রাজধানীর বাসিন্দা হাবিবা। বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে অপেক্ষায় থাকতেন একটি হলুদ খামের। যার ভেতরে দূর শহর থেকে আসবে মা বাবার গল্প। এখন তারা দুজনই গত, তাইতো যত্নে রাখা পুরানো চিঠির অক্ষরেই খুঁজেন তাদের অস্তিত্ব। হাবিবা বলেন, একটি হাতে লেখা চিঠির সঙ্গে আবেগ জড়িয়ে থাকে। যখন আগের চিঠিগুলো দেখি; তখন বাবা-মাকে অনুভব করি।
এক সময় এই চিঠিই ছিল মানুষের ভাব আদান প্রদানের সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য সেতু। তবে সেটিই এখন লড়াই করছে নিজের অস্তিত্ব বাঁচাতে। প্রযুক্তির ছোঁয়ায় চিঠি লেখার দিন ফুরানোর সঙ্গে সঙ্গে কি একেবারেই হারিয়ে গেছে ডাক বিভাগও? বিশ্ব ডাক দিবসে কেমন আছে ডাক বিভাগ?
শহর ঘুরে দেখা যায়, সময়ের পরিক্রমায় গতির শহরে অবহেলায় ঠায় দাঁড়িয়ে থাকা ডাক বাক্সগুলোই জানায় হারিয়েছে ব্যক্তিগত চিঠির আবেদন। মরিচায় জড়ানো গায়ে লেগেছে তার জীর্ণতার ছোঁয়া। তাইতো সবার চাওয়া দেশের ডাক বিভাগটি আরও গতিময় হোক প্রযুক্তির ছোঁয়ায়।
আরও পড়ুন: জীবিত মানুষকে মৃত দেখিয়ে চিঠি ফেরত পাঠাল ডাক বিভাগ
সাধারণ মানুষ বলছেন, হোয়াটস-অ্যাপ, মেসেঞ্জারের যুগে যোগাযোগ অনেক সহজ হয়ে গিয়েছে। তবে সরকার চাইলে ডাক বিভাগকে সঙ্গে নিয়ে আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে মানুষকে চিঠি সেবা দেয়ার ব্যবস্থা করতে পারে।
আর চিঠি পাঠাত যে, সেই ডাক বিভাগ এখনও চলছে তার আপন নিয়মে। এখানে এখন ব্যক্তিগত চিঠি না এলেও আসে সরকারি চিঠি ও নথিপত্র। বৈদেশিক ডাকসেবা, এক্সপ্রেস মেইল সার্ভিসসহ যুক্ত হয়েছে নতুন নতুন সেবা। সঞ্চয়পত্র, ডাক জীবন বিমা, মানি অর্ডার ও পোস্টাল অর্ডার সেবাও রয়েছে বহাল।
ডাক অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (হিসাব ও সংস্থাপন) এস এম হারুনুর রশীদ বলেন, ‘এখন ব্যক্তিগত চিঠি প্রায় নেই বললেই চলে। তবে দাফতরিক চিঠির পরিমাণ অনেক বেড়েছে। আগের বছরের তুলনায় এখন আয় কয়েকগুণ বেশি। আন্তর্জাতিক কল সেন্টারেও আমাদের অবস্থান বেশ ভালো-বিশ্বে আমরা এখন গোল্ডেন ক্যাটাগরিতে আছি।’
এদিকে, ডাক বিভাগের ডিজিটাল রূপান্তরের ইতিবাচক প্রভাব দেখা যায় বিভাগটির বার্ষিক প্রতিবেদনে। ২০১৯-২০ অর্থবছর থেকে ২০২৩-২৪ অর্থবছর পর্যন্ত ডাক বিভাগের রাজস্ব আয় প্রতি বছরই বেড়েছে।
]]>