আগারগাঁওয়ের ফটোকপি ও দর্জির দোকান যেন ‘মিনি পাসপোর্ট অফিস’!

৪ সপ্তাহ আগে
রাজধানীর আগারগাঁওয়ে পাসপোর্ট অফিসের আশপাশে দর্জি ও ফটোকপির দোকানের আড়ালে গড়ে উঠেছে ‘মিনি-পাসপোর্ট অফিস’। সহজে কাজ করে দেয়ার প্রলোভনে দ্বিগুণ-তিনগুণ অর্থে পাসপোর্ট করিয়ে দিচ্ছে একাধিক চক্র। এজন্য বিভিন্ন সরকারি কর্মকর্তার সিল-স্বাক্ষর নকল করে কাগজপত্র সত্যায়িত করা হচ্ছে।

সম্প্রতি ৮৬টি পাসপোর্টসহ একজনকে গ্রেফতারের পর র‌্যাব জানিয়েছে, চক্রের সঙ্গে পাসপোর্ট অফিসের কেউ জড়িত কিনা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

 

সরেজমিন রাজধানীর তালতলার মহিন উদ্দিন টেইলার্স অ্যান্ড ফেব্রিক্সে গিয়ে দেখা যায়, বাইরে থেকে দর্জির দোকান মনে হলেও এটি ভেতরে ছিল অন্যকিছু। সম্প্রতি র‌্যাবের অভিযানে এখান থেকে মেলে বিপুল পাসপোর্ট ও তৈরির বিভিন্ন কাগজপত্র। যেগুলো থাকার কথা পাসপোর্ট অফিসে সেগুলো সাজানো ছিল দোকানে।

 

স্থানীয়রা জানান, ঘুণাক্ষরেও কেউ টের পায়নি, দোকানের ভেতরে কি চলছে। র‌্যাবের অভিযানের পর বেরিয়ে আসে আসল তথ্য। অনেক পাসপোর্ট উদ্ধার করা হয়।

 

র‌্যাব জানায়, সম্প্রতি অভিযানে দর্জির দোকানটি থেকে উদ্ধার হয় ৮৬টি পাসপোর্ট, অর্ধশতাধিক পাসপোর্ট ডেলিভারি স্লিপ, এনআইডি, পুলিশ ভেরিফিশন সার্টিফিকেটসহ বিভিন্ন আলামত।

 

উদ্ধার করা পাসপোর্টের সূত্র ধরে কয়েকজনের সঙ্গে যোগাযোগ করে সময় সংবাদ। তারা জানান, ঝক্কিঝামেলা ছাড়া দ্রুত পাসপোর্ট পেতে দ্বিগুণ-তিনগুণ অর্থ পরিশোধ করে এখন বিপদে রয়েছেন।

 

আরও পড়ুন: পাসপোর্ট সূচকে বাংলাদেশের অবস্থান নিয়ে বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়ানো হয়েছে: বাংলাফ্যাক্ট

 

এরপর যোগাযোগের চেষ্টা করা হয় কাগজপত্র সত্যায়িত করা প্রথম শ্রেণির কর্মকর্তাদের সঙ্গেও। পঙ্গু হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, সিলে ব্যবহৃত নামের কোনো চিকিৎসকই নেই এখানে। জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞানের চিকিৎসকের সিলটিও ভুয়া।

 

র‌্যাব বলছে, পাসপোর্ট অফিসের আশপাশে দর্জির দোকান, ফটোকপির দোকানসহ বিভিন্ন দোকানের আড়ালে পাসপোর্ট করিয়ে দিচ্ছে চক্রটি। এজন্য জাল সিল ও কাগজপত্র ব্যবহার করছে তারা।

 

র‌্যাব-২ এর পুলিশ সুপার আছাদুজ্জামান বলেন, মালিকের উপস্থিতিতে অফিস তল্লাশি করে বিপুল পরিমাণ কাগজপত্র যেমন শিক্ষা সনদ, জাল পাসপোর্ট, আসল পাসপোর্ট জব্দ করা হয়েছে। অভিযানের সময় কৌশলে একজন পালিয়ে গেছে। কয়েকজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

 

গ্রেফতার মহিন উদ্দিন ও পলাতক মো. লতিফ এই চক্রের হোতা। দীর্ঘদিন ধরেই এ কাজ করে আসছে তারা। চক্রের সঙ্গে পাসপোর্ট অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের যোগসাজশ খুঁজছে র‌্যাব।

 

র‌্যাব-২ এর পুলিশ সুপার আছাদুজ্জামান বলেন, পাসপোর্ট অফিসে যাওয়ার আগেই সেবাগ্রহীতাদের টার্গেট করে বিভিন্ন প্যাকেজের কথা বলে চক্রটি। তারা অফিস খুলে সেবাপ্রত্যাশীদের সঙ্গে প্রতারণা করে আসছে। এ ধরনের অবৈধ কাজের সঙ্গে যারাই জড়িত প্রত্যেকেই আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে।

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন