৩০৮ কিলোমিটার অরক্ষিত নদী পাড়, বর্ষার আগেই সর্বনাশের ভয়

৩ সপ্তাহ আগে
বর্ষা ঘনিয়ে আসায় ভাঙন আতঙ্কে দিন কাটছে কুড়িগ্রামের ওপর দিয়ে প্রবাহিত ব্রহ্মপুত্র, ধরলা, তিস্তা, দুধকুমার ও গঙ্গাধর পাড়ের লাখ লাখ বাসিন্দার। এরই মধ্যে বৈশাখের সামান্য বৃষ্টিতে নদ-নদীর পানি কিছুটা বৃদ্ধি পাওয়ায় কোথাও কোথাও শুরু হয়েছে ভাঙন। আবার কোথাও নিজেদের ঘর-বাড়ি ও ফসলি জমি রক্ষায় প্রতিরোধ গড়ে তোলার চেষ্টা গ্রামবাসীর। এদিকে ভাঙন মোকাবিলায় প্রস্তুতির কথা জানিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড।

সরেজমিনে দেখা যায়, বালু ভর্তি জিও ব্যাগ ঘাড়ে বহন করে নদী পাড়ের সম্ভাব্য ভাঙন প্রবণ এলাকায় ফেলছেন স্থানীয়রা। তাদের চেষ্টা আসন্ন বর্ষায় ঘর-বাড়ি ও ফসলি জমি রক্ষার। এ দৃশ্য কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলার বুড়াবুড়ি ইউনিয়নের ছয়ানীপাড়া গ্রামের ধরলা পাড়ের।

 

পানি উন্নয়ন বোর্ড জানায়, কুড়িগ্রামের ওপর দিয়ে প্রবাহিত ভাঙন প্রবণ প্রধান ৫টি নদ-নদী ব্রহ্মপুত্র, ধরলা, তিস্তা, দুধকুমার ও গঙ্গাধরের দুই পাড়ের দৈর্ঘ্য ৩৭৪ কিলোমিটার। এরমধ্যে এসব নদ-নদীর ৬৬ কিলোমিটার পাড়ে স্থায়ী তীররক্ষা কাজ হলেও অরক্ষিত রয়েছে ৩০৮ কিলোমিটার পাড়। প্রতি বছর বর্ষা মৌসুমে অরক্ষিত এলাকার প্রায় ৫ সহস্রাধিক ঘর-বাড়ি ও হাজার হাজার হেক্টর ফসলি জমি ভাঙনে বিলীন হয়। ফলে বর্ষা এলেই সব হারানোর আতঙ্ক বাড়ে বাসিন্দাদের।

 

আরও পড়ুন: কুড়িগ্রামে ৫০টি পয়েন্টে নদ-নদীর ভাঙন, নিঃস্ব ৫ শতাধিক পরিবার

 

কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলার বুড়াবুড়ি ইউনিয়নের ফকির মোহাম্মদ ছয়ানী পাড়া গ্রামের আব্বাস আলী বলেন, বার বার উপজেলা প্রশাসন ও পানি উন্নয়ন বোর্ডে যোগাযোগ করেছি। কিন্তু সমাধান না পেয়ে আমরা গ্রামবাসী নিজেরাই বালুর বস্তা ফেলছি। যদি ঘর-বাড়ি রক্ষা হয় সেই আশায় চেষ্টা করছি।

 

বার বার স্থানীয় প্রশাসন ও সংশ্লিষ্ট দফতরে যোগাযোগ করেও কোনো সাড়া না মেলায় নিজেদের সম্পদ রক্ষায় সাধ্যমতো ভাঙনে প্রতিরোধ গড়ে তোলার চেষ্টা অনেক গ্রামবাসীর। কুড়িগ্রামের উলিপুর ইউনিয়নের বেগমগঞ্জ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান বাবলু মিয়া জানান, এই ইউনিয়নটি তিন দিক থেকে ব্রহ্মপুত্র, ধরলা ও দুধকুমার নদীর ভাঙ্গনের হুমকিতে রয়েছে। যদি দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া না হয় তাহলে মানচিত্র থেকে ইউনিয়নটি হারিয়ে যাবে।

 

এদিকে নদ-নদীর ভাঙন প্রবণতার কথা স্বীকার করে বর্ষায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার কথা জানিয়েছেন পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রাকিবুল হাসান। তিনি বলেন, ভাঙন রোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

 

এ জেলার ওপর দিয়ে প্রবাহিত ১৬টি নদ-নদীর মধ্যে ভাঙন প্রবণ ব্রহ্মপুত্র, ধরলা, তিস্তা, দুধকুমার ও গঙ্গাধরের দৈর্ঘ্য ১৮৭ কিলোমিটার।

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন