প্রায় এক দশক ক্ষমতায় থাকার পর জনপ্রিয়তা হারানো কনজারভেটিভ সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করে ২০২২ সালের মে মাসে ক্ষমতা গ্রহণ করে আলবানিজের মধ্য-বামপন্থি লেবার পার্টি। আলবানিজের সরকারকে ঘিরে প্রত্যাশা ও উৎসাহ থাকলেও সাম্প্রতিক মাসগুলোতে জনপ্রিয়তা হারাতে শুরু করে দলটি।
তিন বছর মেয়াদের শেষ পর্যায়ে এসে আলবানিজের সরকারের ভবিষ্যত নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। এমন অবস্থায় নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করলেন আলবানিজ। এবারের নির্বাচনে ক্ষমতাসীনদের সঙ্গে বিরোধীদে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
জনমত জরিপে প্রধান দুই দলের মধ্যে সামান্য ব্যবধানের পূর্বাভাস দেয়া হয়েছে। নির্বাচনের পর পর সরকার গঠনের জন্য জয়ী দলকে স্বতন্ত্র এমপি বা ছোট দলগুলোর সঙ্গে জোট গড়তে হতে পারে। সংখ্যাগরিষ্ঠতার জন্য যে কোনো দলের ১৫০টি আসনের মধ্যে অন্তত ৭৬টি আসনে জয়ী হতে হবে।
আরও পড়ুন: নিউজিল্যান্ডে ৬ দশমিক ৭ মাত্রার ভূমিকম্প, সুনামি সতর্কতা নেই
এবারের নির্বাচনে জলবায়ু সংক্রান্ত উদ্যোগ, পরমাণু শক্তি ও আবাসন খাতের পরিস্থিতি ভোটারদের ওপর গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলবে বলে মনে করা হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী আলবানিজ তার প্রচারণায় জলবায়ু সংকটের ওপর জোর দিচ্ছেন।
শুক্রবার এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘গত কয়েক বছরে বিশ্ব পরিস্থিতি বারবার অস্ট্রেলিয়াকে অনিশ্চিত সময়ের দিকে ঠেলে দিয়েছে। তবে দেশের জনগণের শক্তি ও সহনশীলতার কারণে অস্ট্রেলিয়া এসব বাধা পেরিয়ে এসেছে। এখন ৩ মে আপনারা এগিয়ে যাওয়ার পথ বেছে নেবেন।
আলবানিজ বলেন, তিনি ‘জন্ম থেকেই’ জলবায়ু পরিবর্তনের চ্যালেঞ্জ ও মূল্যস্ফীতির দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব মোকাবিলার জন্য প্রস্তুত ছিলেন। নির্বাচনী প্রচারণায় কোনো বিদেশি শক্তির নাক গলানোর বিরুদ্ধে হুশিয়ারি দিয়ে বলেন, '(আপনারা) দূরে থাকুন।’
কয়লা-খননের দিক দিয়ে বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় দেশ অস্ট্রেলিয়ার নির্বাচনের দুই প্রধান প্রার্থী জলবায়ু পরিবর্তন ও কার্বন নিঃসরণ কমানোর বিষয়ে পুরোপুরি বিপরীতধর্মী অবস্থান বজায় রাখেন।
আরও পড়ুন: আর্থ আওয়ার: এক ঘণ্টার জন্য অন্ধকারে বিশ্ব
আলবানিজের সরকার কার্বন নিঃসরণ কমানোর বৈশ্বিক উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছে। তারা এমন এক ভবিষ্যতের বিষয়ে হুশিয়ারি দিয়েছে, যেখানে খনিজ লোহা ও দূষণ সৃষ্টিকারী কয়লা রপ্তানির ওপর দেশটির অর্থনীতি আর নির্ভর করতে পারবে না।
তার নির্বাচনী প্রচারণার মূল সুর ‘অস্ট্রেলিয়ার ভবিষ্যত নির্মাণ’। এর মধ্যে টেকসই জ্বালানি ও সবুজ উৎপাদনে বড় আকারে প্রণোদনার নীতি অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
অপরদিকে বিরোধী দলীয় নেতা কট্টরপন্থি সাবেক গোয়েন্দা পিটার অভিবাসনে কাটছাঁট ও পরমাণু শক্তির ওপর আরোপ করা নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করতে আগ্রহী। ডাটনের প্রচারণা ‘অস্ট্রেলিয়াকে উন্নয়নের পথে ফিরিয়ে আনা’।
বিরোধী জোটের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ নীতি হলো ২০০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের প্রকল্পের মাধ্যমে সাতটি বাণিজ্যিক পারমাণবিক চুল্লি নির্মাণ। তিনি টেকসই জ্বালানির উৎস খোঁজার বিষয়টিকে একেবারেই পাত্তা দেন না।
আরও পড়ুন: রাতভর বৃষ্টিতে নিয়ন্ত্রণে দক্ষিণ কোরিয়ার দাবানল
পাশাপাশি তিনি ২৫ শতাংশ অভিবাসন কমানো ও অস্ট্রেলিয়ায় পড়তে আসা শিক্ষার্থীদের জন্য আরও 'কঠোর' নীতি প্রণয়নের কথা জানিয়েছেন।
তথ্যসূত্র: বিবিসি