পাঁচ দিনের দক্ষিণ পূর্ব এশিয়া সফরের অংশ হিসেবে মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) মালয়েশিয়ায় পৌঁছান চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। পরদিন বুধবার (১৬ এপ্রিল) সকালে তিনি মালয়েশিয়ার রাজা সুলতান ইব্রাহিমের সাথে দেখা করেন।
এরপর বিকেলে মালয় প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিমের বাসভবনে পৌঁছালে তাকে অভ্যর্থনা জানানো হয় নানা আয়োজনে। এরপর শুরু হয় দ্বিপাক্ষিক বৈঠক।
বৈঠকে শি জিনপিং বলেন, ঐতিহাসিক সম্পর্ককে ভিত্তি করে গড়ে উঠেছে চীন-মালয়েশিয়ার বন্ধুত্ব। উচ্চপর্যায়ের কৌশলগত ভবিষ্যত অংশীদারিত্ব গড়তে তিনটি প্রস্তাব রাখেন প্রেসিডেন্ট শি। জানান, দুই দেশই আত্মনির্ভরশীলতা ও শক্তির পক্ষে এবং বাইরের হস্তক্ষেপের বিরুদ্ধে।
আরও পড়ুন: টাইম ম্যাগাজিনের ১০০ প্রভাবশালীর তালিকায় ড. ইউনূস
নিজেদের স্বার্থ অনুযায়ী উন্নয়নের পথ অনুসরণ করে যেন সার্বভৌমত্ব ও নিরাপত্তা রক্ষায় একে অন্যকে দৃঢ়ভাবে সহায়তার কথা বলেন তিনি। এছাড়া উন্নয়ন সহযোগিতায় ঐক্য গড়ে উচ্চমানের অংশীদারিত্বের মডেল স্থাপন করা উচিত বলেও মনে করেন চীনা প্রেসিডেন্ট।
বৈঠক শেষে দুই নেতা ৩০টিরও বেশি সহযোগিতা চুক্তি সই করেন। এরপর যৌথ বিবৃতিতে তারা ঘোষণা দেন, চীন ও মালয়েশিয়া এখন কেবল বাণিজ্যিক নয়, কৌশলগতভাবে ভবিষ্যতের পথেও হাঁটবে একসঙ্গে।
চীনা প্রেসিডেন্ট জানান, দুই দেশ মিলে ডিজিটাল, সবুজ ও নীল অর্থনীতির পাশাপাশি এআই প্রযুক্তিতে যৌথভাবে কাজ করবে। মালয়েশিয়ার বন্দরগুলোকে আঞ্চলিক বাণিজ্য হাবে রূপান্তর করাও এই সহযোগিতার লক্ষ্য। জিনপিংয়ের এই সফরের মধ্যদিয়ে চীন-মালয়েশিয়ায দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের নতুন দিগন্ত উন্মোচন হলো বলে মত বিশ্লেষকদের।
আরও পড়ুন: মার্কিন হুমকির মধ্যে ভারতীয়দের ৮৫ হাজার ভিসা দিলো চীন
মালয়েশিয়ার সাবেক রাষ্ট্রদূত বলেন, বর্তমান প্রধানমন্ত্রী আনোয়ারের শাসনে কুয়ালালামপুরের সঙ্গে বেইজিংয়ের সম্পর্কের অনেক উন্নতি হয়েছে। ২০২৪ সালে দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্যের পরিমাণ ছিল প্রায় ২১ হাজার কোটি ডলার।
চীনা গণমাধ্যমের তথ্য মতে, আসিয়ানের চেয়ারম্যানশিপ, উচ্চপ্রযুক্তি কেন্দ্র এবং মুসলিম বিশ্বের প্রভাবশালী কণ্ঠ হিসেবে চীনের দৃষ্টিতে মালয়েশিয়া এখন কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ।
বিশেষজ্ঞদের মতে, চীনের লক্ষ্য বাণিজ্যের উন্নয়নের পাশাপাশি মার্কিন ডলারের বিকল্প ব্যবস্থা তৈরি করা। যুক্তরাষ্ট্রকে ডিঙ্গিয়ে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর চীনের সঙ্গে বন্ধুত্বের বার্তা দিচ্ছে শি জিনপিং এর সফর। মালয়েশিয়ার পর কম্বোডিয়া সফরে যাবেন চীনা প্রেসিডেন্ট।
]]>