটা দিগুণের বেশি। ফলন কমে গেছে আগের চেয়ে অনেক। কারণ একদিন পানি না দিলে হয় না। যদি বেশি করে পানি দেন তাহলে আবার পচন ধরে।’

আরও পড়ুন: হাওড়ের বোরো চাষিদের কপালে দুশ্চিন্তার ভাঁজ
রংপুর কৃষক সংগ্রাম পরিষদের আহ্বায়ক পলাশ কান্তি নাগ বলেন, ‘সেচ নির্ভর বোরো মৌসুমে ডিজেল ও সারের দামে সরকারের বাড়তি নজরদারি প্রয়োজন। নিরবচ্ছিন্ন সেচ কাজ পরিচালনা করা কিংবা বাম্পার উৎপাদনের জন্য এখানে সার, ডিজেল ও কীটনাশকে সরকারের ভর্তুকি দেয়া প্রয়োজন বলে মনে করছি।’
এ বিষয়ে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর রংপুর অঞ্চলের উপ-পরিচালক মো. আফজাল হোসেন বলেন, ‘মাঠ পর্যায়ে বালাইকে দমন করার জন্য প্রয়োজনে কৃষকদের সবধরনের পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। জেলাগুলোতে বোরো আবাদে যেকোনো সমস্যা হলে সহকারী কৃষি কর্মকর্তার মাধ্যমে সহযোগিতা করা হবে। কারও বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ থাকলে সেটা আমলে নিয়ে কঠোর ব্যবস্থা নেবে কর্তৃপক্ষ।’
উল্লেখ্য, চলতি মৌসুমে রংপুর অঞ্চলের পাঁচ জেলায় ৫ লাখ ৯ হাজার ৫৬ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ হয়েছে। এটা গত বছরের থেকে ৯১৯ হেক্টর বেশি।