মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারি) ফুলবাড়িয়া উপজেলার লক্ষ্মীপুর গ্রামের বড়ইআটা বিলে ভিন্নধর্মী এ খেলায় দলবেঁধে আসেন হাজারো খেলোয়াড়সহ লাখো দর্শনার্থী। এ খেলায় নেই কোনো রেফারি কিংবা নির্দিষ্ট সংখ্যক খেলোয়াড়।
৩০ কেজি ওজনের পিতলের তৈরি বলের মতো দেখতে একটি বস্তু। যার নাম গুটি। এটি দিয়েই হয় হুমগুটি খেলা। জমিদার আমল থেকে ফুলবাড়িয়ায় প্রতি বছর পৌষ মাসের শেষ দিন হয় ঐহিত্যবাহী এ খেলা।
আরও পড়ুন: ময়মনসিংহে মাজারে ভাঙচুরের অভিযোগে মামলা, আসামি দেড় হাজার
জনশ্রুতি আছে, মুক্তাগাছার জমিদার শশীকান্ত আচার্য চৌধুরী ও ত্রিশালের বৈলরের জমিদার হেম চন্দ্র রায় জমি পরিমাপের বিরোধ সমাধানে তাদের প্রজাদের মধ্যে কৌশল ও শক্তির খেলা হিসেবে বৃত্তাকৃতির বল নিয়ে হুমগুটি খেলার আয়োজন করেছিলেন। সেই রেওয়াজ মেনে এখনো প্রতিবছর খেলার আয়োজন করা হয়।
খেলোয়াড়রা পূর্ব, পশ্চিম, উত্তর ও দক্ষিণ চার ভাগে বিভক্ত হয়ে খেলতে শুরু করেন। টেনেহিঁচড়ে কাড়াকাড়ি করে যারা বলটি গুম করে ফেলতে পারবেন, তারাই বিজয়ী।
খেলার দিন সকাল থেকে জেলার ফুলবাড়ীয়া, মুক্তাগাছা, ত্রিশাল, সদর উপজেলাসহ বিভিন্ন স্থান থেকে ঢাকঢোল ও বাদ্যযন্ত্রের তালে হাজারো খেলোয়াড়রা আসেন। ধীরে ধীরে দর্শনার্থী হয় লক্ষাধিক।
যদিও নিরাপত্তা বিবেচনায় এবার খেলাটি বন্ধ রাখতে চেয়েছিল প্রশাসন। খেলার অনুমতি না দিয়ে সেটি বন্ধ রাখার জন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী চেষ্টা করলেও এ খেলাকে ঘিরে মানুষের ঢল নামে।
আরও পড়ুন: ময়মনসিংহে ব্যাংক ডাকাতির চেষ্টা, নিরাপত্তাকর্মীর চিৎকারে রক্ষা
ফুলবাড়িয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. রোকনুজ্জামান বলেন, ‘খেলাটি বন্ধ রাখার জন্য বলা হয়েছিল। কিন্তু সকাল থেকে মানুষ আসতে শুরু করেন। বিকেলে লাখখানেক লোকের মতো হয়ে যায়। এটি কোনোভাবেই বন্ধ করা সম্ভব নয়।’
খেলা দেখতে আসা লোকজন জানান, আধুনিকতার ছোঁয়ায় গ্রামবাংলার ঐতিহ্য হারিয়ে যাচ্ছে। নানা রকম প্রচলিত গ্রামীণ আয়োজন এখন অনেক কমে গেছে। কিন্তু এই গ্রামের প্রাচীন খেলাটি এখন আনন্দের খোরাক হয়ে টিকে আছে।
]]>