২০০৭ সালে কানাডায় আয়োজিত বিশ্বকাপে শেষবার শিরোপা জিতেছিল আর্জেন্টিনা। দিয়েগো প্লাসেন্তের অধীনে এবারের তরুণ দলটি ১৮ বছরের এই শিরোপা খরা কাটাতে চাইছে। তবে প্রশ্ন আসে—সেই শেষবারের চ্যাম্পিয়ন দলের খেলোয়াড়দের এখন কী অবস্থা?
হুগো টোকালির অধীনে সেই আর্জেন্টিনা দলটিতে ছিলেন বেশ কয়েকজন প্রতিশ্রুতিশীল তরুণ, যারা পরে ইউরোপীয় ফুটবলে উজ্জ্বল নক্ষত্রে পরিণত হন। এমনকি ২০২২ সালে কাতারে আর্জেন্টিনা জাতীয় দলের ৩৬ বছরের বিশ্বকাপ খরা কাটাতেও রেখেছেন গুরুত্বপূর্ণ অবদান। তাদের মধ্যে সবচেয়ে বড় নাম অ্যানহেল ডি মারিয়া।
বর্তমানে দেশটির ক্লাব রোসারিও সেন্ট্রালের হয়ে খেলা ডি মারিয়া এক সময় ইউরোপের সেরা ক্লাবগুলো–রিয়াল মাদ্রিদ, ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড, পিএসজিসহ একাধিক ক্লাবে সাফল্যের সঙ্গে খেলেছেন। জাতীয় দলের হয়েও তিনি কিংবদন্তিতে পরিণত হয়েছেন। ব্রাজিলের বিপক্ষে ২০২১ এর কোপা আমেরিকার ফাইনাল ও ফ্রান্সের বিপক্ষে বিশ্বকাপ ফাইনালে গোল করে ইতিহাস গড়েছেন তিনি।
আরও পড়ুন: ৪০০ গোল পূর্ণ করে কেন বললেন–আরও আসছে
ডি মারিয়ার পাশাপাশি সেই দলের আরেক সদস্য যিনি কাতার বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনার তৃতীয় শিরোপা জয়ের অংশ ছিলেন, তিনি হলেন আলেহান্দ্রো 'পাপু' গোমেজ। তবে ২০২২ সালের নভেম্বরে উয়েফা'র এক নিয়মিত ডোপ টেস্টে নিষিদ্ধ পদার্থ গ্রহণের দায়ে অভিযুক্ত হলে তাকে দুই বছরের জন্য নিষিদ্ধ করা হয়। তিনি বিষয়টি লিওনেল স্কালোনি ও কোচিং স্টাফের কাছ থেকে গোপন রেখেছিলেন, যা ফাইনালের দুই দিন আগে প্রকাশ পায়। বর্তমানে ৩৭ বছর বয়সী গোমেজ ইতালির সেরি বি'র ক্লাব ক্যালসিও পাদোভায় খেলছেন।
২০০৭ সালে অনূর্ধ্ব-২০ বিশ্বকাপজয়ী ডি মারিয়া পরে জাতীয় দলের হয়েও বিশ্বকাপ জিতেছেন। ছবি: এক্স
সেই ২০০৭ সালের দলের সবচেয়ে বড় তারকা ছিলেন সার্জিও 'কুন' আগুয়েরো। তিনি শুধু দুর্দান্ত পারফরম্যান্সই দেখাননি, বরং ছয় গোল করে টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ গোলদাতাও হয়েছিলেন। আর্জেন্টিনা সেই ফাইনালে চেক প্রজাতন্ত্রকে ২-১ গোলে হারিয়ে দুই বছর আগে নেদারল্যান্ডসে জেতা শিরোপা ধরে রাখে। তবে আগুয়েরোর ক্যারিয়ার ২০২১ সালে হঠাৎই থেমে যায়। বার্সেলোনার হয়ে খেলার সময় তার হৃদযন্ত্রের অনিয়মিত স্পন্দন (অ্যারিদমিয়া) ধরা পড়ে। বর্তমানে তিনি স্ট্রিমার হিসেবে কাজ করছেন এবং ই-স্পোর্টস দল 'কেআরইউ ইস্পোর্টস' ও 'কুনিস্পোর্টস'র সিইও হিসেবে। দ্বিতীয় দলটি নিয়মিত কিংস লিগে অংশ নেয়।
আরও পড়ুন: প্রথমবারের মতো এমএলএসের গোল্ডেন বুট জিতলেন মেসি
ম্যানচেস্টার সিটির এই সাবেক ফরোয়ার্ডের মতো ২০০৭ সালের সেই শিরোপাজয়ী দলের অর্ধেকেরও বেশি খেলোয়াড় ইতিমধ্যে অবসরে গেছেন। তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য নাম ফেদেরিকো ফাজিও (২০০৮ বেইজিং অলিম্পিকে সোনা জয়ী ও ২০১৮ বিশ্বকাপজয়ী দলের খেলোয়াড়), পাবলো পিয়াত্তি (এস্তুদিয়ান্তেসের হয়ে চারটি শিরোপা জেতা) এবং মৌরো জারাতে (যিনি ইউরোপ, ভেলেজ ও বোকা জুনিয়র্সে উজ্জ্বল ক্যারিয়ার কাটিয়েছেন)।
অন্যদিকে, সেই দলে থাকা প্রায় ৪৮ শতাংশ খেলোয়াড় এখনও পেশাদার ফুটবল খেলছেন। তাদের মধ্যে আছেন লানুসের আইকন লাউতারো আকোস্তা, নিউওয়েলস ওল্ড বয়েজের অধিনায়ক ও তারকা এভার বানেগা এবং জাতীয় দলের সাবেক গোলরক্ষক সার্জিও রোমেরো—যিনি বোকা জুনিয়র্স ছেড়ে সম্প্রতি আর্জেন্টিনোস জুনিয়র্সে যোগ দিয়েছেন।
২০০৭ অনূর্ধ্ব-২০ বিশ্বকাপজয়ী দলে যারা ছিল: সার্জিও রোমেরো, হাভিয়ের গার্সিয়া, ব্রুনো সেন্তেনো, ফেদেরিকো ফাজিও, এমিলিয়ানো ইনসুয়া, গ্যাব্রিয়েল মেরকাদো, মাতিয়াস কাহাইস, মাতিয়াস সানচেজ, হেরমান ভবোরিল, লিওনার্দো সিগালি, ক্লাউদিও ইয়াকোব, এভার বানেগা, দামিয়ান এস্কুদেরো, আলেহান্দ্রো ক্যাব্রাল, আলেহান্দ্রো 'পাপু' গোমেজ, মাক্সিমিলিয়ানো মোরালেজ, অ্যানহেল ডি মারিয়া, মাউরো জারাতে, সার্জিও আগুয়েরো, পাবলো পিয়াত্তি ও লাউতারো আকস্তা।

৪ সপ্তাহ আগে
৫








Bengali (BD) ·
English (US) ·