অসচেতনতায় ভয়ংকর হয়ে উঠছে মেডিকেল বর্জ্য, বাড়ছে স্বাস্থ্য ঝুঁকি

২ ঘন্টা আগে
পরিবেশ দূষণ রোধ, জনস্বাস্থ্যের সুরক্ষা ও স্বাস্থ্য সেবার সঙ্গে জড়িতদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কার্যকরী চিকিৎসা বর্জ্য প্রক্রিয়াজাত করার কথা থাকলেও তা অনেকটা অমীমাংসিত রয়ে গেছে। ফলে ক্রমবর্ধমান এসব মেডিকেল বর্জ্য যেমন উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে তেমনি বাড়িয়েছে স্বাস্থ্য ও পরিবেশগত ঝুঁকি। মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ এসব বর্জ্য নিয়ে যেন অনেকটা দায়সারা ভাব হাসপাতাল ও সিটি করপোরেশনের।

বাংলাদেশে পরিবেশ সংরক্ষণ আইন-১৯৯৫ এর অধীনে ২০০৮ সালে মেডিকেল বর্জ্য নীতিমালা প্রণয়ন করা হলেও তা কাগজে কলমে আটকে রয়েছে। নীতিমালায় অন্যতম শর্ত ছিল মেডিকেল বর্জ্য পুড়িয়ে ফেলতে থাকতে হবে নিজস্ব ব্যবস্থাপনা সঙ্গে আবশ্যিক জীবাণুমুক্তকরণ প্রক্রিয়া।

 

বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার নীতিমালায় বলা হয়েছে, কঠিন বর্জ্য ধ্বংসের জন্য প্রতিটি হাসপাতালে মেডিকেল ইনসিনেরেটের, অটোক্লেভ মেশিনসহ বিভিন্ন আধুনিক যন্ত্রপাতি থাকতে হবে। কিন্তু রাজধানীর হাসপাতালগুলোতে নেই অত্যাধুনিক কোনো ব্যবস্থা।

 

অন্যদিকে সর্বোচ্চ ২৪ ঘণ্টার মধ্যে মেডিকেল বর্জ্য অপসারণ ও ধ্বংস করার নির্দেশ থাকলেও, তা বরাবরই উপেক্ষিত। ফলে এসব বর্জ্য অপসারণের সঙ্গে যারা কাজ করেন তাদের যেমনি মারাত্মক স্বাস্থ্য ঝুঁকি রয়েছে, তেমনি পরিবেশের ওপর বিরূপ প্রভাব ফেলে।

 

অভিযোগ রয়েছে, পর্যাপ্ত লোকবল সংকট এবং কর্তৃপক্ষের নজদারির অভাবে এইসব মেডিকেল বর্জ্য দিনের পর দিন ভাগাড়ে পড়ে থাকে। পাশাপাশি বর্জ্য রিসাইকেল হয়ে পুনরায় রোগীর চিকিৎসায় ব্যবহারেরও অভিযোগ করেছেন অনেকে।        

 

চিকিৎসা বর্জ্য ব্যবস্থাপনা গাইডলাইনে বলা রয়েছে- হলুদ পাত্রে সংক্রামক বর্জ্য, সবুজ পাত্রে পুনঃচক্রায়ণযোগ্য বর্জ্য, লাল পাত্রে ধারালো বর্জ্য ও কালো পাত্রে সাধারণ বর্জ্য সংরক্ষণের নির্দেশ রয়েছে। কিন্তু বর্জ্য অপসারণের সঙ্গে যারা কাজ করেন তারা অনেকেই জানেন না সংরক্ষণের প্রক্রিয়া।

 

আরও পড়ুন: ৫০ বছরের দখল-দূষণে নদীর সংখ্যা নেমেছে অর্ধেকে

 

সরেজমিনে ঢাকা মেডিকেল কলেজ, বারডেমসহ বেশ কয়েকটি হাসপাতাল ঘুরে দেখা গেছে ডাস্টবিনে পলিথিনে মুড়িয়ে ফেলা হচ্ছে বর্জ্য। ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন এবং সাভার ও নারায়ণগঞ্জ এলাকার সরকারি-বেসরকারি হাসপাতাল থেকে দৈনিক ১২-১৫ টন মেডিকেল বর্জ্য তৈরি হয়। স্বাস্থ্য ঝুঁকি জেনেও জীবিকার তাগিদে পরিচ্ছন্নতা কর্মীরা এসব বর্জ্য অপসারণে বাধ্য হন।

 

টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, মেডিকেল বর্জ্য নিয়ে যে নীতিমালা হয়েছে বাস্তবে এর প্রতিফলন ঘটেনি। দায়িত্বশীলদের কর্তব্যে অবহেলা ও জবাবদিহিতার অভাবকে দায়ী করেন তিনি।

 

আরও পড়ুন: উপকূলে গর্ভপাতের হার বেশি, কারণ কী?

 

মেডিকেল বর্জ্যে পরিবেশ ও স্বাস্থ্য ঝুঁকি এবং বাস্তু মানুষের নিরাপত্তা ঝুঁকি থাকে। সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে সমন্বয় সহযোগিতায় সচেতন থাকার কথা, সেগুলোর কিছুই হয়নি। অথচ যে সমস্যা সেটা আরও বাড়ছে।  

 

সিটি করপোরেশন, স্বাস্থ্য অধিদফতর ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এগিয়ে এলে বর্জ্য নিয়ে চলতে থাকা দীর্ঘদিনের অব্যবস্থাপনা থেকে মুক্তি মিলবে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন