ইলন মাস্ককে কেন ‘দেশ ছাড়ার’ হুমকি দিচ্ছেন ট্রাম্প?

২ দিন আগে
মার্কিন ধনকুবের ইলন মাস্কের সঙ্গে দেশটির প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রকাশ্য বিরোধ আবার সামনে আসছে। ট্রাম্পের কর বিল সিনেটে পাস হলে নতুন দল গঠনের হুমকি দিয়েছেন ইলন। অন্যদিকে মাস্ককে এবার নিজ জন্মভূমি দক্ষিণ আফ্রিকায় বিতাড়িত করার হুমকি দিলেন ট্রাম্প।

স্থানীয় সময় মঙ্গলবার (১ জুলাই) হোয়াইট হাউসে এক সাংবাদিক ট্রাম্পের কাছে জানতে চান মাস্ককে কি তার জন্মভূমিতে ফেরত পাঠানো হবে? জবাবে ট্রাম্প বলেন, ‘আমি জানি না, বিষয়টা দেখে নিতে হতে পারে।’

 

মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, আমরা হয়তো ইলনের জন্য ডিওজিই প্রয়োগ করতে পারি। আপনারা জানেন ডিওজিই কী? এটি হলো সেই দানব, যে ইলনকে খেয়ে ফেলতে পারে। এটি ভয়ানক হবে না?

 

ট্রাম্প আবারও বলেন, ইলন মাস্কের মালিকানাধীন কোম্পানি মার্কিন সরকারের কাছ থেকে অনেক ভর্তুকি পায়।

 

ডিওজিই বা ডিপার্টমেন্ট অব গভর্নমেন্ট এফিসিয়েন্সি’ হলো সরকারের একটি দফতর, যার নেতৃত্বে আগে ছিলেন ইলন মাস্ক। গত মে মাসের শেষে তিনি পদত্যাগ করেন।

 

আরও পড়ুন: টাই ব্রেকিং ভোটে পাস হলো ট্রাম্পের ‘বিগ বিউটিফুল বিল’

 

ইলন মাস্ক বর্তমানে মার্কিন নাগরিক হলেও তার জন্ম দক্ষিণ আফ্রিকায়। এরপর তিনি কানাডা হয়ে যুক্তরাষ্ট্রে গিয়ে দেশটির নাগরিকত্ব পেয়েছিলেন।

 

সোমবার (৩০ জুন) ইলন মাস্ক প্রথমে হুমকি দেন, যেসব রিপাবলিকান ট্রাম্পের ট্যাক্স ও বাজেট বিলে সমর্থন জানাবেন, তাদের বিরুদ্ধে মিডটার্ম নির্বাচনে কাজ করবেন তিনি।

 

এরপরই ট্রাম্প সামাজিকমাধ্যম ট্রুথে একটি পোস্ট করেন। সেখানে তিনি লেখেন, ‘ইতিহাসে ইলন মাস্ক সম্ভবত সবচেয়ে বেশি ভর্তুকি পায়। ভর্তুকি ছাড়া ইলনকে সম্ভবত তার সব দোকান বন্ধ করে দক্ষিণ আফ্রিকায় ফিরে যেতে হবে।’

 

তিনি আরও লেখেন, ‘(স্পেসএক্সের) আর কোনো রকেট, স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ হবে না। অথবা বৈদুতিক (গাড়ি) উৎপাদন হবে না। আর আমাদের দেশ বিপুল অর্থ বাঁচাতে পারবে। সম্ভবত ডিওইজির এ বিষয়টি কঠোরভাবে দেখা উচিত। বৃহৎ পরিমাণ অর্থ বাঁচবে।’

 

চলতি বছরের ২০ জানুয়ারি দ্বিতীয়বারের মতো প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেয়ার পর ডিওজিই নামে নতুন একটি দফতর চালু করেন ট্রাম্প। এই দফতরের কাজ ছিল সরকারের ব্যয় হ্রাস করা। এটির প্রধানের দায়িত্ব পেয়েছিলেন ইলন মাস্ক। কিন্তু তিনি দায়িত্ব ছেড়ে দেন। এরপর প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের ট্যাক্স ও বাজেট বিলের সমালোচনা শুরু করেন। এরপর থেকেই ট্রাম্প ও ইলন মাস্কের মধ্যে দ্বন্দ্ব শুরু হয়।

 

আরও পড়ুন: গাজায় যুদ্ধবিরতির ‘সম্ভাব্য সময়’ জানালেন ট্রাম্প

 

২০২৪ সালে অনুষ্ঠিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ট্রাম্প ও রিপাবলিকানদের পক্ষে ২৭ কোটি ৫০ লাখ ডলারের বেশি খরচ করেছেন মাস্ক। যদিও মে মাসের শেষ দিকে এক সাক্ষাৎকারে এই ধনকুবের বলেছিলেন, তিনি রাজনৈতিক খাতে খরচ কমিয়ে দেয়ার পরিকল্পনা করছেন।

 

যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল নির্বাচন কমিশনের নথি অনুযায়ী, ইলন মাস্কের রাজনৈতিক কার্যনির্বাহী কমিটি ‘আমেরিকা পিএসি’ সর্বশেষ মার্চ মাসে ফ্লোরিডায় অনুষ্ঠিত দুটি বিশেষ নির্বাচনের জন্য অর্থ দিয়েছে। র‍্যান্ডি ফাইন ও জিমি পেট্রোনিস নামের দুই রিপাবলিকান প্রার্থী ওই অর্থ সহায়তা পেয়েছেন।

 

জুন মাসে ‘বিগ বিল’ ঘিরে ট্রাম্প ও ইলনের মধ্যে প্রকাশ্যে বিরোধ তৈরি হয়। এমনকি এই অযৌক্তিক খরচের বিল পাস হলে ‘আমেরিকা পার্টি’ নামে একটি দল গঠন করা হবে বলেও জানান মাস্ক।  যদিও কয়েক ঘণ্টার অচলাবস্থার পর মঙ্গলবার মার্কিন সিনেটে ডোনাল্ড ট্রাম্পের কর ও ব্যয় সংক্রান্ত মেগা-বিলটি পাস হয়েছে। সিনেটে পাস হওয়ার মধ্য দিয়ে প্রস্তাবিত আইনটি পাসের ক্ষেত্রে অন্যতম প্রধান প্রতিবন্ধকতা দূর হলো। তবে এটি আবার হাউস বা নিম্নকক্ষে ফেরত পাঠানো হবে। এখন মাস্ক কী প্রতিক্রিয়া দেখান সেটাই দেখার বিষয়।
 

 

সূত্র: রয়টার্স, এনডিটিভি

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন