ইসলাম নারী-পুরুষের মধ্যে ভালোবাসা নিষিদ্ধ করেনি, কিন্তু সেটির সীমা ও শুদ্ধ পথ নির্ধারণ করেছে,যা হলো বৈধ বিবাহ। আল্লাহ তাআলা বলেন,
وَلَا تَقْرَبُوا الزِّنَى إِنَّهُ كَانَ فَاحِشَةً وَسَاءَ سَبِيلًا ব্যভিচারের কাছেও যেয়ো না; নিশ্চয়ই এটি অশ্লীল কাজ এবং মন্দ পথ। (সুরা বানি ইসরিইল:৩২) প্রেমের নামে অনৈতিক সম্পর্ক, দেখা-সাক্ষাৎ, মেসেজে ঘনিষ্ঠতা,সবই শয়তানের ধোঁকা। শয়তান এভাবেই ধীরে ধীরে ঈমান কেড়ে নেয়।
আজকাল দেখা যায়, অনেক হিন্দু ছেলে আমি মুসলমান হবো তোমাকেই বিয়ে করবো ইত্যাদি প্রতিশ্রুতি দিয়ে মুসলিম মেয়েদের প্রেমের জালে ফাঁসায়। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে, কলেজ বা কর্মস্থলে তারা মেয়েদের আবেগকে ব্যবহার করে। কিন্তু যখন সময় আসে, তারা অদৃশ্য হয়ে যায়, কিংবা মেয়েটিকে ধর্ম পরিবর্তনে বাধ্য করে। কেউ লজ্জায় আত্মহত্যা করে, কেউ সমাজে মুখ দেখাতে পারে না, আবার কেউ চিরতরে ঈমান হারায়। এটা কেবল সামাজিক নয়,এটি ঈমান ও ইসলামের ওপর আঘাত।
ইসলাম অমুসলিমের সঙ্গে বিবাহ সম্পর্কে কী বলে
আল্লাহ তাআলা সুস্পষ্টভাবে ঘোষণা করেছেন,
وَلَا تُنكِحُوا الْمُشْرِكِينَ حَتَّى يُؤْمِنُوا তোমরা মুশরিক পুরুষদের সাথে তোমাদের মেয়েদের বিবাহ দিও না, যতক্ষণ না তারা ঈমান আনে। (সুরা বাকারা:২২১) অতএব, কোনো মুসলিম নারীর জন্য হিন্দু বা অমুসলিম পুরুষের সঙ্গে প্রেম করা বা বিবাহ করা হারাম ও ঈমানবিধ্বংসী কাজ।
রসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সল্লাম বলেন,
যে ব্যক্তি কোনো জাতির অনুকরণ করে, সে তাদেরই অন্তর্ভুক্ত। (সুনানু আবি দাউদ: ৪০৩১) অতএব, প্রেমের নামে যদি কোনো মুসলিম মেয়ে অমুসলিমের জীবনধারা, পোশাক বা চিন্তা অনুসরণ করে,তাহলে তা ঈমানের জন্য ভয়াবহ বিপদ।
ইসলাম বলে,প্রকৃত ভালোবাসা হলো সেই ভালোবাসা যা আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য হয়, পাপের পথে নয়। রসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সল্লাম বলেন,
যখন কোনো পুরুষ ও নারী নির্জনে থাকে, তখন তৃতীয়জন হয় শয়তান। (সুনানুত তিরমিজি:২১৭২) সুতরাং, যদি কোনো সম্পর্কের মধ্যে আল্লাহর অবাধ্যতা থাকে,তাহলে সেটি ভালোবাসা নয়, বরং শয়তানের চক্রান্ত।
প্রেম নয়, এটি ঈমান ধ্বংসের ফাঁদ
এখন অনেক ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে,মুসলিম মেয়েকে প্রেমের জালে ফাঁসিয়ে হিন্দু ছেলেরা তার ধর্মীয় চেতনা ধ্বংস করছে। কেউ নামাজ ছেড়ে দিচ্ছে, কেউ পর্দা ত্যাগ করছে, কেউ আবার ইসলাম থেকে দূরে সরে যাচ্ছে। এই প্রক্রিয়াকে অনেক জায়গায় প্রেমের মাধ্যমে ধর্মান্তর বলা হচ্ছে,যা ইসলামি বিরুদ্ধে চক্রান্তের শামিল।
আল্লাহ তাআলা বলেন,
يُرِيدُونَ أَن يُطْفِئُوا نُورَ اللَّهِ بِأَفْوَاهِهِمْ وَاللَّهُ مُتِمُّ نُورِهِ وَلَوْ كَرِهَ الْكَافِرُونَ তারা আল্লাহর নুর নিভিয়ে দিতে চায়, কিন্তু আল্লাহ তার নুর পূর্ণ করবেন, যদিও কাফিররা তা অপছন্দ করে। (সুরাতুস সাফ:৮) অতএব, মুসলিম সমাজের প্রতিটি পরিবারকে এই ফিতনা থেকে বাঁচতে হবে,ঈমানের নুর রক্ষা করতে হবে।
মুসলিম সমাজের করণীয়
১. পরিবারে দ্বীনি শিক্ষা জোরদার করা,বিশেষ করে মেয়েদের ঈমান, হায়া, পর্দা ও আত্মসম্মান শেখানো। ২. সোশ্যাল মিডিয়ার সতর্ক ব্যবহার,অপরিচিত পুরুষের বন্ধুত্বের আহ্বান বা প্রশংসা থেকে দূরে থাকা। ৩. অভিভাবকের নজরদারি,মেয়েদের বন্ধু ও অনলাইন কার্যকলাপ সম্পর্কে সচেতন থাকা। ৪. আলেম সমাজের ভূমিকা,মসজিদ, মাদরাসা ও মাহফিলে এই বিষয়ে আরোচনা ও সচেতনতা সৃষ্টি করা। ৫. নিজেকে আল্লাহভীরু করা,কারণ আল্লাহভীতিই হলো সকল ফিতনা থেকে রক্ষার ঢাল।
হিন্দু ছেলেদের প্রেমের ফাঁদে মুসলিম মেয়েরা,এটি কেবল প্রেম নয়, বরং একটি সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় যুদ্ধ। যে মেয়ে তার ঈমান, লজ্জা ও পরিচয় রক্ষা করে, সে আল্লাহর বিশেষ বান্দাহ। আর যে এই ফাঁদে পড়ে, সে নিজের মর্যাদা ও ঈমান দুটোই হারায়। তাই আমরা আমাদের ঘরে দ্বীন শিক্ষা ফিরিয়ে আনি, মেয়েদের আত্মমর্যাদা জাগ্রত করি, এবং শয়তানের সাজানো প্রেমের ফাঁদ থেকে দূরে রাখি, যাতে আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম ঈমান ও ইসলামের আলোর পথে অটল থাকতে পারে।
]]>

৩ সপ্তাহ আগে
৭







Bengali (BD) ·
English (US) ·