আওয়ামী লীগের সমর্থক আমলাদের পরিকল্পনায় সচিবালয়ে আগুন: আবু হানিফ

১ সপ্তাহে আগে
জুলাই বিপ্লবকে ব্যাহত করতে আওয়ামী লীগের সমর্থক আমলারা সচিবালয়ে অগ্নিকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত। তাদের পরিকল্পনায় সচিবালয়ে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে বলে দাবি করেছেন বাংলাদেশের যুব অধিকার পরিষদ কেন্দ্রীয় কমিটির উচ্চতর পরিষদের সদস্য ও মিডিয়া সমন্বয়ক মো. আবু হানিফ।

কিশোরগঞ্জে জেলা যুব অধিকার পরিষদের উদ্যোগে শনিবার (২৮ ডিসেম্বর) বিকেল ৪টায় শহরে কালীবাড়ি মোড়ে বিজয় মঞ্চে ‘জুলাই বিপ্লব পরবর্তী তরুণরা কেমন বাংলাদেশ চাই শীর্ষক আলোচনা’ ও নবগঠিত জেলা কমিটির পরিচিতি সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।


তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ গত ১৫ বছর দেশে গুম খুন করেছে। সবশেষ জুলাইয়ে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে গণহত্যা চালিয়েছে। গণহত্যার দায়ে আওয়ামী লীগের বিচার না হওয়া পর্যন্ত তারা বাংলাদেশে রাজনীতি করতে পারবে না।’


মো. আবু হানিফ আরও বলেন, ‘দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি এখনও সরকার স্বাভাবিক করতে পারেনি। আমলারা দেশের সরকারের বিভিন্ন কাজে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে। অন্তর্বর্তী সরকার আমলাদের কাছে জিম্মি রয়েছে। সচিবালয়ে গত কয়েক দিন ধরে আওয়ামী দোসর আমলরা অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছে। তাদের পরিকল্পনায় সচিবালয়ে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। এই ঘটনায় আমলরা জড়িত, সঠিকভাবে তদন্ত করলে সেটা বেড়িয়ে আসবে।’


আরও পড়ুন: শেখ হাসিনা ও তার দোসরদের বাঁচাতেই সচিবালয়ে আগুন: রিজভী


আমলাদের রক্ষা করার জন্য সচিবালয়ে সাংবাদিকদের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘এর মাধ্যমে প্রকৃত অপরাধীদের রক্ষা করা হচ্ছে। সবচেয়ে হাস্যকর যেই অগ্নিকাণ্ডে আমলারা জড়িত, সেই ঘটনার তদন্ত করবে আমলরাই। এই আওয়ামী দোসর আমলরা যেকোনো সময় প্রকাশ্যে বিদ্রোহ করতে পারে।’


বাংলাদেশের যুব অধিকার পরিষদ কেন্দ্রীয় কমিটির উচ্চতর পরিষদের ওই সদস্য বলেন, ‘জুলাই বিপ্লবে ছাত্র জনতা ঐক্যবদ্ধভাবে অংশগ্রহণ করেছে। কিন্তু এখন সেই ঐক্যবদ্ধ ছাত্র জনতার মধ্যে বিভক্তি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। শহীদদের রক্তের সঙ্গে বেইমানি করে একদল কিংস পার্টি খোলা নিয়ে ব্যস্ত। অথচ এখনও আন্দোলনে আহত অনেকেই সঠিক চিকিৎসা পাননি, নিহতদের পরিবারও ক্ষতিপূরণ পায়নি। ৭১ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভূমিকা আর ৭৪ সালের ভূমিকা যেমন এক ছিলো না, তেমনি ৫ আগস্টের আগে আর পরে ছাত্র সমন্বয়কদের ভূমিকা কিন্তু এক নয়।’


বিএনপি গত ১৫ বছর নির্যাতিত নিপীড়িত হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘তাদের অনেক নেতাকর্মী গুম হয়েছেন, নিহত হয়েছেন। স্বৈরাচার হাসিনার বিরুদ্ধে আন্দোলনে তাদের ভূমিকা ছিলো। কিন্তু ৫ আগস্টের পর বিএনপির কিছু নেতাকর্মী যা করছে তা মেনে নেয়ার মত না। তারা ক্ষমতায় আসার আগেই চাঁদাবাজি ও দখলদারি শুরু করেছেন। আওয়ামী লীগের পতন থেকে বিএনপিকে শিক্ষা নেয়া উচিত।’


আরও পড়ুন: সচিবালয়ে আগুনের ঘটনা তদন্তে ৭ সদস্যের কমিটি গঠন


এ সময় আলোচনা সভায় দলের সাধারণ সম্পাদক মাহফুজুর রহমান খান বলেন, ‘আমাদের মনে রাখতে হবে ২৪ পরবর্তী গণঅভ্যুত্থানের অর্জন আমাদের সবার। আবাল বৃদ্ধ বণিতার অংশগ্রহণে ফ্যাসিবাদের পতন ঘটেছে। ৭১ এর মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী চেতনা বাণিজ্য একটি দল নিজের সম্পত্তিতে রূপান্তর করেছিলো, ঠিক একইভাবে এ অভ্যুত্থান পরবর্তী চেতনাকে পুঁজি করে একটি স্বার্থান্বেষী মহল কাজ করছে। আমাদের সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে এ চেতনা বাণিজ্যকারীদের রুখে দিতে হবে।’


বাংলাদেশ যুব অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক নাদিম হাসান বলেন, ‘নির্বাচনের কথা শুনলে শেখ হাসিনার মুখ মলিন হতো, এখন বর্তমান উপদেষ্টাদেরও নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন করলে মুখ মলিন হয়ে যায় এটা ভালো লক্ষণ নয়। আমরা সংস্কার চাই কিন্তু দ্রুত নির্বাচনের মাধ্যমে জন-প্রতিনিধিত্বের সরকারও চাই। আওয়ামী লীগের পরিণতি থেকে নব্য দখলদাররা শিক্ষা নিলে ভালো হবে, নয় তো হাসিনা ও আওয়ামী লীগের পরিণতি বরণ করতে হবে। নতুন নতুন বিপ্লবের দোকান খুলে রাজনীতি দলগুলোকে প্রশ্নের সম্মুখীন করছেন অথচ বিগত ১৬ বছর এদের দেখা মিলে নাই রাজপথে। স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে এই রাজনৈতিক দলগুলোই গুম খুন হামলা মামলা সহ্য করে রাজপথে আন্দোলন সংগ্রাম করে গেছে।’


বাংলাদেশ যুব অধিকার পরিষদের কিশোরগঞ্জ জেলা শাখার সভাপতি সোহাগ মিয়ার সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় সাধারণ সম্পাদক হাসান আহমেদ রমজানের সঞ্চালনায় আরও বক্তব্য রাখেন, গণঅধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় সদস্য অ্যাডভোকেট মোমিন, কিশোরগঞ্জ জেলার আহবায়ক নাসির উদ্দিন লিটন, সদস্য সচিব মোখলেছুর রহমান উজ্জ্বল, যুব অধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক সুমন তালুকদার, শ্রমিক অধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় যুগ্ম সাধারণ আল ইমরান, জেলা গণঅধিকার পরিষদের নেতা, অভি চৌধুরী, শফিকুল ইসলাম, মোহসিন, যুব নেতা শরিফুল ইসলাম, কোখা সিদ্দিক, ছাত্র নেতা রিপন রাজ, ইমরান, নারী নেত্রী মোশফিকা বৃষ্টি প্রমুখ।
 

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন