রোববার (৬ এপ্রিল) সকালে তিনি মন্ত্রণালয়ে যোগ দেন।
যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী এই প্রকৌশলীকে গত ৫ মার্চ সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের বিশেষ সহকারী হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়। তিনি প্রতিমন্ত্রীর পদমর্যাদা, বেতন-ভাতাদি ও আনুষঙ্গিক সুযোগ-সুবিধা পাবেন।
গত ডিসেম্বরে সচিবালয়ে আগুন লাগলে সড়ক পরিবহন মন্ত্রণালয় ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। সেখানকার কর্মকর্তারা অন্যত্র অফিস করছেন। নতুন বিশেষ সহকারী বনানীতে সেতু ভবনে তার দাফতরিক কার্যক্রম পরিচালনা করবেন।
বিগত দেড় দশকে বাংলাদেশে সড়ক, সেতু ও এই খাতের অবকাঠামো নির্মাণে প্রায় দেড় লাখ কোটি টাকা খরচ করা হয়েছে। তবে অভিযোগ হলো, এই খাতের প্রকল্পগুলোর ব্যয় অত্যধিক। বাস্তবায়নে দীর্ঘ সময়ক্ষেপণ হয়েছে। বিপুল বিনিয়োগের পরও সড়ক অবকাঠামোর পূর্ণ সুফল পাচ্ছে না দেশবাসী।
সরকারের সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, মূলত শেখ মইনউদ্দিনকে সড়ক ও সেতু মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে সড়ক অবকাঠামো নির্মাণে অত্যধিক ব্যয়ের বিষয়টিতে রাশ টানা, নিরাপদ সড়ক নিশ্চিত করা এবং রাজধানী ঢাকাসহ গুরুত্বপূর্ণ সড়কে যানজট কমিয়ে আনার জন্য।
যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া অঙ্গরাজ্যে প্রায় ২৫ বছর ধরে একই ধরনের কাজই করে আসছেন শেখ মইনউদ্দিন। তার জন্ম বাংলাদেশের খুলনায়। উচ্চমাধ্যমিক পড়ার পরই যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমিয়েছিলেন তিনি।
আরও পড়ুন: এ সরকার গরিবের সরকার: সমাজকল্যাণ সচিব
সরকারের কাছে জমা দেয়া জীবনবৃত্তান্ত অনুযায়ী, শেখ মইনউদ্দিন ২০২৩ সাল থেকে যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া অঙ্গরাজ্যের পরিবহন বিভাগের নিরাপত্তা ও পরিচালন বিভাগের প্রধান হিসেবে কর্মরত ছিলেন। এর আগে তিনি প্রায় সাত বছর ওই অঙ্গরাজ্যের পরিবহন বিভাগের কর্মসূচি ও প্রকল্প ব্যবস্থাপনা বিভাগের ব্যবস্থাপক ছিলেন। ২০০৫ সাল থেকে এক দশকের বেশি তিনি ক্যালিফোর্নিয়ার পরিবহন বিভাগের প্রকৌশলী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
শেখ মইনউদ্দিন ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়া থেকে পুরকৌশলে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেছেন। অবকাঠামো ও পরিবেশ বিষয়ে তিনি বিশেষজ্ঞ। ক্যালিফোর্নিয়া স্টেট ইউনিভার্সিটি থেকে পুরকৌশল বিষয়ে মাস্টার্স ও ইউনিভার্সিটি অব লুইজিয়ানা থেকে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন শেখ মইনউদ্দিন। তার শিক্ষাজীবনের মূল বিষয় ছিল পুরকৌশল, পরিবহন ও পরিবেশ। যুক্তরাষ্ট্রের প্রকৌশলীদের নানা পেশাগত সংঘের সঙ্গে তার যুক্ততা রয়েছে।
সরকারি সূত্র বলছে, কর্মজীবনে শেখ মইনউদ্দিন সরকারি ও বেসরকারি অর্থায়নে শত শত কোটি ডলারের প্রকল্প বাস্তবায়নে যুক্ত ছিলেন। তিনি গণপরিবহন ব্যবস্থাপনায়ও উদ্ভাবনী ভূমিকা রেখেছেন। এর মধ্যে ক্যালিফোর্নিয়ার লস অ্যাঞ্জেলেস শহরে ‘ডায়নামিক লেন ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম’ চালু করতে নেতৃত্ব দেন তিনি, যা মহাসড়কের নিরাপত্তা বৃদ্ধি ও যানজট নিরসনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। মহাসড়কের সক্ষমতা বৃদ্ধি ও সদ্ব্যবহার বিষয়েও তার গবেষণা রয়েছে।