‘আ.লীগ ফিরে আসবে’, বলার অভিযোগে ইউএনওকে প্রত্যাহারের নির্দেশ

৩ সপ্তাহ আগে
‘আওয়ামী লীগ ফিরে আসবে’- ফরিদপুরের সদরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আল মামুনের বিরুদ্ধে এমন মন্তব্য করার অভিযোগ তুলেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা। আর সেই অভিযোগ আমলে নিয়ে তাকে প্রত্যাহারের নির্দেশ দিয়েছেন জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব।

বুধবার (১১ ডিসেম্বর) দুপুরে ফরিদপুরে জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের মতবিনিময়কালে এ অভিযোগ তুলে ধরেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের এক নেতা।


এমন অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে তাৎক্ষণিক ওই নির্বাহী কর্মকর্তাকে আজকের (১১ ডিসেম্বর) মধ্যে প্রত্যাহার করার জন্য জেলা প্রশাসককে নির্দেশ দেন জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. মো. মোখলেস উর রহমান। এছাড়া আগামীকালের (১২ ডিসেম্বর) মধ্যে তার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও উল্লেখ করেন তিনি। তবে ‘আ.লীগ ফিরে আসবে’ এমন কোনো মন্তব্য করেননি বলে জানিয়েছেন ইউএনও আল মামুন।

আরও পড়ুন: ইউএনও প্রত্যাহারের দাবিতে উত্তাল বীরগঞ্জ, সড়ক অবরোধ


এ দিন দুপুরে ফরিদপুর জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তি, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রতিনিধি এবং জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের সদস্যদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন প্রধান আব্দুল মুয়ীদ চৌধুরী।


মতবিনিময়ের এক পর্যায়ে বক্তব্য রাখেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রতিনিধি আনিসুর রহমান সজল। 
এ সময় তিনি বলেন, সম্প্রতি সদরপুরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শহীদদের স্মরণে স্মরণসভা অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে প্রধান অতিথি ছিলেন ইউএনও আল মামুন। ওই অনুষ্ঠানে আমি বক্তব্য রাখি। সেখানে দিল্লি না ঢাকার প্রশ্নে বলা হয়েছিল, দিল্লির কোনো প্রেসক্রিপশনে বাংলাদেশ চলবে না। এরপরে ওই ইউএনও আমাকে ডেকে নিয়ে কথা বলেন। সে সময় তিনি তার অঙ্গভঙ্গিতে এবং আমাদেরকে ছলে কৌশলে বলার চেষ্টা করে, আওয়ামী লীগ উইল বি কাম ব্যাক, টুডে অর টুমোরো (আওয়ামী লীগ ফিরে আসবে, আজ অথবা আগামীকাল)।

এ কথা তোলার সঙ্গে সঙ্গে কথা বলা শুরু করেন জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. মোখলেস উর রহমান। তিনি তাৎক্ষণিকভাবে ওই ইউএনওকে প্রত্যাহারের জন্য জেলা প্রশাসক মো. কামরুল হাসান মোল্লাকে নির্দেশ দেন।


তিনি ওই শিক্ষার্থীর উদ্দেশে করে বলেন, ‘আপনার সঙ্গে আমি একমত। যারা আমার সাথে একমত হবে না তাহলে আমি চলে যাব।’


তিনি বলেন, ‘আজকের মধ্যে এই ইউএনও উইথড্র (প্রত্যাহার) হবে এবং আমি আগামীকাল মন্ত্রণালয়ে ফিরে গিয়ে তাকে সাসপেনশন করব। আমি পাবলিক্যালি বলে গেলাম, এত দুঃসাহস? এখনও যারা পরিবর্ধিত সরকারের পেছনে ইন্ধন যোগাচ্ছে। যদি কোনো পুরুষ বা কোনো পদ-পদবীধারী কেউ এদের পৃষ্ঠপোষকতা করে গোপনে আমাদেরকে সংবাদ দেবেন।’

আরও পড়ুন: আমরা বালুমহাল ইজারা দেই না, এটা দেয় ডিসি-ইউএনও: সাখাওয়াত হোসেন


এ সময় ওই শিক্ষার্থীর অভিযোগের ভিত্তিতে সচিবের সিদ্ধান্তের সঙ্গে একমত পোষণ করেন সংস্কার কমিশন প্রধান আব্দুল মুয়ীদ চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘ইউএনও’র বিষয়ে আজই সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।’


এ বিষয়ে জানতে চাইলে সদরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আল মামুন বলেন, ‘আমি এমন কোনো কথাই বলিনি। ওনাদের সঙ্গে যখন কথা বলি তখন বিএনপি, জামায়াতের নেতারাও উপস্থিত ছিল। ওই ধরনের কথা বলা হয়নি।'


এ বিষয়ে জানতে রাতে ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক কামরুল হাসান মোল্লার মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন