বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই) বিকেল সাড়ে ৪ টার দিকে মিছিলটি বের করে মহানগর বিএনপি, যুবদল, ছাত্রদল ও জেলা স্বেচ্ছাসেবকদলের নেতারা। এছাড়া বাড়িতে ঢুকে বাড়ি পুড়িয়ে দেয়ারও হুমকি দেয়া হয় বলে বাড়িটির নিরাপত্তাকর্মী জানিয়েছেন।
জানা যায়, শহরের দক্ষিণ ঝিলটুলীস্থ এলাকার সদর উপজেলা ভূমি অফিসের সামনে বিএনপির নেতাকর্মীরা জড়ো হন। পরে মিছিল সহকারে এ কে আজাদের বাসভবনের সামনে গিয়ে বিভিন্ন স্লোগান দেন। কিছু সময় অবস্থান করে মিছিলটি শহরের কাঠপট্টি এলাকায় বিএনপির কার্যালয়ের সামনে গিয়ে শেষ হয়।
এ কে আজাদের বাড়িতে থাকা হা-মীম গ্রুপের ভূমি কর্মকর্তা মো. রাফিজুল খান বলেন, বিএনপির নেতারা গেটে আঘাত করলে সিকিউরিটি গার্ড মেহেদী হাসান এগিয়ে গিয়ে গেট খুলে দেন। ওই সময় ভেতরে মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব গোলাম মোস্তফা, মহানগর যুবদলের সাংগঠনিক সম্পাদক নাহিদুল ইসলাম নাহিদসহ বিএনপির তিন চারজন নেতাকর্মী বাড়িতে ঢুকেন।
আরও পড়ুন: ফরিদপুরে আ.লীগপন্থি অভিযোগে একাংশের বাধায় শ্রমিক ইউনিয়নের সম্মেলন পণ্ড
তিনি আরো বলেন, বাড়ির ভেতরে ঢুকে মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব গোলাম মোস্তফা মিরাজ সিকিউরিটি গার্ডের কাছে জানতে চান, এই বাড়িতে আওয়ামী লীগের কোনো গোপন সভা হচ্ছে কিনা। সিকিউরিটি গার্ডের না বাচক উত্তর শুনে তিনি বাড়ির বাইরে চলে আসেন। চলে আসার সময় মহানগর যুবদলের সাংগঠনিক সম্পাদক নাহিদুল ইসলাম হুমকি দিয়ে বলেন, এরকম কোনো ঘটনা ঘটলে বাসায় আগুন ধরিয়ে পুড়িয়ে দেবো।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, এ কে আজাদের বাসা থেকে বের হয়ে মহানগর বিএনপির নেতাকর্মীরা পাশে ভূমি অফিসের সামনে জড়ো হন। পরে সেখানে প্রায় শতাধিক লোকের সমাগম ঘটে। তারা মিছিল বের করে। মিছিলে স্লোগান দেয়া হয় ‘আওয়ামী লীগের দোসররা হুঁশিয়ার সাবধান’, ‘ফ্যাসিবাদের দোসররা হুঁশিয়ার সাবধান’।
মিছিল শেষে বক্তব্যকালে তারা বলেন, এ কে আজাদের মদদপুষ্ট হয়ে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা পুনরায় দলকে প্রতিষ্ঠিত করার পায়তারা করছেন। তারা বলেন, ফরিদপুর আওয়ামী লীগের দোসরদের পুর্নবাসন করা যাবে না। যদি কেউ আওয়ামী লীগের দোসরদের পুনরায় প্রতিষ্ঠিত করতে চায় তাহলে বিএনপির নেতাকর্মীরা তাদের প্রতিহত করবে।
এ বিষয়ে মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব গোলাম মোস্তফা মিরাজ বলেন, আমরা গোপন সংবাদের মাধ্যমে জানতে পারি বিকালে এ কে আজাদের বাড়িতে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের নিয়ে গোপন মিটিং করা হবে। এমন খবরে তাৎক্ষণিকভাবে একটি মিছিল করি।
জেলা বিএনপির আহ্বায়ক সৈয়দ মোদাররেছ আলী ইছা জানান, তিনি বর্তমানে ঢাকায় অবস্থান করছেন। এ কে আজাদের বাড়িতে কিছু ঘটেছে বলে তার জানা নেই।
ফরিদপুর কোতয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আসাদউজ্জামান বলেন, বিকেল ৪টার দিকে আমি খবর পাই এ কে আজাদের বাড়িতে বিএনপির লোকজন গিয়েছে। এ খবর পাওয়ার পর দ্রুত সেখানে পুলিশ পাঠানো হয়। তবে ঘটনাস্থলে গিয়ে পুলিশ কাউকে পায়নি।
তবে এসব বিষয়ে এ কে আজাদের কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
আরও পড়ুন: ফরিদপুরে কেন্দ্রীয় কৃষকদল নেতার সংবাদ সম্মেলনে হামলার অভিযোগ
প্রসঙ্গত, এ কে আজাদ হা-মীম গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং দৈনিক সমকাল ও চ্যানেল টুয়েন্টি ফোর এর সত্ত্বাধিকারী। তিনি গত কমিটিতে জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ছিলেন। পরের কমিটিতে তাকে জেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা সদস্য করা হয়।
২০২৪ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন না পেয়ে এ কে আজাদ ফরিদপুর-৩ (সদর) আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে ঈগল মার্কা প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে অংশ নেন।
নির্বাচনে অংশ নেওয়ায় এ কে আজাদকে জেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পদ থেকে বহিস্কার করে জেলা আওয়ামী লীগ। ওই নির্বাচনে আওয়ামী লীগ প্রার্থীকে বিপুল ভোটের ব্যবধানে পরাজিত করে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন এ কে আজাদ।
]]>