হিলিতে বোরো ধানের বাম্পার ফলন, তবুও শঙ্কায় কৃষকরা

২ সপ্তাহ আগে
দিনাজপুরের হিলিতে চলতি ইরি-বোরো মৌসুমে মাঠজুড়ে সোনালি ফসলের দোল। দিগন্ত জুড়ে বাতাসে দোল খাচ্ছে পরিপক্ব ধানের শিষ। চলতি মৌসুমে অনুকূল আবহাওয়া, রোগবালার প্রভাব না থাকায় হাকিমপুরে ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। ফলে কৃষকের মুখে হাসি ফিরেছে। তবে সেই হাসির ভাঁজে আছে দুশ্চিন্তার ছায়া। হঠাৎ করে কালবৈশাখী ঝড় ও শিলাবৃষ্টির আশঙ্কায় ফসল ঘরে তোলার আগেই বিপদে পড়ার আতঙ্ক তাড়া করছে তাদের।

জালালপুর গ্রামের কৃষক মতিন বলেন, নিজের কোনো জমি নেই। তাই তিন বিঘা জমি বর্গা নিয়ে এবার ইরি-বোরো ধান চাষ করেছি। প্রথমে বীজতলায় কিছু সমস্যা ছিল, তবে উপজেলা কৃষি অফিসের সহায়তায় তা কাটিয়ে উঠতে পেরেছি। এখন ফলন দেখে মন ভরে যাচ্ছে। আশা করছি বড় কোনো দুর্যোগ না হলে ভালো ফলন ঘরে তুলতে পারব।


একই গ্রামের আরেক কৃষক এনামুল হক বলেন, চারদিকে সোনালি ধান, এই দৃশ্য যেন চোখে শান্তি আনে। কিন্তু আবহাওয়া নিয়ে খুব টেনশনে আছি। আশেপাশের এলাকায় কালবৈশাখী ঝড় হচ্ছে, কোথাও কোথাও শিলাবৃষ্টিও হয়েছে। যদি এদিকেও আসে, তাহলে সব শেষ হয়ে যাবে।


তিনি আরও বলেন, ধান কাটার সময় এলেই আরেক বিপদ দেখা দেয় শ্রমিক সংকট। আমাদের এখানকার শ্রমিকরা ওই সময় দক্ষিণাঞ্চলে ধান কাটতে চলে যায়। তখন স্থানীয়ভাবে শ্রমিক পাওয়া যায় না, অনেক সময় মাঠেই ধান পড়ে থেকে যায়।


হাকিমপুর উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা আরজেনা বেগম জানান, চলতি বোরো মৌসুমে আমাদের উপজেলায় চাষের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৭ হাজার ৬২৩ হেক্টর জমি। তবে কৃষকদের আগ্রহে এই সংখ্যা ছাড়িয়ে গেছে, চাষ হয়েছে ৭ হাজার ৭২৪ হেক্টর জমিতে। মাঠ পর্যায়ে ফলন সন্তোষজনক। চিকন জাতের ধানে বিঘাপ্রতি ২৫ থেকে ২৬ মণ ফলন পাওয়া যাচ্ছে। উন্নত জাতের ধান থেকে প্রতি শতকে ১ মণ পর্যন্ত ফলন মিলছে।


আরও পড়ুন: প্রতিকূল পরিবেশেও মোংলা-রামপালে বোরো ধানে বাম্পার ফলন


তিনি বলেন, আমরা নিয়মিত মাঠ পর্যায়ে কৃষকদের সহায়তা করছি। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এ বছর কৃষকরা অনেকটাই লাভবান হবেন বলে আশা করছি।


স্থানীয় সামাজিক সংগঠক মো. সোহেল রানা জানান, এ বছর বোরো ধান খুব ভালো হয়েছে। তবে হঠাৎ ঝড়বৃষ্টিতে ধান নষ্ট হলে কৃষক ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়বে। সরকার ও কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে ফসল কাটার জন্য দ্রুত শ্রমিক ব্যবস্থাপনা ও জরুরি আবহাওয়া তথ্য সরবরাহের ব্যবস্থা করা জরুরি।


কৃষকরা সরকারের কাছে স্বল্পমূল্যে ধান কাটার যন্ত্র (কম্বাইন হারভেস্টার), মাড়াই মেশিন ও কৃষিশ্রমিক সংস্থান সহজ করার আহ্বান জানিয়েছেন। তাদের মতে, শুধুমাত্র উৎপাদন নয়, ফসল ঘরে তোলা পর্যন্ত সহায়তা না পেলে আসল লাভ ঘরে তোলা সম্ভব হয় না।

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন