২০০৯ থেকে ২০২৩, এই ১৫ বছরে দেশ থেকে পাচার হয়েছে ২৩ হাজার ৪০০ কোটি ডলার। গ্লোবাল ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টিগ্রিটি রিপোর্টস-জিএফআইআরএস এবং কিছু নির্দিষ্ট পূর্বানুমানের ভিত্তিতে টাকা পাচারের এই হিসাব জানিয়েছিল শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটি।
তবে কীভাবে অর্থ পাচার হয়েছে তা সুনির্দিষ্ট না করলেও এবার তা জানালো বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ব্যাংক ম্যানেজমেন্ট। তাদের এক গবেষণায় জানানো হয়েছে, আমদানির নামে চোখের সামনে মিথ্যা ঘোষণায় সিংহভাগ টাকা পাচার হয়েছে ব্যাংকিং চ্যানেলে। বেশি হয়েছে পোশাক, ভোগ্যপণ্য ও জ্বালানি খাতে। বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর নুরুন নাহার বলেন, ‘অর্থ পাচার যারা করে, তারা অত্যন্ত ধুর্ততার সঙ্গে করে। এটি কেবল গাইডলাইন দিয়ে ধরা যাবে না। এর জন্য কৌশলী হতে হবে।’
আমদানি কার্যক্রমে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পর্যবেক্ষণ ও তদারকির ঘাটতি ছিল উল্লেখ করে ব্যবসায়ীরা বলছেন, সুতা ও গার্মেন্টসের মতো অন্যান্য খাতের লেনদেনও কঠোরতার সঙ্গে যাচাই-বাছাই প্রয়োজন।
আরও পড়ুন: দেশের ব্যাংকিং খাত উদ্ধারে প্রয়োজন ১৮-৩৫ বিলিয়ন ডলার: অর্থ উপদেষ্টা
বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস অ্যাসোসিয়েশনের (বিটিএমএ) সহ-সভাপতি সালেউথ জামান খান বলেন, ‘বাংলাদেশ ব্যাংক যদি তাদের দায়িত্ব অতীতে সঠিকভাবে পালন করতো, তাহলে এতো পরিমাণে মানিলন্ডারিং হতো না। মানিলন্ডারিং কমাতে সুতা ও গার্মেন্টসের মতো অন্যান্য খাতের লেনদেনে সরকারকে আরও নজর দিতে হবে।’
দায় না এড়িয়ে দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা আর পাচারের পথ বন্ধে সন্দেহজনক লেনদেনে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বিশেষ নজরদারি বাড়ানোর তাগিদ অর্থনীতিবিদদের। অর্থনীতিবিদ ড. মাহফুজ কবির বলেন, ‘দেশ থেকে যাতে অবৈধভাবে ডলার বের হয়ে না যায়, সেটি নিশ্চিত করতে হবে। এছাড়া অতীতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক যে ব্যর্থ হয়েছে, সেটি তাদের স্বীকার করা উচিত। পাশাপাশি অর্থপাচারের যে সিস্টেম বা চ্যানেল তৈরি হয়েছে, সেটি বন্ধ করতে হবে। সন্দেহজনক লেনদেনগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। না হলে মানিলন্ডারিং প্রতিহত করা সম্ভব হবে না।’
আমলা ও রাজনীতিবিদসহ, জড়িতদের বিরুদ্ধে দৃশ্যমান ব্যবস্থা নিতে না পারলে দেশের অর্থপাচার সংস্কৃতি বন্ধ করা সম্ভব হবে না বলেও মনে করেন অর্থনীতি বিশ্লেষকরা।
]]>