গাজায় গত ১৪ মাস ধরে ইসরাইলের সামরিক আগ্রাসন ও নির্বিচার হত্যাযজ্ঞ অব্যাহত রয়েছে। সেই সঙ্গে শীতের মধ্যে সম্প্রতি নতুন করে অবরোধ আরোপ করেছে ইসরাইল। গত কয়েক সপ্তাহ ধরে খাদ্য, পানি ও জীবনরক্ষাকারী ওষুধ এমনকি শীত ঠেকাতে প্রয়োজনীয় সামগ্রী কোনো কিছুই প্রবেশ করতে দেয়া হচ্ছে না।
শীত ঠেকাতে প্রয়োজনীয় সামগ্রীর অভাবে প্রচণ্ড দুর্ভোগ পোহাচ্ছে উদ্বাস্তু গাজাবাসী। সবচেয়ে বেশি কষ্ট পাচ্ছে শিশুরা। আল জাজিরার প্রতিবেদন মতে, গত কয়েকদিনে গাজার দক্ষিণ অঞ্চলে আল মাওয়ামি শরণার্থী শিবিরে হাইপোথার্মিয়ায় তিন ফিলিস্তিনি শিশুর মৃত্যু হয়েছে।
গাজার খান ইউনুসের নাসের হাসপাতালের শিশু বিভাগের প্রধান আহমেদ আল ফারা জানিয়েছেন, এই তিন শিশুর একটির বয়স মাত্র তিন দিন। অপর দুটির বয়স যথাক্রমে তিন সপ্তাহ ও এক মাস। তিনি আরও জানান, তারা সুস্বাস্থ্যের অধিকারী ছিল এবং স্বাভাবিকভাবেই জন্মগ্রহণ করেছিল। কিন্তু তাঁবুতে প্রচণ্ড ঠান্ডার কারণে তাদের মৃত্যু হয়েছে।
আরও পড়ুন: জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে ক্ষমতাচ্যুত প্রেসিডেন্ট আসাদের স্ত্রী!
এদিকে গত কয়েকদিন ধরে গাজায় যুদ্ধবিরতির আলোচনা চললেও এতে এখন পর্যন্ত কোনো অগ্রগতির খবর আসেনি। এখনও যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে উপনীত হতে না পারার জন্য একে অপরকে দুষছে ফিলিস্তিনিদের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র সংগঠন হামাস ও দখলদার ইসরাইল।
বুধবার (২৫ ডিসেম্বর) হামাসের পক্ষ থেকে বলা হয়, সেনা প্রত্যাহার, যুদ্ধবিরতি, কারাবন্দি ও বাস্তুচ্যুতদের ফিরে আসা নিয়ে দখলদার ইসরাইল নতুন নতুন শর্ত আরোপ করছে। যার ফলে যে চুক্তিতে আগেই পৌঁছানো সম্ভব ছিল, সেখানে পৌঁছাতে এখন বিলম্ব হচ্ছে।’
অন্যদিকে ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এক বিবৃতিতে বলেন, এরই মধ্যে সমঝোতায় পৌঁছানো সম্ভব হয়েছে-এমন শর্ত থেকে এখন পিছিয়ে যাচ্ছে হামাস। তার কথায়, ‘সন্ত্রাসী সংগঠন হামাস মিথ্যা বলেই যাচ্ছে। আলোচনার মাধ্যমে যে সমঝোতায় ইতিমধ্যে পৌঁছানো গেছে, এখন তারা সেই প্রতিশ্রুতি থেকে পিছিয়ে আসছে এবং আলোচনায় জটিলতা সৃষ্টি করেই যাচ্ছে।’
যুক্তরাষ্ট্র ও মধ্যস্থতাকারী দুই আরব দেশ কাতার ও মিশর সম্প্রতি একটি পর্যায়ক্রমিক চুক্তিতে পৌঁছাতে নিজেদের প্রচেষ্টা জোরদার করে। একটি চুক্তিতে উপনীত হতে যেসব বিষয় নিয়ে জটিলতা তৈরি হয়েছে, তার একটি হচ্ছে ইসরাইলের সেনা মোতায়েন ঘিরে।
আরও পড়ুন: নেতানিয়াহুকে গাজায় যুদ্ধবিরতিতে রাজি হওয়ার আহ্বান ইসরাইলি প্রেসিডেন্টের
ইসরাইলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাৎজ বুধবার গাজার দক্ষিণাঞ্চলে কমান্ডারদের সঙ্গে আলাপকালে বলেন, গাজা উপত্যকার নিয়ন্ত্রণ নিজেদের হাতেই রাখবে ইসরাইল। সেখানে নিরপেক্ষ অঞ্চল (বাফার জোন) তৈরি এবং নিয়ন্ত্রণ পোস্ট বসানো হবে।
]]>