বৃহস্পতিবার (৯ জানুয়ারি) রাতে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের সই করা অধ্যাদেশ সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে। অধ্যাদেশ জারির পর জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের ভ্যাট বিভাগ এ–সংক্রান্ত নির্দেশনা জারি করে। অবিলম্বে আদেশ কার্যকর হবে।
২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটে মোবাইল ফোন সেবায় সম্পূরক শুল্ক ১৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ২০ শতাংশ করা হয়। এর সঙ্গে কার্যকরী ভ্যাট ১৮ শতাংশ এবং সারচার্জ আছে এক শতাংশ। এছাড়াও সিম কর, রাজস্ব ভাগাভাগিসহ অন্যান্য কর মিলিয়ে ১০০ টাকার রিচার্জে সাড়ে ৫৪ টাকা নেয় সরকার।
আরও পড়ুন: শুল্ক-কর বাড়ল যেসব পণ্যে
তবে ছয় মাসের ব্যবধানে মোবাইল ফোনে কথা বলা কিংবা ডাটা ব্যবহারে আবারও খরচের বোঝা চাপলো ১৮ কোটি ৮৭ লাখ সিমকার্ডধারীর কাঁধে। তিন শতাংশ বাড়ানো হয়েছে সম্পূরক শুল্ক। সম্পূরক শুল্ক ২০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ২৩ শতাংশ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে এনবিআর। এতে ১০০ টাকায় ৫৬ টাকার বেশি কর দিতে হবে গ্রাহককে। বছরে অন্তত ১ হাজার কোটি টাকা বাড়তি রাজস্ব পাবে সরকার।
নতুন এই সিদ্ধান্তের ফলে মোবাইলে ১০০ টাকার রিচার্জ করলে গ্রাহকদেরকে সম্পূরক শুল্ক, ভ্যাট ও সারচার্জ দিতে হবে ২৯ টাকা ৮ পয়সা। এ ছাড়া রেভিনিউ শেয়ার ও মিনিমাম ট্যাক্স দিতে হবে ৬ টাকা ১০ পয়সা, আর পরোক্ষ কর দিতে হবে আরও ২০ টাকা ৪০ পয়সা। অর্থাৎ গ্রাহক ১০০ টাকা রিচার্জ করলে সবমিলিয়ে কর বাবদ তার থেকে কাটা পড়বে ৫৬ টাকা ৩০ পয়সা।
এছাড়া ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সেবা বা আইএসপির উপর প্রথমবারের মতো ১০ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক বসানো হয়েছে। ব্যবহারকারীরা বলছেন, এটি একটি অযৌক্তিক সিদ্ধান্ত। এমনিতেই বাড়তি দৈনন্দিন ব্যয়। তারওপর মোবাইলের খরচ বৃদ্ধি মড়ার উপর খাঁড়ার ঘায়ের মতো।
আর বাংলালিংকের চিফ করপোরেট অ্যান্ড রেগুলেটরি অ্যাফেয়ার্স অফিসার তাইমুর রহমান বলেন, ‘শুল্ক বাড়ানোর উদ্যোগে মানুষ মোবাইলে কথা বলা কমাতে পারে। এতে রাজস্ব আরও কমে যেতে পারে।’
আরও পড়ুন: রিচার্জ ও প্যাকেজ নৈরাজ্য গ্রাহকদের নতুন অস্বস্তিতে ফেলেছে: বিএমপিসিএ
রবির চিফ করপোরেট অ্যান্ড রেগুলেটরি অ্যাফেয়ার্স অফিসার সাহেদ আলম বলেন, ‘বাজেটের এত আগেই এ সিদ্ধান্ত ব্যতিক্রম। এটি বাড়ানো উচিত নয়।’
শুল্ক বাড়ানোর উদ্যোগ এমন সময় নেয়া হয়েছে যখন দেশে মোবাইল ইন্টারনেট ব্যবহারকারী কমছে। বিটিআরসির সবশেষ তথ্যমতে, গত অক্টোবর মাসের তুলনায় নভেম্বরে মোবাইল ইন্টারনেট ব্যবহারকারী কমেছে প্রায় ৪০ লাখ।
উল্লেখ্য, ২০১৫-১৬ অর্থবছরের বাজেটে মুঠোফোনে কথা বলার ওপর প্রথমবারের মতো ৩ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক আরোপ করা হয়েছিল।
]]>