শনিবার (২৫ অক্টোবর) সকাল সাড়ে ৯টা থেকে বিকাল সাড়ে ৩টা পর্যন্ত চলা এই আয়োজন জুড়ে উইটনের চারটি ক্যাম্পাসের এক হাজারেরও বেশি শিক্ষার্থী অংশ নেয়। পুরো ক্যাম্পাসজুড়ে জমে ওঠে এক বর্ণিল শিক্ষামেলা।
এক্সিবিশনে প্রদর্শিত প্রজেক্টগুলো ছিল ইসলামিক স্টাডিজ কারিকুলামের বাস্তব প্রয়োগের এক চমৎকার উদাহরণ।
আর্লি ইয়ারস ক্যাম্পাস: ১-এর শিক্ষার্থীরা “আল্লাহর মহিমান্বিত সৃষ্টিসমূহ”, “পবিত্রতার ধাপ: একটি থ্রিডি ওজু অ্যাডভেঞ্চার” এবং “আমি একজন মুসলিম: আমার বিশ্বাস, আমার পরিচয়” শিরোনামের প্রজেক্টের মাধ্যমে ধর্মীয় ধারণাগুলোকে চিত্র, রঙ ও মডেল দিয়ে উপস্থাপন করে।
অন্যদিকে আর্লি ইয়ারস ক্যাম্পাস: ৩-এর শিক্ষার্থীরা “ইসলামের পাঁচটি স্তম্ভ” ও “ঈদ উদযাপন” প্রজেক্টের মাধ্যমে ইসলামী চর্চাকে আনন্দমুখর ও বোধগম্য করে তোলে।
জুনিয়র স্কুল পর্যায়ে “ইসলামে সুন্দর আচরণ”, “সাওমের আত্মা”, “সালাত”, “হজ্জ” ও “জাকাত”-এর মতো বিষয়গুলোর ওপর বিশ্লেষণমূলক উপস্থাপনা ছিল। এতে শিক্ষার্থীরা ইসলামী নৈতিকতা ও সমাজকল্যাণে ধর্মীয় বিধানের গুরুত্ব তুলে ধরে।
সবচেয়ে আকর্ষণীয় অংশ ছিল সিনিয়র সেকশন–এর প্রজেক্টগুলো। শিক্ষার্থীরা “হজরত মুসা (আ.) ও জাদুকরদের গল্প”, “জমজম কূপের ইতিহাস”, “লুকমান (আ.)-এর হিকমাহ” ও “নবী মুসা (আ.) ও খিজির (আ.)”-এর ঘটনাকে ঐতিহাসিক, চিত্রনাট্য ও বিশ্লেষণধর্মী উপস্থাপনায় জীবন্ত করে তোলে।
পুরো প্রদর্শনী জুড়ে শিক্ষার্থীরা ধর্মীয় জ্ঞানের পাশাপাশি ইসলামিক দর্শন, সমাজবিজ্ঞান ও বিজ্ঞানভিত্তিক দৃষ্টিকোণও বিশ্লেষণ করেছে। ফলে এটি রূপ নেয় এক বহুমাত্রিক জ্ঞানমেলায়।
এই প্রদর্শনীর সার্বিক সমন্বয়ের দায়িত্বে ছিলেন উইটন ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের ভাইস প্রিন্সিপাল সাইদা মীরা তাবাসসুম। তার নেতৃত্বে কাজ করেন ভাইস প্রিন্সিপাল পারভীন কাদর, মোহসিনা নিশাত শারমিন, সাইদা নাঈম, ইনচার্জ শামীমা ইয়াসমিন এবং আল-কুরআন কোঅর্ডিনেটর মুফতি মাসুম বিল্লাহ।
তাদের নেতৃত্বে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা মিলিতভাবে এমন এক শিক্ষণীয় অভিজ্ঞতা তৈরি করেন, যা বেসরকারি শিক্ষাক্ষেত্রে ইসলামিক শিক্ষার প্রয়োগে এক নতুন উদাহরণ স্থাপন করেছে।
প্রধান সমন্বয়ক ও ভাইস প্রিন্সিপাল সাইদা মীরা তাবাসসুম বলেন, “আমরা কৃতজ্ঞ আল্লাহ তাআলার প্রতি, যিনি আমাদের এই মহৎ উদ্যোগ সম্পন্ন করার তৌফিক দিয়েছেন। প্রতিটি প্রজেক্টই আমাদের ইসলামী স্টাডিজ কারিকুলামের ওপর ভিত্তি করে তৈরি, যা প্রণয়ন করেছেন প্রিন্সিপাল ও ম্যানেজিং ডিরেক্টর জনাব আবদুল্লাহ জামান। এই কারিকুলামের টেক্সটবুক থেকেই আমরা সব প্রজেক্ট সাজিয়েছি।”
উইটন ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের ম্যানেজিং ডিরেক্টর ও প্রিন্সিপাল আবদুল্লাহ জামান বলেন, “ইসলামী স্টাডিজ মাত্র একটি ধর্মীয় বিষয় নয়—এটি একটি পূর্ণাঙ্গ জীবন বিধানের অধ্যয়ন। উইটনে আমরা ইসলামকে পড়াই গবেষণাভিত্তিক ও সৃজনশীল উপস্থাপনার মাধ্যমে, যেমনভাবে বিজ্ঞান বা ইংরেজি শেখানো হয়।”
আরও পড়ুন: দেনমোহরের সর্বোচ্চ পরিমাণ কত
তিনি আরও যোগ করেন, “আজকের শিশুরাই আগামী দিনের সমাজ গঠন করবে। যদি আমরা তাদের এমন শিক্ষা দিতে পারি, যেখানে আল্লাহভীতি, মানবতা, নৈতিকতা ও জ্ঞানের প্রতি ভালোবাসা একসঙ্গে বিকশিত হয়, তাহলেই আমরা আলোকিত প্রজন্ম গড়তে পারব।”
একজন অভিভাবক বলেন, “আমাদের সন্তানরা এখন ইসলামিক বিষয়গুলো মুখস্থ করছে না—তারা বুঝে বলছে, বিশ্লেষণ করছে, ভালোবেসে শিখছে। এটা আমাদের জন্য আশার আলো।”
]]>
৩ সপ্তাহ আগে
৮







Bengali (BD) ·
English (US) ·