তাই প্রশ্ন উঠেছে নির্মাণের এক দশক অতিবাহিত হলেও কবে কাটবে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে সমৃদ্ধ এ পর্যটনকেন্দ্রটির দুরাবস্থা কাটবে কবে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্ট ফান্ডের অর্থায়নে আড়াই কোটি টাকা ব্যয়ে হরিণঘাটা সংরক্ষিত বনে ২০১৩ সকালে জুনে পর্যটনকেন্দ্র নির্মাণ কাজ শুরু হয়। কাজ শেষ হয় ২০১৫ সালে। বাংলাদেশ সরকারের বন ও পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের অধিনে উপকূলীয় বনবিভাগ পটুয়াখালীর বন অধিদফতর এসব কাজ বাস্তবায়ন করে।
আরও পড়ুন: পর্যটকের পদচারণায় মুখর সুন্দরবনের করমজল, মধুর সমস্যায় বনরক্ষীরা
সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, হরিণঘাটা থেকে সমুদ্র তীরবর্তী লালদিয়ার চরে যেতে প্রায় দুই কিলোমিটার ফুট ট্রেইলের অধিকাংশে স্লাপ নেই। এতে স্নিগ্ধ বনের ভেতর থেকে হেঁটে সমুদ্রের তীরে যেতে পারছেন না পর্যটকরা। এজন্য সমুদ্রের তীরে যেতে হচ্ছে ট্রলার ভাড়া করে। এতে বনের সৌন্দর্য উপভোগ থেকে যেমন বঞ্চিত হচ্ছেন, তেমন গুনতে হচ্ছে বাড়তি টাকা।
অন্যদিকে ওয়াচ টাওয়ারে যেতে ইটের রাস্তায় বেহাল দশা। দুটি বিশ্রামাগা পুরোপুরি ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। পর্যটকদের জন্য বনের মধ্যে নেই কোন ওয়াশ রুম। এছাড়া নেই কোন নিরাপত্তা ব্যবস্থাও। এতে আকর্ষণীয় এ পর্যটনস্পট থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন পর্যটকরা।
হরিণঘাটা পর্যটনকেন্দ্রে ঘুরতে যাওয়া সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী নাজমুস সাকিব বলেন, এতো সুন্দর একটি পর্যটনকেন্দ্র শুধুমাত্র পরিকল্পনার অভাবে পর্যটক টানতে পারছে না। এখানে অনেক জায়গায় সংস্কার দরকার। দেখেই বোঝা যায়, দীর্ঘদিন ধরে উন্নয়নে ছোঁয়া লাগেনি এ পর্যটনকেন্দ্রে।
আশিক আহমেদ নামের আরেক পর্যটক বলেন, নিরাপত্তার যথেষ্ট ঘাটতি রয়েছে এখানে। এখানে ঘন বন। কিন্তু পর্যটকদের জন্য ন্যূনতম কোনো নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেই। তাই নারীদের নিয়ে এখানে আসতে হলে অনেকবার ভাবতে। যেখানে নিরাপত্তার ঘাতটি আছে, সেখানে পর্যটক যাবে না, এটা খুবই স্বাভাবিক।
আরও পড়ুন: ঈদের ছুটিতে সুন্দরবনে রাশিয়ার রাষ্ট্রদূতসহ ২০ সদস্যের প্রতিনিধি দল
মাইনুল ইসলাম সবুজ নামের আরেক পর্যটক বলেন, এই পর্যটনকেন্দ্রে অবকাঠামোগত উন্নয়ন বিশেষ জরুরী। ফুট ট্রেইলের বিভিন্ন স্থানে ভাঙন ধরেছে। এছাড়া অধিকাংশ ফুট ট্রেইলে স্লাপ নেই। এর ফলে পর্যটকরা বনের ভিতর দিয়ে সমুদ্রের তীরে যেতে পারছেন না। বিশ্রামাগার নেই। ওয়াশ রুম নেই। পর্যটনকেন্দ্রের এমন অব্যবস্থাপনা পর্যটক টানতে ব্যর্থ হচ্ছে।
এ বিষয়ে বরগুনার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শফিউল আলম বলেন, হরিণঘাটা পর্যটনকেন্দ্রটি আধুনিকায়ন করতে একটি প্রকল্প হাতে নিয়েছে বন ও পরিবেশ মন্ত্রণালয়। ইতোমধ্যেই প্রকল্পের একটি সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে মনোমুগ্ধকর এ পর্যটনকেন্দ্রের সকল অব্যবস্থাপনা দূর হয়ে যাবে বলেও জানান তিনি।