ইরান-ইসরাইল যুদ্ধবিরতির পর একে একে চাঞ্চল্যকর সব তথ্য উঠে আসছে গণমাধ্যমে। এবার আলোচনায় দেশটির শেষ সম্রাটের নির্বাসিত ছেলে রেজা পাহলভি।
২৪ জুন মধ্যপ্রাচ্যের দুই দেশের যুদ্ধবিরতির ঘণ্টা কয়েক আগে, প্যারিসে সংবাদ সম্মেলনে হাজির হন তিনি। এসময় যুক্তরাষ্ট্রকে সতর্ক করে পাহলভি বলেন, ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে কূটনৈতিক আলোচনা আবার শুরু করে তেহরান সরকারকে লাইফলাইন দেয়া উচিত হবে না। কারণ ইরানের ইসলামি প্রজাতন্ত্র ভেঙে পড়ার মুখে।
আরও পড়ুন: তিন সপ্তাহ পর ইরানে ঢুকল আন্তর্জাতিক ফ্লাইট
পাশাপাশি সুযোগ বুঝে সাধারণ ইরানিদের রাস্তায় নামতে এবং সেনাবাহিনী‑নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের পক্ষত্যাগ করতে আহ্বান জানান তিনি। এছাড়া ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনির স্থলে দাঁড়িয়ে -শান্তি ও গণতান্ত্রিক রূপান্তরের পথে ইরানকে নেতৃত্ব দিতে প্রস্তুত বলেও জানান তিনি।
তবে, স্বঘোষিত রাজপুত্রের আহ্বানে তেমন সাড়া দেননি ইরানের জনগণ। বরং, সরকার‑বিরোধীরাসহ বহু ইরানি—বিদেশি আগ্রাসনের মুহূর্তে—জাতীয় পতাকার নিচে ঐক্যবদ্ধ হন। ফলে পাহলভির অভিপ্রায়‑বক্তব্য মাঠে মারা যায়। আর সেখানেই প্রশ্ন ওঠে পাহলভির দূরদর্শিতা নিয়ে। ইসরাইলের বোমাবর্ষণে যখন ৯০০-র বেশি বেসামরিক মানুষ নিহত, তখনও তিনি চুপ। সমালোচকরা বলছেন—এই নীরবতাই তার জনপ্রিয়তা আরও কমিয়ে দিয়েছে।
আরও পড়ুন: ইরানে হামলার পর ইসরাইলি যুদ্ধবিমান থেকে অব্যবহৃত বোমা ফেলা হতো গাজায়!
আগে থেকেই যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরাইলের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা ছিল রেজা পাহলভির। ২০২৩ সালে স্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে গিয়েছিলেন ইসরাইল সফরে। তুলেছিলেন নেতানিয়াহুর সঙ্গে ছবি, প্রার্থনা করেছিলেন পশ্চিম প্রাচীরে।
আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকরাও বলছেন—পাহলভির উপস্থিতি এখন ইসরাইলের যুদ্ধ ন্যায়সিদ্ধ করার -সফ্ট পাওয়ার অস্ত্র । ইরানের মানুষ যেই ব্যবস্থার বিরুদ্ধে সংগ্রাম করছে, পাহলভি হয়তো নিজেই সেই পুরানো ব্যবস্থা ও পশ্চিমা হস্তক্ষেপের প্রতীক হয়ে উঠেছেন। আর সেই কারণেই, ইরানের সরকারবিরোধীরাও পাহলভিকে চাচ্ছেন না।