রক্তাক্ত জুলাইয়ের ৩৬তম দিনে আকস্মিক এক নাটকীয়তার মুখোমুখি দাঁড়াতে হয় কর্মজীবী মা হামিদা বানুকে। পৃথিবীর আলো দেখার ক’মাস পর থেকেই বাবার আদর বঞ্চিত অন্তর। সংসারের খরচ যোগাতে সারাদিন পরিশ্রম করতে হতো মাকে। তাই শিশু থেকে কিশোর হয়ে ওঠা অন্তরের বেশির ভাগ সময় কেটেছে নানি বাড়ির আদরে।
৫ আগস্ট স্বৈরাচার সরকার পতনের পর যাত্রাবাড়ী থানার সামনে পুলিশের এলোপাতাড়ি গুলিবর্ষণের সময় একটা বুলেট এফোঁড়-ওফোঁড় করে দেয় দুরন্ত অন্তরের বুক। ভ্যানে করে বহন করা লাশের স্তূপে সবার ওপরে ছিল তার নিথর দেহ।
আরও পড়ুন: গৌরবের ৩৬ জুলাই / বিপ্লবের ঝড়ে সেদিন লন্ডভন্ড হয় স্বৈরাচারী হাসিনার মসনদ
স্বৈরাচারের টিকে থাকার শেষ মরণ কামড়ে সেদিন সারা দেশে শহীদ হন আনাস, শ্রাবণ, নাফিজের মতো শতাধিক। কেবল যাত্রাবাড়ীতেই ৫২ জনের প্রাণ কেড়ে নেয় নির্দয় শাসকের নেকড়ে হয়ে ওঠা তৎকালীন পুলিশ বাহিনী। কেবল নিজ সন্তানের নয়; সব হত্যাকাণ্ডের বিচার জীবদ্দশায় দেখে যাওয়ার আকুতি এই শহীদ জননীর।
হামিদা বানু বলেন, ‘আমার ছেলে পিলারের পেছনে গিয়ে লুকিয়েছিল। সেখান থেকে তাকে বের করে গুলি করা হয়। অনেকে শহীদ হয়েছে। তাই শুধু আমার ছেলে নয়, যতজন শহীদ হয়েছে--সব শহীদের বিচার চাই।’
আরও পড়ুন: জুলাইয়ের অর্জিত বিজয় ছিল মুক্ত পাখির মতো বাঁধভাঙা উচ্ছ্বাসের
সরকারি গেজেট অনুযায়ী, বর্তমানে জুলাই শহীদ হিসেবে ৮৩৬ জনকে স্বীকৃতি দিয়েছে সরকার। তবে এক বছরেও চূড়ান্ত হয়নি যাচাই-বাছাই, যা নিয়ে তীব্র আক্ষেপ শহীদ পরিবারের।
]]>