খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ১৯৯৬ সালে শহরের বিসিক শিল্পনগরী সংলগ্ন এলাকায় দেড় একর জমির ওপর নির্মিত হয় লক্ষ্মীপুর পৌর বাস টার্মিনাল। ২০০৮ সালের দিকে প্রায় এক কোটি টাকা ব্যয়ে টার্মিনাল ভবন নির্মাণ করা হলেও সেটিও বর্তমানে ভগ্নদশায় পরিণত হয়েছে। ভবনের ছাদ ও দেয়াল থেকে খসে পড়ছে পলেস্তারা।
সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, টার্মিনালজুড়ে বড় বড় গর্তে জমে আছে বৃষ্টির পানি। চারপাশ কর্দমাক্ত হয়ে পড়ায় ভেতরে চলাফেরাই দায় হয়ে পড়েছে। দীর্ঘদিন সংস্কার না হওয়ায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। এতে যাত্রী ও পরিবহন সংশ্লিষ্টদের ভোগান্তি চরমে পৌঁছেছে। টার্মিনালের সীমানা প্রাচীর ভেঙে পড়েছে অনেক আগে, বৈদ্যুতিক খুঁটিতে বাতির ব্যবস্থা না থাকায় রাতের বেলায় ভুতুরে পরিবেশ তৈরি হয়। এতে নিরাপত্তাহীনতায় ভোগেন মোটরযান শ্রমিকরা।
চালকরা জানান, টার্মিনালজুড়ে বড় গর্তের কারণে যানবাহনের যন্ত্রাংশ নষ্ট হয়। নিয়মিত ছোটখাটো দুর্ঘটনাও ঘটছে। তাদের অভিযোগ, পৌর কর্তৃপক্ষ নিয়মিত টোল আদায় করলেও সংস্কারের কোনো উদ্যোগ নিচ্ছে না।
আরও পড়ুন: ফজরের নামাজের জন্য ঘরে ঢুকতেই রাশেদাকে কুপিয়ে হত্যা
ঢাকা রুটের ইকোনো বাসের চালক আবদুর রহিম বলেন, ‘দূরপাল্লার যাত্রীরা টার্মিনালের বেহাল অবস্থার কারণে কাউন্টারে আসতে চান না। গর্তের কারণে গাড়ি রাখতে ও প্লেসমেন্টে সমস্যা হয়। এতে গাড়ির যন্ত্রাংশ নষ্ট হচ্ছে, ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন মালিকসহ আমরাও।’
জোনাকী পরিবহনের সুপারভাইজার শাহরিয়ার বলেন, ‘টার্মিনালের বেহাল অবস্থার কারণে যাত্রীদের আসা-যাওয়ায় কষ্ট হয়। মালামাল সঙ্গে থাকলে ভোগান্তি আরও বাড়ে।’
বাসযাত্রী সোলায়মান বলেন, ‘আমাদের প্রতিদিন ঢাকায় যেতে হয়। টার্মিনালে প্রবেশ করতেই সমস্যায় পড়তে হয়। কাদামাটি ও জলাবদ্ধতার কারণে হাঁটাও কষ্টকর। কাউন্টারে যেতে পারি না, বাধ্য হয়েই মূল সড়ক থেকে গাড়িতে উঠতে হয়। এখন টার্মিনাল ধান চাষের উপযোগী হয়ে গেছে।’
গাড়িচালক মালেক ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘কোথাও হাঁটু সমান গর্ত হয়েছে। প্রায় ১৫ বছর ধরে এখানে কোনো সংস্কার হয়নি। এত কিছুর পরও পৌর কর্তৃপক্ষের টনক নড়েনি।’
অন্য এক চালক আল আমিন বলেন, ‘সীমানা প্রাচীর ভেঙে গেছে বহু আগে। বৈদ্যুতিক খুঁটিতে বাতি না থাকায় রাতে চুরি হয় প্রায়ই। অথচ নিয়মিত প্রতিটি গাড়ি থেকে ৩০ টাকা করে টোল আদায় করা হচ্ছে। তবুও সংস্কারের কোনো উদ্যোগ নেই।’
এ বিষয়ে লক্ষ্মীপুর পৌরসভার প্রশাসক জসীম উদ্দিন বলেন, ‘বরাদ্দের অভাবে টার্মিনালকে পুরোপুরি ব্যবহারোপযোগী করা যায়নি। তবে আধুনিকায়নের জন্য প্রায় ১০ কোটি টাকার একটি প্রকল্প জমা দেয়া হয়েছে। বরাদ্দ পেলেই কাজ শুরু হবে।’
]]>